চলবে......
আমার কষ্ট আমার জীবনের কথা কখোনো কাউকে বলিনি, কখোনো দেখিনি কারো চোখে নির্ভরতার আহ্বান, শুধু দেখেছি অজস্র চাওয়া, আর ভালোবাসা দেবার আকুল আবেদন।
ইমোশনাল একটা মেয়ে আমি যুক্তি দিয়ে জীবন চালাতে যেয়ে প্রতি পদে পদে নিজেকে ঠকিয়েছি। নিজের পাওনাটা কখোনো বুঝে নেইনি। শুধু কম্প্রোমাইজ করেছি। মাঝে মাঝে সব বাঁধা ভেঙ্গে ফেলতে ইচ্ছা করে।
কিন্তু কই পারি না তো! আমার দু’হাত যে সমাজের শক্ত শিকলে বাঁধা, কে খুলবে সে বাঁধন? কেউ নেই আমি একা, খুব অন্ধকার একটা রাস্তা দিয়ে আমি হাটছি। শুধু মনে হচ্ছে ঐ যে দুরে একটা আলো দেখতে পাচ্ছি। এমনি করেই সেই আলোর সন্ধানে হাটতে হাটতে হয়তো আমার জীবনটাই শেষ হয়ে যাবে আলোর দেখা পাবো না। আশা আছে বলে তো মানুষ বাঁচে সব জেনেও আমি আশা করছি। তা না হলে তো কবেই মরে যেতাম।
মূহুর্তের জন্য যখন সব আশা মুছে যায় মাঝে মাঝে সত্যি তখন নিজেকে একটা মৃত মানুষ মনে হয়। কি সব লিখছি যাই হোক, লিখে যখন ফেলেছি নাই বা মুছলাম এতো আমার অনুভুতিরই কথা।
অনেক কথা ভাবতে ভাবতে মনে পরে গেলো পবন-এর কথা, যে আমাকে জীবনে গভীরভাবে প্রথম ভালোবাসা জানিয়েছিলো, মাত্র ম্যাট্রিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে দু’তিন দিন হলো। বান্ধবীর ছোটভায়ের জন্মদিন। ওর একটা মামা ছিলো নাম লিটু, তখন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেবে, তার বন্ধুরাও এসেছিলো অনুষ্ঠানে তাদের মধ্যে পবন লিটুমামার ক্লোজফ্রেন্ড।
দুর থেকে ছেলেটা বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে। একসময় লিটুমামা ওর সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলো। দু’একটা কথা হলো। তারপর চলে যাওয়ার আগেই লিটু মামা আমাকে ডেকে বললো তোমাকে পবনের ভলো লেগেছে তোমাকে ও কিছু বলতে চায়। ঐ অনুষ্ঠানেই পবন তার ভালোবাসার কথা আমাকে জানালো খুবই ভদ্রভাবে, আর বললো আমি এখন উত্তর জানতে চাই না তুমি ভাবো পরে জানিও।
চুপ করে থাকলাম।
দেখতে ভালো ছিলো পবন, ভালোই লাগলো খারাপ না। তবে ডিসিশন নিতে পারলাম না। সত্যি ভাবতে শুরু করলাম।
অনেক ভাবলাম কেনো যেনো সায় পেলাম না।
এতো ইমোশনাল আমি তবু হুট করে কারো প্রেমে পরিনি কখোনো। এতে আমি নিজেই অবাক হই সেটা কি করে সম্ভব হয়েছে আমার পক্ষে। সব জায়গায় গভীরতা খুঁজেছি আমি, যত গভীরতা চেয়েছিলাম আমি তত পাইনি কারো মাঝে তাই হয়তো প্রেমে পরিনি। আর রানা সাথে প্রেমে পরাটা ঠিক প্রেমে পরা বললে ভুল হবে, ফাঁদে পরেছিলাম আমি, আঁটকে গিয়েছিলাম। যুক্তি দিয়ে খন্ডন করেছিলাম ইমোশনকে।
যদি এমন হতো সেই রুপকথার গল্পের মত এমন একটা পরীক্ষা থাকতো যেমন যে রাজপুত্র ঘোড়ার রেছে র্ফাস্ট হবে সেই রাজকন্যাকে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসবে আদর করবে সুতরাং তার সাথেই রাজকন্যার বিয়ে দেবে রাজা।
আর সেই রাজকন্যাটা যদি আমি হতাম তবে বেশ হতো। আমার জীবনটাই এমন সব অদ্ভুত ভাবনায় মিশে আছে।
পবনকে আমার ভালোই লেগেছিলো একবার ভাবলাম প্রেম করি, খারাপ নাতো দেখতে ভালো ফ্যমিলিও ভালো, আবার ভাবলাম মাত্র ইন্টামিডিয়েট পরীক্ষা দিচ্ছে কবে পাশ করবে কবে চাকরি করবে তারপর বিয়ে! লেনদি প্রসেস, অযথা ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই,
বাসায় ঝামেলা হবে, আসলে মন থেকে ওভাবে সাড়া পাইনি। চেঞ্জ করলাম পবনের সাথে প্রেম করবো না।
আমার সেই বান্ধবীর বাসা পাশেই একদিন ডেকে পাঠালো আমাকে যেয়ে দেখি, লিটু মামা আর পবন বাসায় আর কেউ নেই।
মামা বললো পবনের সাথে কথা বলো আমি পাশের রুমে আছি। আমি বললাম কি কথা বলবো আপনি থাকেন। উনি বললেন তুমি একা কথা বলো।
পবন জানতে চাইলো, কি ডিসিশন নিলে? এমন মায়া করে জিজ্ঞেস করলো কেমন যেন লাগলো,
তাকিয়ে থাকলাম বুঝতে পারছি না কি বলবো।
পবনের প্রশ্নের উত্তর কি দিবো বুঝতে পারছিলাম না, ওকে কষ্ট দিতে চাই না আমি আবার এই মূহূর্তে প্রেমও করতে চাই না,
কি করবো বুঝতে পারছি না।
আবার বললো পবন বলো তুমি কি ডিসিশন নিলে।
হঠাৎ করে বলে ফেললাম এই মূহুর্তে কিছু করার ইচ্ছা নাই।
কেনো?
কারণ নাই?
আমাকে তোমার ভালো লাগে না।
ভালো খারাপের প্রশ্ন না।
তবে?
জানি না।
কি জানি ভাবলো আমার দিকে তাকিয়ে তারপর বললো তুমি শুধু রাজি হও, তুমি শুধু বলো তুমি আমাকে ভালোবাসো, আামর জন্য অপেক্ষা করবে, আমি তোমাকে কখোনো বিরক্ত করবো না আমার পড়াশোনা শেষ করে তোমার কাছে আসবো।
যখন আমার সাথে এই কথাগুলো হচ্ছে তখন সে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে মেরিন ইঞ্জিয়ারিং ভর্তি হয়েছে ১মাস পরে চলে যাবে।
আমি বললাম তোমাকে আমার খারাপ লাগে তা বলবো না কিন্তু অপেক্ষা করবো এমন কথাও দিতে পারছি না তবে ততদিন যদি আমার বিয়ে না হয় তবে আমি থাকবো, যেহেতু তোমাকে ওভাবে ভালোবাসিনি তাই এমন কথা আমি দিতে পারবো না।
পবন খুব অনুরোধ করলো আমাকে বুঝালো, কিন্তু না জোর করেতো প্রেম করা যায় না।
আমি শুধু বলছি আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি বাসায় যাই, ও বললো আমাকে শুধু কথা দিয়ে যাও।
শুধূ বলেছিলাম এমন কথা আমি দেবো না যা আমি রাখতে পারবো না।
যদিও খুব খারাপ লাগছিলো তবু কেনো যেনো খুব শক্ত হয়ে গেলাম কোনো কথা বললম না। আমি চলে আসলাম।
পবন বাইরে চলে যাওয়ার সময় আমার বান্ধবীকে বলে গিয়েছিলো ‘তোমার বান্ধবীকে বলে দিও ওর কথা আমার কখোনো মনে পরে না।
’ বুঝেছিলাম অভিমানের কথা এটা। ওর সাথে আর দেখা হয়নি কখোনো। কি জানি মাঝে মাঝে এসব কথাগুলো মনে পড়ে যায়, না না প্রশ্ন জাগে মনে।
রানার টেলিফোনে কথা বন্ধ হচ্ছে না, বুঝলাম ঝগড়া করে লাভ নেই অন্যভাবে সমাধানটা ভাবতে হবে। ইদানিং রানা যখন ফোনে কথা বলে আমি ফোনের পাশে বসে থাকি, আমি বললাম তুমি কথা বলো আমি কিছু মনে করবো না।
শুরু হলো আমার সামনেই কথা বলা এখন মাঝে মাঝে আমাকেই ফোনে চেয়ে দিতে হয়। কখোনো কখোনো আন্দাজে নাম্বার ঘুরাতো রানা যেখানে যায়, সব সময়তো আর মেয়েরা ফোন ধরে না একদিন হঠাৎ একটা ছেলে ফোন ধরলো রানা হঠাৎ করে রিসিভারটা আমার হাতে ধরিয়ে দিলো বললো কথা বলো,
আমি বললাম আমি কি বলবো?
রানা ধমক দিয়ে একটু রাগ করে বললো যা ইচ্ছা বলো,
আমি কিছুটা নারভাস
ওপাশ থেকে একটা ছেলে ফোন ধরলো...
বললো হ্যলো কাকে চাচ্ছেন?
বললাম আপনি কে বলছেন?
আমি চমন, আপনি?
আমি সীমানা।
চলছে....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।