আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনের কথা-৩৯



চলছে..... এরকম চলছে কথা মাঝে মাঝে হাসান বললো আমাকে সবাই হাসু নামে ডাকে. তুমিও হাসু বলে ডেকো হাসু বলেই ডাকতাম আমি, হাসু আমাকে একদিন জিজ্ঞেস করলো তুমি দেখতে কেমন? আমি বললাম দেখতে মোটামুটি, গালে একটা তিল আছে আর লম্বায় ৫’২”। আমার কথাতো জানলে তুমি দেখতে কেমন বলো? উজ্জল শ্যামলা দেখতে মোটমুটি লম্বা ৬’ ২”। এতো লম্বা তুমি, তুমিতো অমিতাভ বচ্চন? হাসলো ও। হাসু গান গায় গীটার বাজায়। অনেক মজার মজার গল্প করে।

আস্তে আস্তে হাসুর সাথে আমার একটা ফ্রেন্ডশীপ তৈরি হয়ে গেলো। রানা সেটা বুঝতে পারলো এর পর থেকে সে একেকদিন একেক ছেলের সাথে কথার জন্য জোর করতে লাগলো। তবে হাসুর সাথেও কথা হতো খুব কম। আমার কাছে নাম্বার নাই তাই রানা ফোন করলেই ওর সাথে কথা হতো। রানা হঠাৎ একদিন আমাকে বললো হাসুর সাথে অন্যরকম কথা মানে সেক্সুয়াল কথা বলতে, আমার মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পরলো, এটা কি করে সম্ভব, স্বামী তার বউকে বলছে অন্য ছেলের সাথে এইরকম কথা বলতে? এ কোথায় আছি আমি, এ কি জীবন পেলাম আমি, আমার স্বপ্ন হারিয়ে যাবে চীরতরে।

তাইতো যাচ্ছে! যদি আমার ভালোলাগা থাকতো তবে অন্য কথা কিন্তু কিছুতেই মানতে পারলাম না আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটা ছেলের সাথে... না.না. এটা কি করে সম্ভব আমি ভাবতে পারছি না কিছুতেই মানতে পারছি না। প্রচন্ডভাবে না করলাম, আমি পারবো না কিছুতেই না। আমাকে মেরে ফেলো, আমি মরতে চাই তবু না। তোমার মত একজন মানুষকে আমি কি করে ভালোবাসলাম সেটাই ভাবছি! রানা খুব রেগে গেলো আমি যে তোমাকে বিয়ে করেছি সেটা তোমার ভাগ্য, সেটা মনে করার কোন কারণ নাই, তুমি আমাকে বিয়ে না করলে আমি বেঁচে যেতাম। এই রকম নানা বাগ বিতন্ড চলতে থাকলো, ঝগড়ার বর্ণনা দিয়ে লাভ নাই, ঝগড়া হয়েছিলো এটাই বড় কথা সব কথা এখন মনেও নাই ঝগড়ার সময় কত কথাই হয়।

রানা ঝগড়ার কোনো এক পর্যায়ে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলো তার মাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে আসলো। আমি অবাক উনি এসে কিছু না জেনে আমাকে নানা কথা বলতে শুরু করলো গালাগালি করতে থাকলো এভাবে থাকতে পারলে থাকবে তা না হলে চলে যাবে- সেদিন প্রথম রানার মায়ের সাথে উঁচু গলায় কথা বললাম -আপনি কেনো আমাদের কথার মধ্যে এসেছেন, এটা স্বামী স্ত্রীর ব্যাপার তাছাড়া বিয়ে করার সময় আপনার ছেলে কি আপনাকে জিজ্ঞেস করে বিয়ে করেছিলো যে এখন ছাড়বে কিনা সেটা আপনার কাছে জানতে হবে। প্লিজ আপনি যান। তারপর সারা রাত চললো ঝগড়া আর কান্না। অসহ্য হয়ে উঠলো জীবন আমার।

চলতে থাকলো প্রতি রাতে মানসিক নির্যাতন ছেলেদের সাথে বাজে কথা বলার জন্য। কিন্তু আমি রাজি হচ্ছি না আর তখনই শুরু হয়ে যাচ্ছে ঝগড়া। ঘুম নেই সুখ নেই ভালোবাসা নেই নিঃস্পৃহ জীবন। প্রতিটি মূহুর্তে চলতো নিজের সাথে দ্বন্দ, নিজেকে অনুভুতিহীন একটা মাটির মানুষে পরিণত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকলাম, জীবনের ভালোলাগাগুলো মুছে ফেলতে চাইলাম, জীবন চালাতে হবে তাই চালাচ্ছি এমন একটা অনুভূতি চলে আসলো ভিতরে। আমার সব চাওয়া আর স্বপ্নগুলো ঘুম পারিয়ে রাখলাম সোনার কাঠি আর রূপার কাঠি দিয়ে এই রাক্ষসপুরীতে।

চারুকলায় গেলে একটু মন ভালো হতো কিছুক্ষণের জন্য ভুলে যেতাম আমার কষ্টের কথাগুলো। খোলা আকাশের নিচে কিছুক্ষণ প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতাম, আবার কিছুক্ষণ পরেইতো ঢুকতে হবে সেই রাক্ষসপুরীতে। আমার স্বপ্নের রাজকুমারকে খুঁজতে যেয়ে শেষে কিনা রাক্ষসপুরীতে আটকে গেলাম। এমনতো হওয়ার কথা ছিলো না। তবুতো এমনই হলো।

প্রচন্ড সুখি হতে চেয়েছিলাম আর দিতে চেয়েছিলাম নিজেকে উজার করে যতটুকু আছে আমার, নিতে চেয়েছিলাম অল্পই কিন্তু কিছুই যে পেলাম না। ভেবেছিলাম পাওয়ার কোনো কমতি থাকবে না যাকে আমি দেবো। তবে ভুলটা কোথায় হলো? ভাবনায় নাকি কাজে। স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি এ আমার বড় অন্যায় নাকি স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো এ আমার দুর্ভাগ্য। চলবে........



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.