দুই যুগের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে 'অতীত' করে দিয়ে ক্রিকেটকে গুডবাই জানালেন ভারতের মাস্টার ব্লাস্টার ব্যাটসম্যান শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। গত ২৪ বছরে ক্রিকেট মাঠে যার উপস্থিতি ছিল দর্শকের কাছে বাড়তি উত্তেজনা-উন্মাদনা ও আনন্দের, সেই শচীন কাল কোটি কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে বিদায় নিলেন মাঠ থেকে। কাল শচীনও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে কাল শচীন যখন বিদায়ী ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন তার পরিবারের সদস্য ও সতীর্থরা বার বার চোখ মুছছিলেন। কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন গ্যালারির অনেক দর্শক।
আবেগ সংবরণ করতে পারেননি টিভির সামনে বসা কোটি কোটি ভক্ত। বিদায়ী ভাষণে বার বার কেঁপেছে শচীনের কণ্ঠ। গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল তার। গত ২৪ বছর ধরে অকুণ্ঠ সমর্থন দেওয়ার জন্য ব্যাটিং জিনিয়াস তার বক্তব্যে দেশে ও দেশের বাইরের কোটি ভক্তদের অভিনন্দন জানান। একে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করেন লিটল মাস্টার।
স্মরণ করেন প্রয়াত বাবা রমেশ টেন্ডুলকারকে, যিনি ১৯৯৯ সালে মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে চলে গেছেন। বিদায়ী ভাষণে শচীন তার ক্রিকেট জীবনের অনেক ঘটনাই উল্লেখ করেছেন। ক্রিকেট মহানায়কের কৃর্তীর কথা বিবেচনা করে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান 'ভারতরত্ন' উপাধিতে ভূষিত করার ঘোষণাও দেওয়া হয়। আগামী বছরের ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে টেন্ডুলকারের হাতে 'ভারতরত্ন' পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। শচীন টেন্ডুলকারই হবেন 'ভারতরত্ন' পাওয়া প্রথম ক্রীড়াবিদ।
সেই ১৯৮৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু। তারপর বর্নিল ২৪ বছর। বিশ্বকাপ ট্রফি, সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি, টেস্ট ও ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের মালিক -প্রায় ক্রিকেটের সব অর্জনই এখন শচীনের দখলে। আর প্রাপ্তির ঝুলিটা এতো বড় হয়েছে মূলত মায়ের প্রার্থনার জন্যই-বিদায়কালে এমন কথাই বললেন শচীন, 'তার প্রার্থনা ও কল্যাণ কামনাই আজ আমাকে এই শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়ে দিয়েছে। ' বড় ভাই নীতিন ও অজিতের কথাও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন।
বোন বড় সবিতা যে প্রথম ব্যাট কিনে দিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছেন সে কথাও বলতে ভুলেননি ক্রিকেট কিংবদন্তি। শচীনের বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে স্ত্রী অঞ্জলীর প্রতি তার তীব্র ভালোবাসা। 'অঞ্জলীর সঙ্গে দেখাটা ছিল আমার স্মরণীয় একটি ঘটনা। সেই তো আমার সব সময়ের প্রেরণা। ' ছেলে অর্জুন টেন্ডুলকার ও মেয়ে সারাকে 'ডায়মন্ড' হিসেবে উল্লেখ করে, তাদেরকে আরও বেশি সময় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন শচীন।
বিদায়বেলায় সতীর্থদের কাঁধে চড়ে পুরো মাঠ প্রদক্ষিণ করেন ক্রিকেট কিংবদন্তি। অশ্রুসিক্ত নয়নে হাত নেড়ে ওয়াংখেড় থেকে বিদায় নেন টেন্ডুলকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।