আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোটের গাড়ী

মিডিয়া

আর মাত্র কয়েক দিন বাকী, দিন বদলের অপেক্ষায় পুরো জাতি। গনমাধ্যমে জনসভায় সমর্থক দেখে অনুমান করা যাচ্ছে না শেষ হাসি কে হাসবেন। প্রচার চলছে গলা ফাটিয়ে , মাইক বাজিয়ে কিংবা ব্যানার পোস্টার দিয়ে , চলছে প্রচার ফেসবুকেও। সেই প্রচারাভিযানকে অনুস্মরণ করে ছুটে চলেছে গনমাধ্যম কর্মীরাও। ভোটকে ঘিরে নেয়া হয়েছে নানা ধরণের অনুষ্ঠান মালার।

চলছে রাত ভর টক শো । জোড়ালো হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের 'না' বলার দাবী। ,ভোটের সংবাদের জন্য এনটিভির শাহেদ আলম ছুটেছেন নির্বাচনের পথে পথে আর এটিএন বাংলার জ. ই . মামুন চষে বেড়াচ্ছেন ভোটের গাড়ী নিয়ে। ক্যামেরার কল্যাণে আর প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় মুহূর্তের মধ্যে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত অলিগলির মিছিল মিটিংয়ের সংবাদ উঠে আসছে গনমাধ্যমে। এই যে এতো এতো মানুষ , আমি অবাক হয়ে দেখি, নির্বাচন নিয়ে মানুষের এতো উৎসাহ !! এই মানুষগুলোকি তাদের নেতা নেত্রী নির্বাচন করে প্রতারিত হবে, নাকি ভোট দিয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখবে ? প্রায় সব কটি গনমাধ্যমকে দেখা যাচ্ছে নেতা নেত্রীদের অনুস্বরণ করে সংবাদ সংগ্রহ করছেন।

বিষয়টি এমন যে খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা কিংবা এরশাদের গাড়ী বহর যে দিকে যাচ্ছে গনমাধ্যম কর্মীরাও আরেকটি গাড়ী বহর নিয়ে তাদের অনুস্বরণ করছেন , যেখানেই গাড়ী থামছে পথ সভা হচ্ছে সেখানেই গনমাধ্যম কর্মীর্রাও সেখানে থেমে ক্যামেরায় ভিডিও দৃশ্য ধারণ করছে। কিন্তু এমনকি হয় না, যেখানে গনমাধ্যম কর্মীরা আগে পৌঁছে যাবেন , যেখানে পথ সভা হবে বা জনসভা হবে সেই মানুষ গুলোর সাথে কথা বলেছেন, কিংব নির্বাচনকে ঘিরে সেই এলাকার জনগন কি ভাবছেন যিনি নেত্রী কিংবা জন প্রতিনিধিকে দেখতে মিছিলে কিংবা খোলা ময়দানে গিয়ে বসে থাকছেন না তার অভিমত কি ? অথবা যিনি মিছিলে যাচ্ছেন তার সাথে বিনিময়টা কি হচ্ছে, অভিযোগ রয়েছে মিছিলে যাবার জন্য প্রতি সমর্থক দিন হিসাব করে টাকা পান প্রার্থীর কাছ থেকে। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় সিন্ডিকেট থাকে মানুষ জোগার করার জন্য। জনসভায় বাস দিয়ে মানুষ জড়ো করাই সেই সিন্ডিকেটের কাজ । মোটার সাইকেল কিংবা বাস ভর্তি করে প্রতি গ্রাম মহল্লা ও থানা থেকে লোক জড়ো করে নিয়ে আসা হয় জনসভার জন্য।

নির্মম হলেও সত্য এই একই মানুষ শেখ হাসিনার মিছিলেও আসেন আবার খালেদা জিয়ার মিছিলেও যান, দুই বার গেলে দুইবার পয়সা পাওয়া যায়। এই বিষয়গুলো কোন গনমাধ্যম কর্মীকি খুঁজে দেখেছেন ?? প্রত্যেক থানা ও জেলা শহর গুলোতে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন । সাথে থাকবেন দলীয় এজেন্টরাও । ভোটের আগে এই সকল কর্মকতারা কোন চাপের মধ্যে রয়েছেন কিনা, কেউ তাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে কিনা,তাদের সাথে কোন সমঝোতা হচ্ছে কিনা এবিষয়গুলোর প্রতি সর্তক দৃষ্টি রাখাও গনমাধ্যমের কর্মীদের দায়িত্বের বাইরে নয়। একই সাথে নির্বচনের দিন ভোটার নিয়ে টানা হ্যঁচড়া নতুন ঘটনা নয়।

প্রত্যেক প্রার্থীদেন এলাকা ভিত্তিক এজেন্টরা সব ভোটারদেও বাড়ী বাড়ী রিক্সা পাঠিয়ে দেয় , কোথাও গাড়ী যেন ভোটাররা নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে আসতে পারে। যদিও অনেক ভোট কেন্দ্র পায়ে হাঁটা পথ , তবুও প্রত্যেক এলাকায় প্রার্থীদের কর্মী বাহিনী নিযুক্ত থাকে যেন ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে, আর ঠিক এই সুযোগে ভোটরদেও প্ররোচিত করে। কিংবা ভয় ভীতি দেখিয়ে তাদেও নিদিষ্ট প্রার্থীকে ভোট দিতে বলা হয়। এই বিষয়গুলো অভিযোগ আকারে আসছে । তাই হাজার জনতার ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে রিপোর্টের পাশা পাশি গনমাধ্যম কর্মীদেও এই বিষয়গুলোর সত্যতা অনুসন্ধান করা উচিত।

নির্বাচন কে কেন্দ্র করে কি পরিমান মোটর সাইকেল বিক্রি হয়েছে , কিংবা হঠাৎ করে কমদামী শাড়ী , লুঙ্গি বিক্রী বেড়ে গেলো কিনা এই তথ্য গুলোও খুজে বেড় করা যেতে পারে। চায়ের স্টলগুলোতে রাত ভর আড্ডা আর চা কাপে ধোয়া উড়ে , এই টাকা কি প্রার্থীরা দিচ্ছেন কিনা সেই প্রশ্ন করা যেতে পারে চা বিক্রেতাকে। নির্বাচনী আচরণ বিধীমালায় প্রার্থীদের চা- খাওয়ানো যদিও তুচ্ছ একটি বিষয় কিন্তু সাধারণ মানুষযেন প্ররোচিত হয়ে ভোট না দেয়ার বিষয়গুলোর প্রতি সর্তক দৃষ্টি দেওয়াই মিডিয়ার অন্যতম ভূমিকা। সেই স্টোরিগুলোতো আসছে না বিদ্রোহী প্রার্থীদেও দমনে কতটাকা ব্যয় হলো ? কত টাকার বিনিময়ে বিদ্রোহী প্রাথীরা আসন ছেড়ে দিলেন সতীর্থদের জন্য ! জ.ই মামুন তাঁর ভোটের গাড়ী নিয়ে যখন চট্রগামের পথে তখন গাড়ীর চাকার পাংচার হয়ে গেলো ! ভাবনা কি, স্পেয়ার চাকা ছিলো উনার কাছে। চাকা বদলে আবার নতুন করে তিনি ছুটে চলেছেন গন্তব্যে।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বচনে দিন বদলের পথে ভোটারদের কাছে সেই বাড়তি চাকাটা কি তবে 'না' ভোট ? ছবি কৃতজ্ঞতা : জ.ই মামুন ও শাহেদ আলম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।