বুধবার রাতে প্লে-অফের প্রথম পর্বের খেলায় দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা বাছাইপর্বে এশিয়ার পঞ্চম দলটিকে হারিয়েছে ৫-০ গোলে।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে উরুগুয়েও পঞ্চম হলেও ফিফা র্যাংকিংয়ে দুই দলের ব্যবধান ৬৪। বিরাট এই ব্যবধানের প্রভাব দেখা গেল খেলাতেও। ম্যাক্সিমিলিয়ানো পেরেইরা, ক্রিস্তিয়ান স্তুয়ানি, নিকোলাস লুদেইরো, ক্রিস্তিয়ান রদ্রিগেস ও এদিনসন কাভানির লক্ষ্যভেদে বিশ্বকাপ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে দক্ষিণ আমেরিকার এই ফুটবল পরাশক্তি। ২০ জুন নিজেদের মাঠে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি খেলবে তারা।
রাতে আম্মানে রদ্রিগেজের ক্রস থেকে লুইস সুয়ারেস গোলের সহজ সুযোগটি উপর দিয়ে মেরে নষ্ট না করলে ১৫ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো উরুগুয়ে। তিন মিনিট পরে উল্টো পিছিয়ে পড়তে পারতো তারা।
খেলার ধারার বিপরীতে প্রায় এগিয়েই যাচ্ছিল জর্ডান। আলসাইফির জোরালো শট বাঁদিকে ঝাপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন মার্তিন সিলভা।
‘ভুল’ শোধরাতে বেশি সময় নেননি লিভারপুল তারকা সুয়ারেজ।
তার নিখুঁত ক্রস দারুণ সুযোগ এনে দিয়েছিল কাভানিকে। পিএসজির এই স্ট্রাইকারের হেড জর্ডানের গোলরক্ষক মোহামাদ সাতনাভি কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন। তবে ফিরতি বলে সুযোগসন্ধানী ম্যাক্সিমিলিয়ানো পেরেইরাকে ফেরানোর কোনো সুযোগই ছিল না তার। ফাঁকা জালে বল পাঠিয়ে স্বাগতিকদের ২২ মিনিটের প্রতিরোধ ভেঙ্গে দেন বেনফিকার এই মিডফিল্ডার।
পিছিয়ে পড়ার পর পাল্টা আক্রমণে যাওযার চেষ্টা করে এশিয়ার দলটি।
কিন্তু তাদের হতাশ করে ৪২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন স্তুয়ানি। থ্রো-ইন থেকে বল পাওয়া লুদেইরোর চিপ গোলের উৎস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে উজ্জীবিত ফুটবল খেলে এক গোল প্রায় শোধ করেই দিচ্ছিল জর্ডান। মার্টিন কাসেরাসের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে দারুণ সুযোগটি তৈরি করে দিয়েছিলেন আদনান হাসান। কিন্তু ছয় গজ দূর থেকে আহমেদ ইব্রাহিমের জোরালো শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশায় পুড়তে হয় স্বাগতিকদের।
সেই আক্রমণের পর অনেকটাই রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে অস্কার তাবারেজের শিষ্যরা। এ সময় ভীষণ চাপ তৈরি করলেও অতিথি দলটির রক্ষণভাগ ভাঙ্গতে পারেনি মিশরের সাবেক স্ট্রাইকার হোসাম হাসানের শিষ্যরা।
খেলার ধারার বিপরীতেই ৬৯ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে ব্যবধান বাড়ান লুদেইরো। গোলের স্থপতি কাভানি। প্রতি আক্রমণ থেকে তিনি বল বাড়ান ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা লুদেইরোর কাছে।
চার ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষক প্রাচীর তৈরি করলেও জাল খুঁজে পেতে কোনো সমস্যা হয়নি তার।
৯ মিনিট পর আলভারো পেরেইরা ক্রস বুক দিয়ে নামিয়ে উইঙ্গার রদ্রিগেসের বাঁপায়ের জোরালো শটে স্কোর লাইন হয়ে যায় ৪-০।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে কাভানির সফল ফ্রি-কিক জর্ডানের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয়।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, চিলি ও ইকুয়েডর। পঞ্চম হওয়ায় প্লে-অফ খেলতে হচ্ছে উরুগুয়েকে।
তবে প্লে-অফ খেলে বিশ্বকাপে যাওয়টা যেন নিয়তিই হয়ে গেছে উরুগুয়ের। গত বিশ্বকাপে তো এভাবেই উঠেছিল তারা, মূল পর্বে দুর্দান্ত খেলে সেমি-ফাইনালেও উঠেছিল। শুধু গত বিশ্বকাপেই বা কেন, ২০০২ ও ২০০৬ সালেও প্লে-অফ খেলতে হয়েছিল উরুগুয়েকে। ২০০২ সালে জিতলেও, ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় তারা।
এশিয়া অঞ্চল থেকে ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।