আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাষ্ট্রপতি জামাইবাবু, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন

রাজাকারের বিচারের দাবিতে সোচ্চার আমার জন্মভূমিতে আপনাকে জানায় সু-স্বাগতম। একজন বাঙালি হিসেবে আপনাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমরা আপনাকে নিয়ে উৎফুল্ল অনেক বেশি। আপনি আমাদের রাষ্ট্রপতি জামাইবাবু প্রণব মুখার্জি । আপনার প্রতি আমাদের ভালবাসা, আথিতিয়তার কোন কমতি নেই।

কিন্তু আমাদের যন্ত্রণার কথা , আমাদের ক্ষোভ নিবারণ নিয়ে কেবলই প্রতিশ্রুতি মিলছে আপনাদের পক্ষ থেকে। বাস্তবে পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হচ্ছেনা। আমরা এ দাবি করছি না যে, ইচ্ছেমত সীমান্ত পেরিয়ে আপনাদের দেশে যাবো এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আপনারা আমাদের কাউকে আটক করতে পারবেন না। অবশ্যই আটক করবেন। গুলিও চালাবেন।

কিন্তু একটি বিষয় ভেবে পাইনা, বিএসএফ এর গুলিতে কখনও ফেনসিডিল ব্যবসায়ী মারা যায়না কেনো? ফেনসিডিলের বস্তাসহ কোন চোরাকারবারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে, এমন খবর, এখনও পর্যন্ত পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। বরং সংবাদপত্র গুলো থেকে দেখা গেছে গরুব্যবসায়ী, সাধারণ কৃষকসহ সীমান্তের নীরিহ লোকজনের ওপর অহেতুক গুলি চালায় বিএসএফ। তার মানে কি ভারত সরকার সুকৌশলে চাচ্ছে তরুণ প্রজম্ম ফেনসিডিলে আসক্ত হয়ে তিলে তিলে ধ্বংস হয়ে যাক। সীমান্ত হত্যা বন্দ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোনমোহনের প্রতিশ্রুতির কথা বেশ পুরানো। ২০১০ এ আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে মৌখিক ভাবে মোনমোহন বাংলাদেশের সরকার প্রধানকে আশ্বস্ত করেছিলেন।

তখন দেশে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনি উচ্চকন্ঠে বলেছিলেন, সীমান্তে আর নীরিহ মানুষের ওপর গুলি চালাবে না বিএসএফ। তারপরও বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যা। চলতি বছরের শুরুতেই হত্যা হয় চার বাংলাদেশী। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোন পথ এখনও বের হয়নি। তবে একের পর এক মিলছে প্রতিশ্রুতি।

যদিও এসব প্রতিশ্রুতির কথা বলছে সরকার। কিন্তু বাস্তবে এটির কোন প্রমান মেলেনি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে উত্তোরণের একটা পথ হতে পারেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী। তিনি একজন বাঙালি। তিনি আমাদের জামাইবাবু।

নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামের জামাই। এই গ্রামের মেয়ে শুভ্রাকে তিনি বিয়ে করেছেন। শুভ্রাদিকে সাথে নিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি আজ আসছেন ঢাকা। যাবেন নড়াইলে শ্বশুর বাড়িতেও। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেয়ার সময় থেকে দেশের বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয় যে এখন থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গাঢ় হবে।

সীমান্ত হত্যাকান্ডসহ নানা ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে আমাদের কূটনীতির বরফ গলতে শুরু করবে। তিনি বাংলাদেশে স্বার্থের ব্যাপারে সহানুভূতিশীল হবেন এটাই প্রত্যাশা অনেকের। যদিও শুভ্রা দিদি এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন। কিন্তু তার শৈশবের দিনগুলো কেটেছে চিত্রা নদীর ধারে। তার মামাবাড়ি নড়াইল সদরের তুলারামপুর গ্রামে।

তাঁর মামাতো ভাইরা এখনও ওই গাঁয়ে থাকেন। ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার ২৩ জুলাই, ২০১২ সংখ্যায় একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে : সাত পাঁকে বাঁধা পড়ে এ-পার বাংলার নড়াইল ছেড়েছিলেন মাত্র ১৭ বছর বয়সে। তখন কে জানত, যাঁরা সঙ্গে বাঁধা পড়লেন, তাঁর সহধর্মিনী হয়েই এক দিন ঢুকতে হবে দিল্লির ‘রাইসিনা হিল’-এ। তিনি শুভ্রা মুখোপাধ্যায়। প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনিই এখন ‘ফার্স্ট লেডি’।

শুভ্রাদি, তুমি ভারতবাসীর কাছে ফাস্টলেডি। কিন্তিু আমাদের কাছে “দিদি। ” তুমি কি পারোনা এই নিষ্ঠুরতা থেকে পরিত্রাণ দিতে। প্লিজ, তুমি আমাদের জামাইবাবুকে বলো। আর যেন একটিও গুলি না চালায় বিএসএফ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.