চট্টগ্রাম নগরের মোমিন রোডের কদমমোবারক এতিমখানার পাশে বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা গতকাল রোববার রাতে ‘স্পিক এশিয়া’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে আটক করেছেন। আটক ওই কর্মকর্তা কখনো নিজেকে ইয়াসিন আরাফত আবার কখনো এম এ আজিজ ওরফে রাজু বলে পরিচয় দেন। পরে পুলিশ তাঁকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে যায়। নিজেদের জমার টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না—এমন আশঙ্কা থেকে তাঁকে বিনিয়োগকারীরা আটক করেন।
জানা গেছে, রাজু ও তাঁর কিছু সহযোগী স্পিক এশিয়া নামের ইন্টারনেটভিত্তিক জরিপ প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নগদ টাকা সংগ্রহ করছিলেন।
ইন্টারনেটে কিছু প্রশ্নমালার উত্তর দেওয়ার বিনিময়ে সপ্তাহে জনপ্রতি ২০ মার্কিন ডলার দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাঁরা প্রতিটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য জনপ্রতি এক হাজার ৬৫০ টাকা নিচ্ছিল। ইন্টারনেটে লেনদেনের কারণে তাঁরা কোথাও কোনো কার্যালয় খোলেননি। আমানতকারীরা আজিজকে বেশি চিনতেন বলে জানা যায়। মোমিন রোড়ে ‘মা পলিকন লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ নিয়ে বসে তিনি বিনিয়োগকারীদের টাকা জমা নিতেন বলে জানা যায়।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, চার মাস ধরে অনেকেই জমা করা ডলার আর নগদায়ন করতে পারছিলেন না।
তাঁরাই রাজুর খোঁজ পেয়ে তাঁকে পাকড়াও করেন।
আজিজ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘আমাকে কেউ ঘেরাও করেননি, সবাই প্রতিষ্ঠানের নতুন কার্যালয় কখন খুলবে, তা জানতে এসেছেন। ’ বিনিয়োগকারীদের কত টাকা স্পিক এশিয়ায় জমা হয়েছে, তার জবাব দেননি তিনি। তিনি দাবি করেন, ‘আমাদের ব্যবসা আছে। সেই ব্যবসায় টাকা খাটিয়ে বিনিয়োগকারীদের লাভ দেওয়া হবে।
আমাদের মূল ব্যবসা সফটওয়্যার। ’
জানা যায়, মোমিন রোডের কদমমোবারক মার্কেটে মা পলিকন লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বসে গোপনে ব্যবসা পরিচালনা করতেন আজিজ। বিনিয়োগকারীরা এই খবর পেয়ে গতকাল তাঁকে পাকড়াও করেন।
স্পিক এশিয়ার গ্রাহক ও এমইএস কলেজের ছাত্র মোহাম্মদ হাসান অভিযোগ করেন, ‘আজিজের কথামতো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিই দুই মাস আগে। আমাদের এলাকার বড় ভাইদের মাধ্যমে এখানে টাকা দেওয়া শুরু করি।
কিন্তু দুই মাসেও দেখি কিস্তি আসছে না। শুরুতে তিনি ডলার কেনার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন কিনছেন না। আটক করার পর তিনি আমাদের প্রতিশ্রুতি দেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই লেনদেন শুরু হবে। কিন্তু আমরা তাতে আশ্বস্ত হতে পারছি না। তাই বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত চাই।
’
কোতোয়ালি থানা পুলিশের টহল দলের সদস্য উপপরিদর্শক (এসআই) সন্তোষ কুমার চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইয়াসিন ওরফে আজিজকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। গ্রাহকদেরও সেখানে আসার পরামর্শ দিয়েছি। ’
উপস্থিত একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করেন, ‘আজিজ ২০০৩ সালে চট্টগ্রামে সেভ প্রাইভেট লিমিটেড নামে আরেকটি কোম্পানি খুলে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে যান। সাত বছরে অনেকে তাঁর নাম ভুলে যান। কিন্তু আমরা তাঁকে চিনে ফেলেছি।
তাই এখন বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত চাই। ’
সূত্রঃ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।