রেলষ্টেশনে একদিন ট্রেইন এ উঠার জন্য অপেক্ষা করছি। অপেক্ষা করতে করতে সময় কাটছিলোনা। প্লাট ফর্মের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত হাটাহাটি করছি। সামনে এটা মজমা বসেছে। সেখানে গেলাম দেখি সাপের খেলা।
একভদ্রলোক বলল আজ কোন ওষধ বিক্রি করবনা। আজকে গোপালভারের একটা গল্প শুনাব। একদিন গোপালভার অভাবরোধ করতে একদেশে পাড়ি দিলেন। সে একদিন রাজার সভাতে পান্ডিত্য ফলাতে গেলেন। ব্যাপারটা ছিলো মেয়ে মানুষ বেশী বুদ্ধিবান নাকি ছেলে মানুষ।
গোপাল হঠাৎ বলে ফেলল মেয়ে মানুষ বেশী বুদ্ধিবান যেই কথা সেই রাজা বলল গোপাল তুমি যদি এইটা প্রমান করতে না পার তাহলে তোমার মুন্ড কেটে নেওয়া হবে। গোপাল মহাবিপদে পরল। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই তা প্রমান করতে হবে। গোপালভার বাড়ীতে এসে তার বিছানায় বেশ চিন্তিত হয়ে বসে আছেন। বউ এসে বলল কি হলো পন্ডিত আজ যে তুমি বেশ চুপচাপ? গোপালভার রেগে উঠে বলল তুমি এখন কথা বলনা আমার মেজাজ ভালনা আরও অনেক কথা বলে বসল।
পাশের ঘর থেকে তার শালিকা ঘর থেকে বের হয়ে এলো। এসে বলল কি হয়েছে দাদা বাবু আমাকে বল। অনেক রাগ তারপরও রাগটা দমিয়ে বলল,আরে আজ রাজদরবারে একটা বিষয়ে নিয়ে মতামত নিচ্ছিল হঠাৎ বলে ফেললাম মেয়েদের বুদ্ধি বেশী। সবাই বলল ছেলেদের আর আমি সালা হতছড়া বলে ফেললুম মেয়ে। এখন এটা প্রমান না করতে পারলে তোর দাদাবাবু আর নেই।
শালিকা বলল তুমি ঠিকই বলছ। এতে চিন্তা করছ কেন তুমি আনন্দ করবে কারন রাজার নিকট বেশ পুরস্কার পাবে। গোপালভার বলল জীবন-মরণ নিয়ে ঠাট্টা করনা। শালিকা না দাদাবাবু আমি ঠাট্টা করছিনা। গোপালভার বলল তাহলে কেমন করে প্রমান করব ? শালিকা বলল সেই প্রমান আমি দিবো শুন,কানে কানে কিযেন বলল।
গোপালভার বেশ উৎফুল্ল মনে হা হা করে হেসে উঠল। একটা কথার উত্তর দাও হে দাদাবাবু রাজদরবারে মাইনে কত তারিখে দেয়? গোপালভার বলল কেন ১লা তারিখে! শালিকা ও তাহলে বেশ মজা হবে আগামিকালই মাইনে দিবে আর আগামিকালই প্রমানের কাজ শুরু হবে। জৈষ্টের তরতাজা রোদের রাস্তা, পাশে একটা বটগাছ। বটগাছ এর নীচে শালিকা বেশ সাজপোশাকে বসে আছে। রাজদরবারের প্রহরী আসছে।
প্রহরী একা একটা মেয়ে মানুষ দেখে নিজেকে সামলাতে পারলনা,প্রহরী বলল কে হে সুন্দরী এই ভরদুপুরে উহ্ কি অপরুপ তোমার রুপ! শালিকা বলল হাঁ তুমি যদি আমার নাচ গান আরও অনেক------ চাও তাহলে তুমি আমার রঙ্গমহলে আসো। কোথায় তোমার সেই রঙ্গমহল,এর আগে কখনও শুনেছি বলে মনে হয়না। হঁ সবে শুরু দেরী করনা ঠিক ৬ টায় আসবে। প্রহরী না না আমি অবশ্যই আসব। সন্ধা হওয়ার আগেই প্রহরী হাজির।
শালিকা দরজা খুলে স্বাগত জানালেন তারপর ভিতরে গেলেন। শালিকা বলল বাবু এখানে চুপচাপ বসে থাকেন। আমি পোশাকটা বদলে আসি। ঠিক ৬.৩০ টায় একজন দরজায় নক করল। শালিকা এসে দরজা খুলতে এলো,প্রহরী দারিয়ে বলল, এই আরও কেউ আসছে নাকি? শালিকা বলল হাঁ এখন সেনাপতি আসবে কোন সমস্যা? প্রহরী বলল কোন সমস্য মানে ওনি দেখলে আমাকে আস্ত রাখবে? শালিকা তাহলে এখন কি হবে? প্রহরী : আমি জানিনা তুমি আমাকে রক্ষা কর।
শালিকা:তাহলে আমি যা বলব তা তুমি মনদিয়ে শুন! প্রহরী : কিকরব বল,যা বলবে তাতেই আমি রাজী। শালিকা: তোমার সব কাপড় খুলে ঐ ড্রামে ডুব দাও। বলতে বলতে সব খুলে প্রহরী নগ্ন হলো এবং ড্রামে ডুব দিলেন। তারপর ওর মাথার উপর একটা বাতি দিয়ে একটা লন্ঠন বানিয়ে ঘরের একপাশে রেখে দিলেন। এরপর সেনাপতি ঘরে প্রবেশ করল।
ঘরের ভিতর এসেই সে বলল সুন্দলী এই দিকে এসো। আসছি বাবু বলে শালিকা কাছে এলো। সেনাপতি বলল এইটা কি?শালিকা বাবু গতবার লন্ডন গিয়েছুলুম আসার সময় মার্কেটে এই লন্ঠনটা পেয়ে গেলাম। বাবু এটা পছন্দ হয়েছে? সেনাপতি পছন্দ মানে আলবদ ওকে। আমি এই লন্টনটি নিয়ে যাব।
প্রহরী ভিষন ভয় পেল। এরপর ৭টায় আবার দরজায় নক করল। সেনাপতি বলল কে আবার এলো আরও কেউ আসে নাকি? হঁ বাবু মন্ত্রী আসবে। কি বল আমার চাকুরী খাবে নাকি? না বাবু কি বলেন,সমস্যা কি? সেনাপতি তুমি বুঝবেনা,তুমি আমাকে বের করার ব্যবস্থা করে দাও। শালিকা : বাবু একটা বুদ্ধি দিতে পারি আপনি নগ্ন হয়ে ঐযে খালী ড্রামটা আছেনা ওখানে ডুব দেন।
তারপর ব্যবস্থা করছি। সেনাপতি তাই করল। শালিকা সেনাপতিকে একটা ভেড়া বানিয়ে ঘরের লন্টনের পাশে রাখল। প্রহরী মনে মনে বেশ খুশি হলো মনে মনে বলছে বেটা পাজি আমাকে তার বাড়ী নিবে এই মজা দেখ। মন্ত্রী এলো,মন্ত্রী ঘরের সাজানো জিনিসগুলো দেখছে।
তারপর একটার পর একটা প্রশ্ন করছে। মন্ত্রী ভেড়াটি দেখে বলল এটা কি এটা আমার খুবই পছন্দ। শালিকা এটা অষ্টেলিয়ান দুই পায়া ভেড়া। ওহ্ বেশ পচন্দের ভেড়া দেখি এইটা তো কখনও খাওয়া হয়নাই। এটা আমাকে দিবে আমি বাড়ি নিয়ে যাব।
শালিকা ; বাবু নিয়ে যাইয়েন আমার কোন আপত্তি নেই। সেনাপতি মনে বেশ ভয় পেল। কিছুক্ষন পর আবার দরজা নক করল। মন্ত্রি বলল আবার কে? শালিকা : বাবু রাজামহাশয় এসেছেন। মন্ত্রী বলল কি বল রাজা এখানে আসবে আমাকে আগে কেন বলনাই আমি তাহলে কি আসতাম? বাবু সেইটা তো আমি জানিনা তবে আপনি যখন এসেছেন তখন একটা পথ আছে আপনি নগ্ন হোন এবং ঐ ড্রামে একটা ডুব দেন।
হা মন্ত্রীও তাই করলেন। তারপর তাকে একটা সোফা বানিয়ে রাখল। রাজা এলো। রাজাকে সব দেখিয়ে নিলেন রাজা বেশ খুশি হলেন। শালিকা : রাজাবাবু আমি একটু পোশাকটা বদল করে আসি।
যদি লাইট অফ হয়ে যায় তবে এই দেখছেন লন্ঠন এটাতে নীচে হেন্ডেল আছে,এটাতে পাক দিলে আবার তৈল উঠবে। রাজা ঠিক আছে তবে কোমার ঘরের সব চিনিস কিন্তি আমি নিয়ে যাব। ঠিক আছে বাবু! রাজা সোফাতে বসতেই মন্ত্রী রাজার ওয়েটে বায় ছাড়লেন! রাজা কিসের শব্দ? শালিকা : না বাবু নতুন জিনিসতো তাই একটু শব্দ হলো এটা ব্যাপার নয়। তারপর গোপালভারের শালিকা অন্য ঘরে প্রবেশ করল। বেশ সময় হলো কোন খবর নেই নর্তকীর (শালিকার)।
লন্ঠন নিভু নিভু । রাজা তারপর লন্ঠনের ঝুলন্ত হ্যান্ডেলটি ধরে জোরে জোরে পাক দিতে লাগল। হঠাৎ দেখে রাজার হাতে তৈল পরল। রাজা ভাবল লন্ঠনটি কি ফুটো হয়ে গেল? আবার শেষ চেষ্টা করতে গিয়ে প্রহরী চিৎকার দিয়ে বলল, হুজুর আমি আপনার প্রহরী আমাকে ক্ষমা করুন। ভেড়া দেখছেন এটা সেনাপতি,সোফা আপনার মন্ত্রী এই সব নর্তকী করেছে।
রাজা হতবাক একি হলো একটা মেয়ের কাছে পরাজিত হলাম! সকাল বেলা গোপালভার এসে রাজাকে মেয়ে মানূষের বুদ্ধি বেশী প্রমান করে শ্রেষ্ট পুরস্কার নিলেন।
গল্পটি কমসময়ের জন্য ছোট্ট করা হয়েছে। কোন ক্রুটি থাকলে মার্জনার চোখে দেখবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।