আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনেকটা পথ হেটেছি তবু হয়নি হাটা তোমার সাথে !



প্রণয় থেকে পরিণয়ে দাম্পত্য জীবনের শুরুটা থাকে সাদামাটা। কারণ আগে থেকে সব চেনাজানা। কিন্তু পারিবারিক পরিণয়ে পুরোটাই অজানা। হঠাৎ করেই অপরিচিত দু’জন মানুষের চিরদিনের জন্য মুখোমুখি হয়ে যাওয়া। তারপর দাম্পত্য জীবনের গতিপথে জন্ম নেয় ভালোবাসা।

কিন্তু সেই পরিণতি প্রণয় কিংবা পারিবারিক যেভাবেই হোক না কেন- একটা সময়ে এসে জীবনের ছঁকে বাধা পড়ে যায়। হয়তো চলে আসে খানিকটা একঘেঁয়ামি-বিষন্নতা। জীবনের এ অবসন্ন সময় পেরিয়ে আসতে প্রয়োজন ভিন্নমাত্রার কিছু অনুভূতির ছোঁয়া। আর সেই স্পর্শের শুরুটা না হয় হোক এবারের ভালোবাসার দিন থেকেই... ঠিক তোমার মতো করে অনেকেই না হয়- নিজের জন্য ভালোবাসে পাশের মানুষটিকে। তারা নিজের ভালোলাগার মতো করে গড়ে তুলতে চাইছে প্রিয়জনকে।

কিন্তু তাদের অনেকেই এটা জানেন না যে, প্রতিনিয়ত তোমার এটা ভালোলাগে আর ওটা ভালোলাগে না বলে মানসিক আঘাতে জর্জরিত করে যাচ্ছেন প্রিয় মানুষটিকে। আর নিজের অজান্তেই প্রিয়জনের মনের জমিনে নিজের অবস্থানকে করে তুলছেন নড়বড়ে। তাই এবারের ভালোবাসা দিবসে একটু বদলে নিন নিজেকে। যে কোনো বিষয় নির্ধারণে প্রিয়জনকে প্রাধান্য দিন এবং নিজের জন্য, নিজের মতো করে নয় বরং ভালোবাসার এ দিন থেকে প্রিয় মানুষটিকে ভালোবাসতে শুরু করুন ঠিক তাঁর মতো করে। তোমার তরে ভাসাই তরী একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি, কোনো কিছু বিসর্জন দেওয়া মানেই ঠিক বিলিয়ে দেয়া নয়।

প্রিয়জনের জন্য দেওয়া বিসর্জনও আপনার জন্য নিয়ে আসতে পারে বিশেষ কোনো অর্জন। কিন্তু কিভাবে এবং কোন কৌশলে সেটা করবেন-এমন ভাবনা মোটেও জটিল কিছু নয়। ধরুন, আপনার ধূমপানে তীব্র অভ্যাস আছে। কিন্তু পাশের মানুষটি সেটা একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। কিন্তু এজন্য খুব বেশি আপনাকে জোর করা হয়নি বলে আপনিও ধূমপান ছাড়েননি।

তাহলে এটাই আপনার হতে পারে চমৎকার সুযোগ ও সম্ভাবনা। প্রিয়জনের মন নতুনভাবে কেড়ে নিতে এবারের ভালোবাসা দিবসেই না হয় বিসর্জন দিন ধূমপান। ভাবছেন, ধোঁয়া ছাড়া কিভাবে চলবে? অনেকদিনের অভ্যাস? ভুলে যাবেন না- ধোঁয়া আসতে পারে ধূমায়িত কফির মগ থেকেও। এবারের ভালোবাসা দিবসে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে ভালোবাসা না হয় জমে উঠুক ধূমায়িত সেই কফির কাপেই। সন্দেহের তীর ছুঁড়ে ফেলুন সন্দেহ অনেকটা দেয়ালের ফাটলের মতো।

অনেকদিন ধরে দাগ ফেলে রাখে। হয়তো কিছুই হবে না কখনো। আবার হয়তো হঠাৎ করে পুরো দেয়ালও ধ্বসিয়ে দিতে পারে। সুতরাং মনের দেয়ালে সন্দেহের তীরের আঘাতে যেন ফাটল না ধরে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে দাম্পত্য জীবনে দু’জনারই। তাই যদি কারণে-অকারণে আপনার জীবনের প্রিয় মানুষটিকে সন্দেগ করার বাতিক থাকে তবে তা একেবারে ভুলে যান এবারের ভ্যালেন্টাইনে।

বাইরে থাকলে কেন সেলফোনে কল রিসিভ করা হয়নি কিংবা কেন এতক্ষণ ফোন ওয়েটিং ছিল- সে বিষয়গুলো শুনুন মন দিয়ে। বলা শেষ হলে ভেবেচিন্তে দেখুন, ওমন পরিস্থিতিতে পড়লে আপনিও হয়তো ফোনটা রিসিভ করতে পারতেন না। তাই কারণে-অকারণে সন্দেহ নয়, চাই যেকোনে বিষয়ে প্রিয়জনের সার্বিক সহযোগীতা ও সহমর্মিতা। মুগ্ধতা এড়ানো যায়নি কখনো ভালোবাসার এই দিনে আপনার প্রিয় মানুষটি যেভাবে আপনাকে চায় নিজেকে উপস্থাপন করুন ঠিক সেভাবে। যদি সেটা একতোড়া গ্লাডিওয়াস কিংবা একগুচ্ছ গোলাপে হয়-তবে তাই।

আবার সে যদি হয় রসনা বিলাসে, বহুপদী রান্নার বিশাল আয়োজনে- তাহলে তাই। যেভাবে যতটা সম্ভব সেভাবে চেষ্টা করুন মুগ্ধতা দিয়ে প্রিয়জনের মন জয় করে নেওয়ার। যদি ভ্যালেন্টাইনে প্রিয় মানুষটি কর্মব্যস্ততার কারণে সময় দিতে না পারে তাহলেও মন খারাপ করা চলবে না। প্ল্যান করতে পারেন ভ্যালেন্টাইনের পরের দিনটাতেই। আর ভ্যালেন্টাইনের রাতে প্রিয় মানুষটির ফিরতে দেরি হয়ে গেলে যত রাত হোক তাকে ফেলে ঘুমাতে যাবেন না কিছুতেই।

প্রয়োজনে ঘরের আলো কমিয়ে জ্বালিয়ে রাখুন মোমবাতি। ইলেক্ট্রসিটি সেদিন আর আপনাদের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। পাশাপাশি মোমের মৃদু আলো আপনার সারা ঘরে ছড়িয়ে দেবে মুগ্ধতার রেশ। দেখবেন এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই কিভাবে যেন বদলে দিয়েছে আপনার জীবনের বাকি অংশের ভালোবাসার গল্প। কথা হয়ে যাক কবিতা ভালোবাসার দিনে প্রিয়জনর জন্য না হয় করলেন তাই- যা করা হয়নি কখনো।

দিনের শুরুটা করতে পারেন চিঠি বা চিরকূট দিয়ে। যা কখনো হয়নি লেখা আপনার প্রিয়জনকে। কিংবা রুমালে মার্কার দিয়ে লিখতে পারেন দু’জনার নাম। সেলাইয়ের ঝামেলায় না হয়- নাইবা গেলেন। জমে থাকা এই টুকরো টুকরো স্মৃতিচি‎হ্ণগুলোই জীবন্ত রাখবে দুজনার ভালোবাসাকে।

যদি ভালো গান গাইতে পারেন কিংবা কবিতা আবৃত্তি তাহলে সেলফোনের ভয়েসরেকর্ডারে রেকর্ড করে নিন। তারপর প্রিয়জনের সেলফোনে সেটা ব্লুটুথ বা মেমরি কার্ডে করে সরিয়ে নিয়ে রিংটোন হিসেবে সিলেক্ট করে দিতে পারেন। কাজটি সারতে হবে চুপিচুপি। এরপর অপেক্ষায় থাকুন। যে কোনে জায়গা থেকে ফোন এলেই সে চমকে যাবে।

স্মৃতির আয়নায় দাড়িয়ে দুজনে দু’জনে মিলে ছবি তোলা হয়েছে অনেক। কিন্তু ডিজিটাল ক্যামেরার কল্যাণে মেমরি থেকে কম্পিউটারের হার্ডডিক্সে কপি করে আর পর্দায় ছবি দেখেই শেষ। সেগুলো আর প্রিন্ট করা হয়নি কখনো। ভালোবাসার এ দিনে দুজনে হুট করে কোনো স্টুডিওতে গিয়ে তুলতে পারেন ছবি। কিংবা জমানো ছবি থেকেই প্রিন্ট করার জন্য বাছাই করে নিতে পারেন নিজেদের ভালোলাগার কিছু মুহূর্ত।

তবে প্রিন্টের ঝামেলায় না যেতে চাইলে ডিজিটাল ফটোফ্রেমও ব্যবহার করা যেতে পারে। ভ্যালেন্টাইনে দম্পতিরা ফেসবুক কিংবা টুইটার ওয়েবসাইটের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল পিকচারে দু’জন একসঙ্গে আছেন- এমন কোনো ছবি ব্যবহার করতে পারেন। আর প্রিয়জন পাশে থাকলেও তাকে এসএমএস করতে ভুলে গেলে চলবে না। যখন প্রিয় মানুষটি দূরে ছিল তখন যেভাবে ভ্যালেন্টাইনে তাকে এসএমএস দিয়ে মুগ্ধ করার চেষ্টা করতেন কিংবা মনের ভাবনাকে প্রকাশের চেষ্টা চালাতেন ঠিক তেমনি করে এখনও এসএমএস করতে পারেন পাশে বসে থেকেই। ভালোবাসার দিনে পুরানো স্মৃতি আর ভাবনার বেশ চমৎকার একটুখানি ঝালাই হয়ে যাবে তাতে।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৪৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.