কিন্ত যে সাধেনি কভু জন্মভূমি হীত স্বজাতির সেবা যেবা করেনি কিঞ্চিত, জানাও সে নরাধম জানাও সত্বর অতীব ঘৃনীত সেই পাষন্ড বর্বর
এক সময় মনে করা হতো, বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ব্রাজিলের আমাজন জঙ্গলের সব আদিবাসী গোষ্ঠীকেই চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়ে গেছে। তবে সম্প্রতি বিমান থেকে তোলা ছবিতে ব্রাজিলের পেরু সীমান্তবর্তী জঙ্গলে হুমকির মুখে থাকা এক আদিবাসী গোষ্ঠীর সন্ধান মিলেছে। সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল ছবিগুলো তোলে। সংগঠনটির দাবি, উত্তর ব্রাজিলের রোরাইমা প্রদেশে এখনো ইয়ানোমামি ইন্ডিয়ানদের একটি গোষ্ঠী আছে। যাদের সঙ্গে বাকি বিশ্বের কোনো যোগাযোগ নেই।
আর বিশ্বজুড়ে এমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর সংখ্যা শতাধিক।
ব্রাজিলের আমাজন জঙ্গলের বেশ কিছু এলাকাজুড়ে রয়েছে স্বর্ণখনি। ওই সব এলাকায় অবৈধ খনিশ্রমিকের আনাগোনাও অনেক বেশি। মূলত এদের সংস্পর্শেই ম্যালেরিয়াসহ নানা রোগের প্রকোপে পড়ছে আদিবাসীরা। এসব খনিশ্রমিকদের দ্রুত জঙ্গল থেকে বের করতে না পারলে ইয়ানোমামি আদিবাসীদের ওপর হুমকি আরো বাড়বে।
'মোঙ্াটেটু' নামে নতুন সন্ধান পাওয়া গোষ্ঠীটির বাস মূলত খনিসমৃদ্ধ এলাকাতেই। আগে সন্ধান পাওয়া ইয়ানোমামি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ আছে সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের এমন এক কর্মকর্তা ডেভি কোপেনাওয়া বলেন, 'এখনো ওই এলাকায় যোগাযোগ হয়নি এমন বহু আদিবাসী গোষ্ঠী বা ইন্ডিয়ান রয়েছে। আমি আমার সেই স্বজনদের সহায়তা করতে চাই। ওদের রক্তও আমাদের মতোই। সাদা মানুষের পৃথিবী তারা কখনো দেখেনি।
'
১৯৯২ সাল থেকেই এই মানুষের জন্য ইয়ানোমামি পার্ক স্থাপনের প্রচার চলছে। প্রায় ৯৬ লাখ হেক্টর জমিতে ইয়ানোমামি মানুষের বাস। এলাকাটি সুইজারল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডের প্রায় দ্বিগুণ। ব্রাজিলের আদিবাসীবিষয়ক দপ্তর 'ফুনাই'য়ের কর্মী হোসে কার্লোস মাইরেলেস বলেন, 'মোঙ্াটেটুদের অস্তিত্ব রয়েছে। ইয়ানোমামি পার্কের যেসব স্থান শূন্য রয়েছে বলে মনে করা হয় তা ততটা খালি নয়।
আমি বলতে চাই, এসব এলাকায় যোগাযোগ হয়নি এমন গোষ্ঠীর সংখ্যা মাত্র একটি নয়। '
মোঙ্াটেটু আধুনিক সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন একাকী বসবাসকারী শতাধিক জাতিগোষ্ঠীর অন্যতম। তবে এমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রকৃত সংখ্যা কত তা কারোরই জানা নেই। শুধু ব্রাজিলের চিরহরিৎ বনেই এ সংখ্যা সত্তরের ওপরে। ফুনাইয়ের দেওয়া তথ্যানুসারে, পেরুতে আরো ১৫টি গোষ্ঠী রয়েছে।
দুর্গম এলাকা এবং সামরিক উপস্থিতির কারণে পশ্চিম পাপুয়ায় এমন গোষ্ঠীর সংখ্যা কত তার হিসাব পাওয়া কঠিন। এসব আদিবাসী গোষ্ঠী সম্পর্কে খুব একটা কিছু জানাও যায় না। যদিও খুব সহজেই বোঝা যায় বাকি বিশ্ব সম্পর্কে তাদের অজানা বিষয়গুলো। গাড়ি, ব্যাংক, টেলিফোন বা সরকার সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। ইন্টারনেট বা বারাক ওবামার প্রশাসন সম্পর্কেও তারা কিছুই জানে না।
এ ছাড়াও আরো অনেক কিছুই জানে না তারা। ১৯৭৪ সালে প্রথম সন্ধান পাওয়া এনাওয়ানে নাওয়ি আদিবাসী গোষ্ঠীর এক সদস্য জানান, 'আমরা জানতাম না বন উজাড় করে ফেলা কী জিনিস। ' তবে গত সপ্তাহে প্রকাশিত ছবি থেকে স্পষ্ট যে, তাদের অস্তিত্ব রয়েছে এবং তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।
যদিও বাকি পৃথিবীর অল্পকিছু সম্পদলিপ্সুদের জন্য আদিবাসীদের নিরপত্তা বা সুরক্ষা তেমন কোনো মূল্য বহন করে না। ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস যখন আমেরিকায় প্রথম পা ফেলেন তখন শুধু ব্রাজিলেই আদিবাসী গোষ্ঠীর লাখ লাখ বসবাস করত।
এখন সেই সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখে নেমে এসেছে। বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে বহিরাগতদের নিয়ে আসা নানান রোগে ভুগে। বিষয়টি এখনো একই অবস্থায় আছে। আধুনিক সভ্যতার মানুষের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ স্থাপনের পর যেকোনো আদিবাসী গোষ্ঠীরই অন্তত অর্ধেক মানুষ মারা যায়।
সূত্র : দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।