একজন নির্বোধের বয়ান একদিন বউ আদুরে গলায় জানতে চাইল, এই তোমার কোন নায়িকাকে পছন্দ? বললাম, ‘পূর্ণিমা। ’ ব্যস লঙ্কাকান্ড শুরু হয়ে গেল। বউ বলল, ‘তুমি পূর্ণিমাকে পছন্দ করলে কেন? শাবনূর দেখতে কত্তো ভালো। পূর্ণিমাকে আমার একদম পছন্দ না। ’ কোনো কিছু না ভেবেই বললাম, না আমার পূর্ণিমাকেই ভালোলাগে।
’ বউ ক্ষেপে গিয়ে বলল, ‘তুমি সিনেমার নায়িকাকে পছন্দ করবে কেন? পূর্ণিমা কী তোমাকে বিয়ে করেছে, না করবে?’ বউ একটার পর একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছে। বিরক্ত হয়ে বলি, ‘পূর্ণিমাকে ছাড়া আর কাউকে আমার ভালো লাগে না। মেয়েটা অনেক সুন্দর। ’ ‘কী বললে তুমি? তাহলে আমাকে বিয়ে করেছো কেন?’
আগুন লাগল সংসারে, পূর্ণিমা, তোমারই কারণে। এখন এই আগুন কে নেভাবে? বউকে শান্ত করার পালা।
বললাম, বউ শোনো, পূর্ণিমাকে নায়িকা হিসেবে ভাল লাগে। বিষয়টিকে সিরিয়াসলি নিচ্ছো কেন? বউ কোনো উত্তর দিল না। দূরে সরে রাগে গজগজ করছে। সেই থেকে পূর্ণিমার ভূত বউয়ের ঘাড়ে চেপে বসল। নামানো যাচ্ছে না।
২.
বৃহস্পতিবারের এক সকাল। দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হওয়া নায়িকা পূর্ণিমার ছবিসহ স্বাক্ষাৎকার পড়ছি। স্বাক্ষাৎকারটা পড়া শেষ হয়নি, পেছন থেকে পত্রিকাটা ছোঁ মেরে নিল বউ। বললাম, কি ব্যাপার? কিছুই বলল না ও। আবারো বলি, আমার এখনো পড়া শেষ হয়নি, দাও পেপারটা।
হাত বাড়িয়ে দিলাম পেপারটা নেয়ার জন্য, কিন্তু বউ পেপারের এক পাশ ছিঁড়ে ফেলল। প্রশ্ন করি, পত্রিকা ছিঁড়ছো কেন? এবার কোনো কথা না বলে পেপারটি দিল। বউ আমার পত্রিকাটা থেকে পূর্ণিমার ছবিটা ছিঁড়ে ফেলেছে। জানতে চাইলাম, ছবিটা ছিঁড়লে কেন? বলল, ‘শুধু ছবিটা ছিঁড়েছি, লেখার অংশ ছিঁড়িনি। পড়ায় অসুবিধা হবে না।
’
৩.
অন্য আরেক দিনের কথা। বাসায় কম্পিউটারের সামনে বসে আছি। পছন্দের একটি গান শুনছি। বউ পেছনে এসে দাঁড়ালো, ‘এই কী দেখ, নাটক না সিনেমা?’ আল্লাহ’র নাম নিয়ে দুষ্টবুদ্ধি কাজে লাগালাম। গান বাজছে, মনের মাঝে তুমি, মনের মাঝে তুমি...।
’ এক সময়ে এই গানটি বেশ শ্রোতাপ্রিয় হয়েছিল। পেছনে না তাকিয়ে চোখ মনিটরের পর্দায় আটকে রাখলাম। বউ বলে উঠল, ‘পূর্ণিমার প্রেমিকের চোখের পলক পড়ছে না দেখছি! দেখ, ভাল করে দেখ। আমি তো আর নায়িকা পূর্ণিমা নই!’
গান বন্ধ করে দিলাম। অনেক ভাব নিয়ে বউয়ের মুখের দিকে তাঁকিয়ে বললাম, এই তোমার মুখে এটা কিসের দাগ? কেমন কালো কালো লাগছে, নিজের যতœ নাও না কেন? সারাদিন সংসার নিয়ে পড়ে থাকলে হবে? আমাকে আর বেশি আগাতে দিল না।
বউ মুখ কালো করে পাশ থেকে উঠে চলে গেল।
৪.
কম্পিউটারের সামনে থেকে সরে আসলাম। বউকে কাছে ডেকে আদুরে কন্ঠে বলি, শোনো বউ, পূর্ণিমাকে পর্দায় বেশি সুন্দর লাগে। মেকআপ, টেকাপ নেয় তো! আসো আজ থেকে পূর্ণিমা শিফট প্লাস ডিলিট। পূর্ণিমা চ্যাপ্টার ক্লোজ।
মোলায়েম কন্ঠে বউ বলল, ‘এই শোনো, তুমি ভুল বুঝো না, পূর্ণিমাকে আমারো অনেক ভালো লাগে। যখন তুমি পূর্ণিমাকে সুন্দর বলো, পছন্দ করো, পূর্ণিমার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকো, তখন আমার ভাল লাগে না। তুমি কেন পূর্ণিমার দিকে তাকাবে! আমার রাগ লাগে ভীষণ। আমি হয়তো বোকার মতো কথা বলছি!’ বউয়ের কথা শুনে আর কিছু বলতে পারি না। মনে মনে বলি, পূর্ণিমা তুমি যতই সুন্দর হও না কেন, আমার বউয়ের কাছে তুমি কিছুই না।
গুডবাই পূর্ণিমা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।