একজন বিত্তবান লোক সিদ্ধান্ত নিলেন, শিকারের উদ্দেশ্যে আফ্রিকায় কিছুদিনের জন্য ঘুরে আসবেন। তাই তিনি একমাত্র সহকারী হিসেবে তার বিশ্বস্থ কুকুরটিকে নিয়ে বের হয়ে পড়লেন। একদিন, কুকুরটি একটা প্রজাপতিকে খেলাচ্ছলে তাড়া করতে করতে হটাৎ লক্ষ্য করল যে সে তার বাসস্থান থেকে অনেক দূরে চলে এসেছে এবং পথ হারিয়ে ফেলেছে। তাই সে পথভ্রষ্ট হয়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরে বেরাচ্ছিল। এমতাবস্থায় হটাৎ সে খেয়াল করল একটা চিতা মধ্যাহ্নভোজের উদ্দেশ্যে তার দিকে ক্ষিপ্রবেগে ছুটে আসছে।
কুকুরটা নিজের মনে মনে ভাবল “মহা বিপদে পড়লাম দেখি!”
তারপর সে খেয়াল করল পাশেই মাটির উপর কিছু হাড় পরে আছে। তৎক্ষনাৎ সে হাড়গুলোর কাছে গেল এবং তার দিকে আসা চিতার দিকে পিছন ফিরে হাড়গুলো চিবোতে শুরু করল। ঠিক যখন চিতাটা লাফ দিয়ে তাকে ধরার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ঠিক তখনি কুকুরটা জোড়ালো কন্ঠে বলা শুরু করল-
“চিতাটা তো খুব-ই মুখরুচক, মনে হয় এদিকে আশেপাশে খুজলে এরকম আরও পাওয়া যাবে। ”
বলার সাথে সাথে সে একটা জোরালো ঢেকুর ছাড়লো।
এই কথা শোনার চিতাটা তার আক্রমনে দ্রুত বিরতি দিল, দেখে মনে হচ্ছিল যে তাকে ভীতি চেপে ধরেছে এবং সে আস্তে আস্তে লুকিয়ে গাছের আড়ালে সটকে পড়ল।
ভয়মাখা কন্ঠে চিতাটা মনে মনে বলে উঠল, “কুকুরটা খুব কাছাকাছি, এবং যে কোনো মূহুর্তে আমাকে পেয়ে যেতে পারে। ”
ঠিক এ সময়, একটা বানর কাছাকাছি কোনো গাছে বসে পুরো ব্যাপারটা প্রত্যক্ষ করছিল। সে চিন্তা করল যে, “এই পুরো ব্যাপারটা চিতাকে বুঝিয়ে বলতে পারলে চিতার সাথে বানর গুষ্টির সম্পর্কটা আরও মজবুত হবে, এবং তাদের জাতিকে রক্ষার জন্য চিতার সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন বেশ জরুরী। ”
যেই চিন্তা সেই কাজ;
এদিকে, কুকুরটা শুধু দেখল যে বানরটা খুব দ্রুতবেগে চিতার দিকে ছুটে যাচ্ছে, এবং সাথে সাথে সে বুঝতে পারল নিশ্চয়ই কিছু হতে চলেছে। বানরটি খুব দ্রুতই চিতার কাছে পৌছে গেল, এবং নিজের নিরাপত্তার আশায় সে পুরো ঘটনাটি চিতাকে খুলে বলল।
নিজের এই বোকামি বুঝতে পেরে বাঘটি ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে বানরটিকে বলল-
“তবে তাই যদি ঠিক হয় তবে আমার পিঠে চড়ে বস, দেখ আমি কিভাবে বজ্জাত কুকুরটিকে কিভাবে শায়েস্তা করি। ”
তখন কুকুর দেখল চিতা তার পিঠে বানরকে নিয়ে কাছে আসছে। সে মনে মনে ভাবছিল “প্রাণপনে দৌড়ানো বাদে আমার এখন আর কি করার আছে?”
তবুও কুকুরটি আক্রমনকারীদের দিকে পেছন ফিরে বসে এমন ভাব ধরল যে সে তখনও তাদেরকে দেখতে পায় নি। এবং যখন তারা কুকুরের কথা শোনার মত কাছাকাছি চলে এসেছে ঠিক তখনি কুকুর বিরক্তভরা কন্ঠে বলে উঠল “বজ্জাত বানরটা কই গেল!!! আমি ওকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারি না। আধ ঘন্টা হল ওকে আরেকটা চিতা(ভুলিয়ে-ভালিয়ে) আনতে পাঠালাম, এবং এখন পর্যন্ত সে ফিরে আসেনি।
”
এটা শোনার পর চিতা নিজের প্রাণের নিরাপত্তার কথা ভেবে ছুটে পালাল।
গল্পের নীতিকথাঃ
কঠিন চাপের মুখে কখনও আতঙ্কিত হবেন না- টেনশন নেবার জন্য নয়, বরং একে কৌশলে ফিরিয়ে দেবার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
গল্পটি অনুবাদ করা, তাই আমার ধারণা মূল গল্পের অনেকখানি রস এখানে ম্লান হয়ে এসেছে। আপনাদের ও যদি মূল গল্পটি পড়ার ইচ্ছে হয় তবে নিচের লিঙ্ক এ ক্লিকান। অনুবাদের ব্যাপারে যেকোনো সাজেশান গ্রহণ করে গল্পটি পরিমার্যিত করার ইচ্ছা আমার আছে।
তাই আপনাদের সহযোগীতা কামনা করছি। আর হ্যা, কাজটা কেমন হল জানাতে ভুলবেন না।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।