সব হৃদয়ের গল্প বলি, রংধনুটাকে রং করি, নির্ঘুম চোখের কথা নিয়ে বৃষ্টির মত ঝরে পড়ি
সকাল থেকেই ভাবছি.. উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কিভাবে দেখব । আমার ২টি অপশন ছিল। এক. বাসায় বসে টিভিতে দেখা এবং দুই. আমি যে অফিসে জব করি সেখানকার জানালা দিয়ে সরাসরি দেখা। বিকেল হতেই আমার বস গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে আর ফোন করে বলল তাড়াতাড়ি উনার কয়েকজন আত্মীয়সহ যেন অফিসে চলে আসি। আমার অফিস হচ্ছে পল্টনে আজাদ হোটেল এর পাশের বিল্ডিং (নোয়াখালী টাওয়ার ,১৮ তলা বিশিষ্ট ) এর ১০ তলায়।
সেখান থেকে জানালা দিয়ে মাঠের বেশির ভাগ অংশ-ই দেখা যায়। তো আমি আর দেরি না করেই বসের আত্মীয়সহ রওয়ানা দিলাম। রাস্তায় নেমে দেখি মহা বিপত্তি ! কোন প্রধান সড়কে আমাদের গাড়ি যেতে দিচ্ছে না। পরে আমাদের ড্রাইভার বেশ কয়েকটি গলিপথ দিয়ে ঘুরে অবশেষে নোয়াখালী টাওয়ারের পাদদেশে পৌছালাম। লিফট আসতে দেরী দেখে আমি দ্রুত সিড়ি বেয়ে-ই ১০ তলায় উঠে গেলাম।
সিড়িতে উঠার সময় দেখি আমার মত অনেকেই বিভিন্ন তলায় লোকজন ছুটছে..। তো সবাই মিলে কিছুক্ষণ ওখানে অনুষ্ঠান দেখার পর আমি সবাইকে রেখে একা একা ছাদে (১৮ তলার) কি উঠা যায় কিনা তা দেখতে গেলাম। ওখানে গিয়ে দেখি ছাদের গেইট বন্ধ এবং উপ্রি বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য দাড়িয়ে আছে। অনেকে তাদের সাথে বাক -বিতান্ডা করছে, উপরে উঠার জন্য। তাই আমি আর ঐ ঝগড়াতে না গিয়ে আবার আমার ১০ তলায় ফিরে আসলাম।
এভাবে কিছুক্ষণ দেখার পর আমার পরিচিত এক পিয়নকে ফোন দিয়ে বললাম উপরে (ছাদে কিভাবে উঠা যাবে ) সে বলল একটু পরে ছাদ এই ভবনের সবার জন্য খুলে দেবে। তার কথামত একটু পরে সবাই গিয়ে দেখি আসলেই ছাদের গেইট খোলা !!
সবাই এবার ১৮ তলার উপরে !!
পুরো বঙ্গবন্ধ স্টেডিয়ামকে যেন এক অপরূপ পরীর মত লাগছে।
মাঝখানে স্টেজটা অনেক চমৎকার করে সাজানো হয়েছে।
আর লাইটিং গুলোও চোখ ধাধানো..........
আমাদের ছাদের পাশের বিল্ডিং-এ কে যেন বড় পর্দায় এই অনুষ্ঠান দেখছিল...
আমরা দুটোই খুব ভালভাবে উপভোগ করেছি..........
নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হল ..
নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মাঠের গেটের বাহিরের রাস্তায় অসংখ্য জনতা দাড়িয়ে বড় পর্দায় অনুষ্ঠান দেখছে।
পুরা ঢাকা শহরটাকে মনে হচ্ছে আসলেই এক উৎসবের নগরী।
চারিদিকে সাজ সাজ রব..
আমার প্রিয় গায়ক Bryan Adams কে চোখের সামনে দেখে যেন আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম। তার কত গান প্রতিদিন দেখি.. আজ তিনি আমার সামনেই !!!!
সাবিনা ইয়াসমিন ও রুনা লায়লায় গানও অসাধারণ হয়েছে...
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছে শেষ দিকে আতশ বাজীর প্রদর্শনী। পুরো আকাশকে মনে হচ্ছিল যেন কোন শিল্পীর ক্যানভাস। সেখানে ইচ্ছামত ফুটে উঠছে.. নানা চোখ ঝলসানো রং.............
সবাই আনন্দে চিৎকার করে পুরো এলাকা মাতিয়ে রেখেছিল, আর সাথে ছিল ভুভুজিলার সুর !!
আমরা এই অনুষ্ঠানের সকল আয়োজকদের জানাই অন্তরের অন্তস্থল থেকে ভালবাসা।
সবমিলিয়ে আমার জীবনের এক অসাধারণ সন্ধ্যা কাটালাম।
আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আমাকে এত আনন্দ দানের জন্য।
বাসায় এখন এসে তাই হড়বড় করে উপরের কথাগুলো লিখে ফেললাম....
আশা করি সবাই সবার কথা জানাবেন...
সাবাশ বাঙালি.. সাবাশ
বাংলার টাইগারদের জন্য শুভকামনা রইল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।