যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে.
৫ টা বেজে ৫০ মিনিট এ লাইভ দেখানোর কথা থাকলেও খানিক দেরিতে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশের কোন চ্যানেল এ দেখানো হয় নি। যা আসলেই বেশ অবাক করেছে। প্রথমে শুনেছিলাম এ টি এন বাংলা এবং বাংলা ভিশন অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে। কিন্তু তারা তা করে নাই।
পরে ই এস পি এন এবং স্টার ক্রিকেট চালু করে দেখি ২ টা চ্যানেল এই দেখাচ্ছে।
প্রথমেই যা দেখা শুরু করলাম সেটা হল আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। সমাবেত সুরে যা হৃদয়কে দুলিয়ে দিল। তারপর একে একে সবার উদ্দেশে বক্তব্য করলেন আবুল মাল মুহিত, প্রধানমন্ত্রী, লোটাস কামাল সহ আই সি সি এর সারদ পাওয়ার প্রমুখ ও। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকাপের উদ্বোধন ঘোষনা করার সাথে আতশবাজীতে ঢাকার আকাশ কেপে উঠেছিল।
পুরো জাতির জন্য এই অনুষ্ঠানটা নিয়ে ছিল অনেক আশা ভরসা। এটি আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার বিশাল এক সুযোগ ছিল। যা দেখে পুরো বিশ্ব বাহবা দিবে আমাদের। এরপর সমাবেত সঙ্গীত গাইতে আসেন মিলা, মাহাদী, এলিটা, কনা, বালাম, তপু, অর্ণব প্রমুখ ও। এই গানটা বেশ সুন্দর ছিল।
কিন্তু একটা ব্যপার এখানে খুব দৃষ্টিকটু ছিল। সেটা হল ডিসকো বান্দর মিলার অযথা নাচানাচি, লাফালাফি। যা বেশ বিরক্তিকর ঠেকেছে। অন্যরা ভাল গেয়েছেন। এক কথায় গানটা বেশ চমৎকার ছিল।
সাইড স্ক্রিন এ বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে এসেছে সুন্দরবন, কক্সবাজার, সিলেট, লালবাগ কেল্লা, ষাট গম্বুজ মসজিদ ইত্যাদি। প্রতিটাতেই একটা করে স্লোগান ছিল। আরো এসেছে স্বাধীণতার ভাষন। রিকশা করে ১৪ দলের ক্যাপ্টেনদের মাঠে আসাটা ছিল বেশ মজার।
১৪ জন রিকশা চালক বেশ মজা পাচ্ছিলেন, তাদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় মুহুর্ত ছিল হয়ত এটাই। এমন সুযোগ আর কতজন এর ভাগ্যে আসে। সাকিব এসেছিল সবার শেষে।
বাংলাদেশের গান, নাচ সবকিছুই ছিল দেখার মত। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন নিয়ে একটা সমাবেত নাচ দেখানো হয়েছিল।
পাহাড়ীদের ঐতিহ্যকে সুন্দরভাবে নাচের মাধমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সাইড স্ক্রিন এ ক্রিকেট খেলা মোটামটি ভাল লেগেছে। শ্রীলঙ্কান ৩ শিল্পী তাদের গান পরিবেশন করেছেন। দলগত নাচও ছিল শ্রীলঙ্কানদের। যা তাদের কালচারকে ফুটিয়ে তুলেছে।
ভারতের দলগত নাচ পরিবেশন করা হয়েছিল যা তাদের বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩ দেশের এসব নাচ গান এর মধ্যে বাংলাদেশের অংশ গুলো ছিল অসাধারণ। এক কথায় চরম।
সাবিনা ইয়াসমিন, মমতাজ, রুনা লায়লা ৩ জন গান পরিবেশন করে গিয়েছেন। মমতাজ এর একজন বেশ শক্ত ভক্ত আজকে পেয়ে গেলাম।
উনি আমাদের ফুল মিয়া। মমতাজ এর গান গাওয়ার সময় টি ভি ক্যামেরায় ফুল মিয়াকে বার বার দেখাচ্ছিল। সেও গানের সাথে গলা মিলাচ্ছিলেন। মমতাজকে আরো কিছু সময় গান গাইতে দেয়া উচিত ছিল। সাবিনা ইয়াসমিন এক কথায় অসাধারণ।
কিন্তু অবাক হলেও সত্যি রুনা লায়লা ২ টি গান গেয়েছিলেন। তার মধ্যে শেষ গানটা উনি হিন্দি গেয়েছেন। যা বেশ দৃষ্টিকটু লেগেছে।
ব্রায়ান আডামস এর গান শুনে দর্শকেরা বেশ আনন্দ পেয়েছেন। সে ৩ টি গান পরিবেশন করেছেন।
সবশেষে বিশ্বকাপের অফিশিয়াল থিম গান গেয়ে শোনান সংকর এহসান লয়। তারা হিন্দি এবং বাংলা ২ ভাষাতেই গান গেয়ে শোনান। গানের সাথে সাথে ছিল দলগত নাচ এবং আতশবাজী। এর ঝলকানিতে স্টেডিয়াম সহ পুরো ঢাকা শহর কেপে উঠছিল।
আর এভাবেই শেষ হয় বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
কিছু কিছু ভুল বাদ দিলে বাংলাদেশ গর্ব করতেই পারে এমন সফল আয়োজন এর জন্য।
বিঃদ্রঃ আমি দুঃখিত ছবিগুলো ভাল আসে নি বলে। ছোট করে লেখাতে কিছু অংশ বাদ গেলে তা ক্ষমাসুন্দর ভাবে দেখবেন সেই আশাই করছি আপনাদের কাছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।