আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্যতম ইকোনোমিক জোন হতে পারে যশোর _স্থানীয় চাহিদার দ্বিগুণ উৎপাদন হয় খাদ্য



সবজি, ফুল, ধান ও মাছখ্যাত যশোর হতে পারে দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক জোন। চাষের সঙ্গে জড়িতরা আধুনিক জ্ঞান, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, ঋণ সহায়তা ও পরিকল্পিত বাজারজাতের সুযোগ পেলে দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল করতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে এ অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে গড়ে ওঠা শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সচল রাখার প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে যশোরকে একটি ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। যশোরের ২৪ লাখ জনগোষ্ঠীর ১০ লাখ সরাসরি কৃষি ও কৃষি পণ্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

বেসরকারি হিসাবে এখানকার চাষিরা বছরে ৩ হাজার কোটি টাকার খাদ্য শস্য ও ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার সবজি উৎপাদন করে। কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী জেলায় আবাদযোগ্য প্রায় দুই লাখ হেক্টর জমি থেকে বছরে খাদ্য উৎপাদন হয় ৯ লাখ ৮৮ হাজার টন। শাক-সবজি চাষের জমির পরিমাণ ২৫ হাজার হেক্টর। শাক-সবজি উৎপাদিত হয় ৫ লাখ ৫০ হাজার টন। এখানকার খাদ্য চাহিদা ৪ লাখ ৫৭ হাজার টন।

বাকি খাদ্য থাকে উদ্বৃত্ত। একইভাবে মাছ চাষে দেশের ৭০ ভাগ রেণু উৎপাদিত হয় এ জেলায়। জেলা মৎসচাষি সমিতির হিসাবে বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার পোনা লেনদেন হয়। এছাড়াও প্রায় ২০০ কোটি টাকার হিমায়িত মাছ বিদেশে রপ্তানি হয়। মৎস্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, জেলায় মাছের চাহিদা ৩৭ হাজার টন।

উৎপাদিত হয় ৫৩ হাজার টন। বর্তমানে চাষের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত ফুল। দেশে উৎপাদিত ফুলের ৮০ শতাংশ উৎপাদিত হয় এ জেলায়। ফুল চাষি সমিতির হিসাবে বছরে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হচ্ছে; কিন্তু এখনো পর্যন্ত ফুল প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। এক সময় যশোর পরিচিতি পেতো শিল্প শহর হিসাবে।

'৮০'র দশকেও বইপত্রে পড়ানো হতো 'যশোর হাড়ের তৈরি চিরুনির জন্য বিখ্যাত'; কিন্তু এ অঞ্চলের অধিকাংশ শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবস্থা বেহাল। ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় মিলিয়ে কতগুলো শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান সরকারি কোন সংস্থার কাছে নেই। তবে বিসিকের একটি সূত্র জানিয়েছে, জেলায় ১২ হাজার ২৮৯টি শিল্প কারখানা রয়েছে। ভারী শিল্প রয়েছে ৮টি। এরমধ্যে ৩টি রাষ্ট্রীয়।

মাঝারি শিল্প কারখানা ৩০টি। তবে এই শিল্প কারখানাগুলোতে সবচেয়ে দুরবস্থা বিরাজ করছে। বিসিকের হিসাবে '৬০ ও '৮০'র দশকে গড়ে ওঠা ৩০টি সিমেন্ট ও টেক্সটাইল কারখানা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। '৯০'র দশকে স্থাপিত ১২টি সিমেন্ট কারখানার ১১টিই ক্লিংকার সংকটে এখন বন্ধ। জেলায় প্রায় ৫০০ অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ রয়েছে।

এগুলোর মধ্যে ২৫টিতে সব ধরনের বাসের বডি তৈরি হয়। বাকিগুলোতে ধানকল, মিকচার মেশিন, খোয়াভাঙ্গা মেশিন ও কৃষি যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে। অতীতেও যশোরের ছিল অর্থনৈতিক খ্যাতি। সতীশ চন্দ্র মিত্রের যশোর-খুলনার ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৮৯ সালে জেলায় প্রায় ২৪ হাজার মণ তুলা উৎপাদিত হত। ১৭৯১ সালে এখান থেকে ৯ লাখ মণ চাল রপ্তানি হত।

১৮৫০ সালে ১৭ হাজার মণ নীল উৎপাদিত হয়েছিল। ১৯০০ সালে ভারত বর্ষে ২১ লাখ মণ চিনি উৎপাদিত হয়েছিল। এরমধ্যে যশোরের কারখানাগুলো থেকে উৎপাদিত হয়েছিল ১৭ লাখ মণ। (হাবিবুর রহমান রিপন)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.