ঘাটের এই পারে বসে আছি ঐ পারে যাওয়ার অপেক্ষা। আমি দেখলাম একটা পিঁপড়া। মৃত একটা পোকাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মৃত পোকাটি পিঁপড়াটির আহার হবে নিশ্চিত। অবাক হলাম যখন দেখি পিঁপড়ার তুলনায় পোকাটি বেশ বড়।
আমার দেখার কৌতুহল আরো বাড়লো।
পিঁপড়াটির যাত্রাপথ অনুসরণ করলাম। দেখি কতদূর যাওয়ার পর পাকা ওয়ালের মাঝখানে হালকা একটা ফাটল। পিঁপড়াটি পার হতে পারছেনা।
ইচ্ছে করলো একবার- হাতে ধরে পিঁপড়াটিকে ভাঙগা জায়গাটুকু পার করে দিই।
তারপর ভাবলাম,,,,,, না দেখিনা কী হয়।
এবার আমার অবাক হওয়ার পালা।
পিঁপড়াটি মৃত পোকাটিকে ছোট ভাঙগা ফাটল বরাবর রাখলো। তারপর মৃত পোকাটির উপর দিয়ে পার হলো। এবার আবার মুখ দিয়ে কামড়ে ধরে তার গন্তব্যে যাওয়া শুরু করলো।
এই তুচ্ছ অতি সামান্য কীটের সমস্যা উত্তোরনের এ উপায় দেখে আমি একেবারে নির্বাক হয়ে গেলাম। আমার কৌতুহল আরো বাড়লো। আমি শেষ পর্যন্ত পিঁপড়াটিকে ফলো করলাম।
দেখি ঘরের দেয়ালের ছোট এক কোনায় সূচের চেয়ে সামান্য বড় এক গর্ত। পিঁপড়াটি সে দিকেই যাচ্ছে এবং এক সময় তার গন্তব্যে পৌঁছালো।
গল্পটা এখানে শেষ হলেই পারতো।
এবার শুরু হলো গল্পের অন্য দিক।
পিঁপড়াটি নিজে গর্তের ভিতর ঢুকে খাবারটুকু ভিতরে ঢুকে চেষ্টা করে, কিন্তু পারে না। আবার বের হয়ে আসে, ওপর থেকে ঢুকাবার চেষ্টা করে , তা ও পারেনা। পিঁপড়ার তুলনায় খাবারটা এতো বেশী বড় যে কোনো ভাবেই সে খাবারটুকু ভিতরে নিতে পারেনা।
একসময় পিঁপড়াটি এতো কষ্টে , এতো চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নিয়ে আসে খাবারটুকু বাইরে রেখেই গর্তের ভিতর ঢুকে পড়ে।
এই কি তবে জীবন। এতো অস্তিরতার পর, এতো টানাটানির পর, জীবন নিয়ে এতো বুঝা পড়ার পর, একেবারে শুন্য হয়ে রিক্ত হয়ে চলে যেতে হয়। শুধু দিনের পর দিন নিজের বোঝা ভারি করতে থাকি। এতো বেশী বড় করে ফেলি এই বোঝা শেষ প্রস্থানে শূন্য হাতেই প্রস্থান করতে হয়।
© আরিফ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।