রিজওয়ানুল ইসলাম রুদ্র তুমি কোথা থেকে এসেছো?
বাংলাদেশ থেকে।
বাংলাদেশ! এটা কী?
ভারত ও মায়ানমারের মাঝামাঝি ছোট্ট একটা দেশ।
ও আচ্ছা! এটা নিশ্চয়ই ভারতের কোনো প্রদেশ?
না, এটা সম্পূর্ণ আলাদা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। ভারতের সাথে এর কোনো মিলই নেই।
ও আচ্ছা! শুনেছি তোমার দেশে দুর্ভিক্ষ চলে নাকি প্রায়ই?
না, এখন অন্য সব দেশের মতোই দরিদ্র মানুষ আছে বাংলাদেশে।
তবে তুমি খুব সম্ভবত ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা বলছো!
বিদেশে বসবাসরত কোনো বাংলাদেশি এ ধরণের বিড়ম্বনাকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় নাই, এ কথা বলা কঠিন। বেশিরভাগই উপরের আলোচনায় কখনো নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিয়ে সফল হয়েছে আবার কখনো তাকে লজ্জিত হতে হয়েছে। প্রায় ৪০ বছর আগে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিভক্ত হওয়া পূর্ব পাকিস্তান আজ আমাদের প্রিয় "বাংলাদেশ"। যে বাংলাদেশকে চিনে না, ভারত নামে একটি বৃহৎ রাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়াতে আছে তাকে চিনে। চেনার কথা।
ভারত অনেকদূর এগিয়ে গেছে, আরো এগোবে। পাকিস্তান জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো, এখন আবার উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে। মাঝখানে পড়ে আছি আমরা, বাংলাদেশিরা। যাদের এখনো অনেকেই বাংলাদেশকে "ভারতের অঙ্গরাজ্য" হিসেবে মনে করে। আসলে এ ধরণের ধারণা হওয়াটা অস্বাভাকি কিছু না।
১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। একজন সুইডিশ, আমেরিকান, ফরাসি, চায়নিজ ভারত সম্পর্কে যেটুকু ধারণা রাখে, তার আশপাশের দেশগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখে না। তাদের অনেকেরই ধারণা ১৯৭১ এ বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধ না, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়েছিল! (আমার লিখতে অস্বস্তি লাগছে, কিন্তু ধৈর্য ধরে পড়ুন!) এ নিয়ে কারো সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েও লাভ নেই। অজ্ঞানতা তাদের অন্ধকার। তার আগে দেখে নেই টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত "স্বাধীনতার ঘোষক কে : মুজিব না জিয়া" ভারতীয়দের মন্তব্যসমূহ :
TEJINDER MOHAN SINGH (NEW YORK )
14 Dec, 2011 09:44 PM
IT WAS GEN JAGJIT SINGH ARORA ...WHO LIBERATED BANGLADESH FROM PAKISTAN...AND IT WAS GEN. NIAZI OF PAKISTAN WHO SURRENDERED WITH HIS 93,000 SOLDIERS WELL EQUIPPED WITH ARMS TO GEN JAGJIT SINGH ARORA OF INDIAN ARMY......AND CHANGED THE MAP OF TEH WORLD...
(জেনারেল জগজিত সিং অরোরাই বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন করিয়েছিলেন।
জেনারেল নিয়াজী পাকিস্তানের পক্ষে ৯৩০০০ সৈন্যসহযোগে জেনারেল জগজিত সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন অস্ত্রসহ এবং বিশ্বমানচিত্র বদলে দিয়েছিলেন। )
- তেজিন্দার মোহন সিং (নিউইয়র্ক)
D.Bose (Calcutta)
14 Dec, 2011 09:00 AM
Who really cares. They are all staunch anti-Indians now, and they will be as they are Muslims first and second and third. Most of the 3 million victims of Pakistani army were Hindus; that fact was hidden by both the media and the Government of India. India had the chance to get rid of all Muslims and have an exchange of population. Instead we have now two Pakistans on both side and a hostile 14 percent of the population as Muslims, who will sooner or later demand another Pakistan.
(কে মাথা ঘামায়। তারা সবাই ভারত-বিরোধী এবং এরকমই থাকবে কারণ প্রথমত, দ্বিতীয়ত এবং তৃতীয়ত তারা মুসলমান। ৩০ লক্ষ নির্যাতিতের বেশিরভাগই ছিলো হিন্দু, এই তথ্য মিডিয়া এবং ভারতীয় সরকার গোপন রেখেছিলো। ভারতের সুযোগ ছিলো জনসংখ্যা বিনিময়ের এবং মুসলিমদের বিতাড়িত করার।
প্রকৃতপক্ষে, আমাদের দু'পাশে দুটো পাকিস্তান রয়েছে এবং অবশিষ্ট শতকরা ১৪ ভাগ শরণার্থীও মুসলিম (সম্ভবত কাশমিরকে উদ্দেশ্য করে লিখা) যেটাও ভবিষ্যতে আরেকটা পাকিস্তান হবে)
-ডি.বোস (কলকাতা)
বিস্তারিত : Click This Link
আমি নিজে রিপোর্ট করে, করতে বলায় বহু কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য তারা মুছে দিতে বাধ্য হয়েছে!
মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। তাদের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু এটা ওদের ভুলে গেলে চলবে না, আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকেই মানুষ যুদ্ধে নেমেছিলো। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে। এখানে বঙ্গবন্ধুই যে স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষক তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আর জিয়া সাহসী মুক্তিযোদ্ধা, জেড ফোর্সের প্রধান এবং পরবর্তীতে দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে খ্যাত। এখানে ভারত যদি দাবি করে এবং ৪০ বছর পর বিভ্রান্তি ছড়ায় তাহলে এর প্রতিবাদ আমাদেরই করতে হবে। ভারত নয় মাসের যুদ্ধে শেষের দুই মাস আমাদের সৈন্য দিয়ে সাহায্য করেছিলো। আর শরণার্থী শিবির, কমান্ডো ট্রেনিং এর জন্য মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধারা ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে আসতো। এটুকুই।
বাকি যুদ্ধটা আমরাই করেছি। বাংলাদেশে বসে নিজেদের সাথে ঝগড়া বিবাদ করে এসবের জবাব দেয়া সম্ভব নয়। যারা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, তারা এখনই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরুন। বাংলাদেশ, ভারতের অঙ্গরাজ্য কখনোই ছিলো না। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র।
আমরা ৪০ বছরে যেটুকু এগোতে পেরেছি, ভারত বা পাকিস্তান শত বছরেও তা পারে নাই। নিজেদের সাংঘর্ষিক দ্বন্দ্ব, নষ্ট রাজনীতি, কুশিক্ষা, কুসংস্কার, হিংসা-বিদ্বেষ আমাদের ভেতরে অনেক বেশি। একতাবদ্ধ হয়ে চললে আগামী ৪০ বছরে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব।
আমাদের প্রাণপ্রিয় বঙ্গবন্ধু, যখন তরুণ ছাত্রনেতা
মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কারো মনে কোনো রকম বিভ্রান্তি থাকার কথা না। এটা একটা সত্য ইতিহাস।
এর দলিল-উপাত্ত সবই আছে। বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এটা পজেটিভ দিক। আমাদের এই পজেটিভ দিকটাকে স্বাগত জানিয়ে দেশে-বিদেশে নিজেদের অবস্থান আরো পোক্ত করতে হবে। শুধু ফেসবুকে লাল-সবুজ প্রোফাইল পিকচার লাগালেই হবে না ব্যক্তিবিদ্বেষ ছেড়ে দেশকে সেভাবেই ভালোবাসতে হবে।
কোনোভাবেই বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি আমরা নষ্ট হতে দিবো না। আমরাই প্রমাণ করে দিবো বাংলাদেশ ছিলো, আছে, থাকবে।
আমাদের প্রিয় প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত! তোমাদের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমরা কৃতজ্ঞ বাংলাদেশিরা বলছি, একাত্তরে তোমাদের সাহায্য না পেলেও আমরাই জয়ী হতাম। কেন হতাম জানো? কারণ যুদ্ধটা সবাই হৃদয়ের রক্তক্ষরণ থেকে করেছিলো। নিজের মা-বোনকে পাকিস্তানি নরপশুদের হাত থেকে বাঁচাতে করেছিলো, পাশবিক উল্লাসে মেতে ওঠা রাজাকারদের হত্যা করতে করেছিলো, একটি ফুলকে বাঁচাতে যুদ্ধ করেছিলো... শুধু তিরিশ লক্ষের জায়গায় হয়তো বা ৬০ লক্ষ মানুষের রক্ত ঝরাতে হতো! তবুও বাংলাদেশিরাই জয়ী হতো।
আর পাকিস্তানিদের বলছি, হ্যাঁ, আমরা একসময় একসাথে একই মাটিতে ছিলাম। কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষেরা আমাদের ইচ্ছেমতো নির্যাতন করেছে, হত্যা করেছে লাখো মানুষকে। আমরা কখনোই এক হতে পারি না। তোমরা মুসলমান হয়ে মুসলমানদের হত্যা করেছো। হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করেছো।
আমরা বাংলাদেশিরা সব ধর্মের মানুষদের শ্রদ্ধা করি। আমাদের সংস্কৃতি তোমাদের দোররার সংস্কৃতি না। শিকলবন্দী না। আমরা প্রগতিশীল। তাই আমৃত্যু আমরা তোমাদের ঘৃণা করে যাবো...
আজ স্বাধীন একটা দেশ পেয়েও আমরা সেই দেশটাকে ক্ষত-বিক্ষত করতে পিছপা হই না।
মাদকাসক্তি, সন্ত্রাস, ধর্ষণ-খুন, রাহাজানি, পতিতাবৃত্তি প্রভৃতি অপরাধে আমরা পিষ্ঠ হয়ে গেছি একেবারে! নষ্ট রাজনীতি তো আছেই...
আসুন দেশকে ভালোবেসে এবার যুদ্ধটা করি দেশকে সবার কাছে সুন্দরভাবে পরিচয় করিয়ে দেবার ভেতর দিয়ে....
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার একটা ডকুমেন্টারি, প্রথম পর্ব :
সূর্যসন্তান
সেই অমর গান !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।