''প্রভু, ভুল ভেঙ্গে দাও; যে ভুলে তোমারে ভুলি, হিরা ফেলে কাচ তুলি, আমার সেই ভুল তুমি ভেঙ্গে দাও প্রভু। '' ১. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা ধারণা থেকে বেঁচে থাক। কারণ ধারণা হচ্ছে নিকৃষ্টতম মিথ্যা। তোমরা আঁড়ি পেতো না, গোপন দোষ অন্বেষণ করো না, স্বার্থের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ো না, হিংসা করো না, বিদ্বেষ পোষণ করো না, সম্পর্কচ্ছেদ করো না, পরস্পর কথাবার্তা বন্ধ করো না, একে অপর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিও না, দাম-দস্ত্তরে প্রতারণা করো না এবং নিজের ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের মাঝে ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা করো না। হে আল্লাহর বান্দারা! আল্লাহ যেমন আদেশ করেছেন, সবাই তোমরা আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও।
’-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫১৪৩, ৬০৬৪, ৬০৬৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৫৬৩/২৮, ২৯, ৩০ ও ২৫৬৪/৩২, ৩৩
২. আবু বারযা আলআসলামী রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ওহে যারা মুখে মুখে ঈমান এনেছ, কিন্তু ঈমান তাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি তারা শোন, মুসলমানের গীবত করো না এবং তাদের দোষত্রুটি অন্বেষণ করো না। কারণ যে তাদের দোষ খুঁজবে স্বয়ং আল্লাহ তার দোষ খুঁজবেন। আর আল্লাহ যার দোষ খুঁজবেন তাকে তার নিজের ঘরে লাঞ্ছিত করবেন। ’-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৯৭৭৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪৮৮০
৩. মুসলিম সে, যার মুখ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ১০
ইমাম নববী রাহ. এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন-
فيه جمل من العلم، ففيه الحث على الكف عما يؤذي المسلمين، بقول أو فعل، بمباشرة أو سبب، وفيه الحث على الإمساك عن احتقارهم، وفيه الحث على تألُّف قلوب المسلمين واجتماع كلمتهم، واستجلاب ما يُحصّل ذلك. قال القاضي عياض : والألفة إحدى فرائض الدين وأركان الشريعة، ونظام شَمْل الإسلام.
‘‘এ হাদীসে রয়েছে অনেক ইলম : যেমন-নিজের কথা বা কাজের মাধ্যমে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো মুসলিমকে কষ্ট না দেওয়ার আদেশ, কোনো মুসলিমকে উপহাস ও তাচ্ছিল্য না করার আদেশ, মুসলমানদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠার এবং এর জন্য সহায়ক সকল পন্থা অবলম্বনের আদেশ ইত্যাদি।
কাযী ইয়ায রাহ. বলেছেন, ‘সম্প্রীতি দ্বীনের অন্যতম ফরয, শরীয়তের অন্যতম রোকন এবং বৈচিত্রে পূর্ণ মুসলিমসমাজকে একতাবদ্ধ করার উপায়’। ’’-শরহু সহীহ মুসলিম ২/১০, বৈরুত
এই সকল হাদীসে যে হকগুলো বর্ণিত হয়েছে তা মুসলমানের সাধারণ হক। তা পাওয়ার জন্য মুমিন ও মুসলিম হওয়া ছাড়া আর কোনো শর্ত নেই। সুতরাং দুজন মুসলিমের মাঝে বা দুই দল মুসলমানের মাঝে কোনো দ্বীনী বা দুনিয়াবী বিষয়ে মতভেদ হলে সেখানেও এ সকল হক রক্ষা করতে হবে এবং শরীয়তের এ সকল বিধান মেনে চলতে হবে।
কোনো হাদীসে বলা হয়নি যে, দুই মুসলিমের মাঝে মতভেদ হলে তখন আর এ সকল হক রক্ষা করতে হবে না; বরং সেটিই তো আসল ক্ষেত্র এই হকগুলো রক্ষা করার।
সাধারণত মতপার্থক্য দেখা দিলেই এই হকগুলো বিনষ্ট করা হয়। সুতরাং ঐ ক্ষেত্রেই যদি সকলে তা রক্ষায় সতর্ক না হয় তাহলে আর সুন্নাহর অনুসরণ এবং হাদীস মোতাবেক আমলের কী অর্থ থাকে?
লেখাটি মাসিক আল কাউসার এর একটি প্রবন্ধের সামান্য অংশ। কপি পেষ্ট করা হয়েছে এখান থেকেঃ http://www.alkawsar.com/article/590' target='_blank' >মাসিক আল কাউসার । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।