স্কুল জীবনের সৃতি আমাদের বোধয় কেওরই তেমন একটি সুখকর ছিল না শুধুমাত্র দুটি মানুষের জন্য । এক হলেন মহামান্য গনিত স্যার আর একজন ছিলেন মহামান্য ইংরেজি স্যার । তাদের বেত্রাঘাতে জর্জরিত হয়নি এমন দুই চারজন মানুষ খুজে পাওয়া মুশকিল । কেননা এটা একেবারে আমাদের জাতীয় সঙ্কট যে আমাদের ইংরেজি আর গনিতের প্রতিভা সর্বদাই মারাত্তক খারাপ।
বাঙালি মস্তিস্ক সবসময়ই উর্বর এবং এই জমিতে সব ফসলই চাষ হয় কিন্তু ওই দুই ফসল ছাড়া ।
আমরা আমাদের ভাষার বই ব্যাবহারে অসাধারন কিন্তু বিপত্তি ঘটে তখনি যখন ইংরেজি বইটি খুলি । আবার দেখা যায় সব বিষয়ই বুঝি কিন্তু বুঝি না শুধু গনিত । গনিত শুধু ওই একটিই নয় এই সংখ্যার প্রয়োগ আছে পদার্থ এবং হিসাববিজ্ঞান সহ আরও গোটা পাচেক বিষয়ে ।
কিন্তু এই দুই বিষয়ে দেখা যাচ্ছে বিপুল পরিমানে ছাত্র ছাত্রি বুঝতেই পারেনা যে আসলে কি করতে হবে কিংবা কিভাবে আরও এগুন যায় । আর আমরাও আসলে বুঝতে পারিনা এর প্রয়জনিয়তা কিংবা উন্নতির পথে অন্তরায়ই বা কি ।
প্রথমেই গনিতের ব্যাপারে আসি । আমরা কি বানাই ? ধান ফলান আর তৈরি পোশাক ছাড়া ? টেলিভিশন , ফ্রিজ, মোবাইল এসব নিত্যদিনের সামগ্রি থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল ,কার , বাস ,ট্রাক এসব জাতীয় ব্যাবহারযোগ্য কিংবা মেট্রো রেল , নিউক্লিয়ার ফিল্ড বা মহাকাশ স্টেশন উফ আর না , এসবের কোনটা বানাতে পারি আমরা?
আসলে কোনটাই না , কিছু পারি যা ওই না পারারই সমান। কেননা আমাদের ইঞ্জিনিয়ার নাই । হাজারে খুঝলে হয়ত পাবেন একটি । মোট জনশক্তির কত ভাগ আমাদের ইঞ্জিনিয়ার বলতে পারবেন ? সঠিক হিসেব হয়ত কেওরই জানা নাই ।
যাই হবে সেটা অবশ্যই প্রয়জনের তুলনায় অপ্রতুল । আমরা আজ ভাল বা খারাপ ইঞ্জিনিয়ার এর তর্কে যাব না , সোজা কথা আমাদের প্রয়োজন ইঞ্জিনিয়ার । কিন্তু যেই পরিমান ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন আমাদের সেটা কোনদিনও আমরা পাব না কেননা আমাদের শৈশবকালে যেই দুরবলতা থাকে গনিতের প্রতি সেটা কোন দিনও কাটে না । গনিত হল সায়েন্স এবং কমার্সের উচ্চশিক্ষার বেইস আর আমাদের এই বেইস চিরজিবনই থাকে কাঁচা । ফলে আমাদের আর ভাল টেকনিশিয়ান হয়ে উঠা হয় না ।
তারই ফলশ্রুতিতে আমাদেরকে বিদেশ থেকে আনতে হয় জনশক্তি এই সেক্টরে যেখানে আমাদের ছেলে মেয়েরাই যথেষ্ট হওয়ার কথা ছিল । সুতরাং সংখ্যার প্রতি আমাদের এই যে ভয় সেটা কাটিয়ে উঠা খুবই প্রয়োজন ।
আসুন দেখি ইংরেজি ক্লাসের কি অবস্থা । অবস্থা আরও করুন, বার বছর পড়েও হল না যে শেষ । বিশ্বাস করবেন না এমন অনেকেই আছেন আমাদের দেশের আমলা কিংবা সরকারি করমকরতা বা কর্মচারীরা যারা বলা তো দূর বানান করে ইংরেজি পড়তে পারবেন না ।
সেই দিকে না যাই এই বিষয়টি আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজন নিঃসন্দেহে । আমরা যে বিষয়ই পড়ি না কেন ভবিতসতে ,আমাদের এই ভাষার প্রয়োজন সর্বস্তরে । আমরা কোন ভাবেই এগিয়ে যেতে পারবনা এ ভাষা ছাড়া । অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় পিছিয়ে যায় শুধুমাত্র এই ভাষায় দুর্বলতার কারনে । আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের ইংরেজি চর্চার সাথে তুলনা করলে আমরা অনেক পিছিয়েই আছি এখনো ।
ইংরেজি আমাদের দ্বিতীয় ভাষা কিন্তু প্রয়জনের দিক থেকে প্রথম কেননা নতুন করে বলার কিছুই নেই এর গুরত্ত । আমরা আসলে শুধু ইংরেজিই না বরং বাংলাটিও শিখছি না ভাল ভাবে কারন আমরা ভাষার ব্যাপারে বরাবরই কাঁচা । যেখানে অন্যান্য দেশে বিশেষ করে যারা ইউরোপে থাকেন তারা জানেন যে সেখানে কয়টি ভাষায় শিক্ষা দেয়া হয় বিদ্যালয়গুলুতে। উন্নত দেশে যেখানে তিন চারটি করে ভাষা শিখছে সেখানে আমরা এই অতিরিক্ত একটা ভাষা শিখতে পারবনা ?
যাই হোক গুরত্ত কিন্তু কম দেয়া হয় না এই দুই বিষয়ে কিন্তু কিছু সমস্যার কারনে উন্নতি হচ্ছে না অবস্থার । সেগুলু নিয়ে ইনশাল্লাহ আগামিতে লিখব যদিও গনিতের ব্যাপারে সম্যক ধারনা নেই তবে ইংরেজি শিক্ষার কিছু প্রতিবন্ধকতা নিয়ে অবশ্যই লিখব ।
পরিশেষে বলবো এই শত বাধার পরও এই দুই বিষয়ে অনেকেই আমাদের মুখ উজ্জ্বল করছেন প্রতি মুহূর্তে, জাতীয় ক্ষেত্রে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও । অনেকই বিভিন্ন দেশে এই ইংরেজিতে শিক্ষকতা করছেন কিংবা লেখক হয়েছেন এই ভাষার । সাথে সাথে অনেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আবিস্কার সামনে নিয়ে এসেছেন এবং দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিষয়ে । আজকে এই অবস্থার মধ্য দিয়েই চলছে আবিস্কার এবং নতুন উদ্ভাবন শুধুমাত্র বাংলার ওই সন্তানদের অদম্য সৃষ্টিশীল আগ্রহের কারনে । তাই শেষ করব তাদেরকে আন্তরিক স্যালুট প্রদানের মাধ্যমে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।