সমাজটাকে দেখে আজকাল খুব হাসি পায়। কে কেমন করে জীবন যাপন করবে সব এর ইচ্ছায় হতে হবে। এমনকি কে বেচে থাকবে, কে মারা যাবে, কে ধুকে ধুকে বাচবে, কে আত্মহত্যা করবে, সব সে ঠিক করে দেবে। বাহ বাহ। এর বাইরে যাবে তো তুমি সমাজের বাইরের মানুষ।
তোমাকে বাচতে হবে লড়াই করে। এমনকি পরিবারও তোমার সাথে থাকবে না।
তোমার অপরাধ সমাজ যাকে মরতে বলছে তুমি তাকে বাচার প্রেরনা দিয়েছ। সমাজ বলছে সে অযোগ্য তাই তাকে বাচতে হবে ধুকে ধুকে, সে কেন স্বপ্ন দেখবে সুখী হবার? এটা অপরাধ ঘোরতর অপরাধ। তার অতীত কলঙ্কিত, সে যদি প্রাণপন চেষ্টা করে সব মুছে নতুন করে জীবন শুরু করার তাকে কোন সুযোগ দেয়া যাবে না।
যদি দাও তবে তুমি অপরাধি। তোমাকেও ঘৃণা করা হবে প্রাণভরে।
সত্যিই তো, এত অপরাধ নিয়ে কারো বাচার অধিকার থাকে না। যার এত এত সার্টিফিকেট নেই, ব্যাংক ভরা টাকা নেই, নায়কোচিত চেহারা নেই, আছে শুধু অতিত ভরা কলংক সে কেন বেচে থাকবে? তাকে বাচার অনুমতি দিলেও সে বাচবে ধুকে ধুকে। তাকে তো সুখ দেয়া অপরাধ, ঘোরতর অপরাধ।
তাই খুব ইচ্ছা হয় মাঝে মাঝে সাহিত্য নামক বিষয়টাকে নিষিদ্ধ করে দেয়ার। তা হলে আর দশটা মানুষের মত করে জীবনটাকে দেখতে পারতাম। চার্লস ডিকেন্সের দেখানো সমাজের ঠুনকু মুখোশ, বদরিলার্দ এর দেখানো হাইপার রিয়েল জগৎ, এমিলী ব্রন্টির দেখানো সমাজের চাপে কারো নিঃশেষ হয়ে যাবার কাহিনী কখনো যদি না পরতাম খুব ভালো হত। জানি জীবনটা গল্প উপন্যাস না, কিন্তু গল্প উপন্যাস আকাশ থেকে পরে না। আমাদের চারপাশের জীবন থেকেই এর জন্ম।
কোন কোন মানুষ খুব কাছ থেকে জীবনটাকে দেখে, তারপর সবাইকে দেখায়। আমাদের ভুল সংশোধনের সুযোগ করে দেয়। আমাদের মানবতা আর বিবেক দিয়ে পৃথীবিকে দেখতে শেখায়, মানুষকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে শেখায়, কালের পর কাল যা হয়ে এসেছে তাই শুধু অন্ধের মত অনুসরন না করে নতুন করে ভাবতে শেখায়।
আমাদের দুর্ভাগ্য এভাবে ভাবা যে অপরাধ, এভাবে ভাবলে তো আমরা সমাজ থেকে ছিটকে পরব, পরিবারের মানুশগুলো বলবে তাদের অপমান করেছি, তাদের বুকে দাগ দিয়েছি, তাদের মনে কষ্ট দিয়েছি। কারন দারিপাল্লার একদিকে গোটা সমাজের হাজার বছর ধরে তৈরী করা নিয়ম আর অন্যদিকে একটা অযোগ্য মানুষের ঠুনকো জীবন।
এদিকটা কখনই ভারী হতে পারে না, কখনই না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।