এই ব্লগে জামাত-শিবির শুয়োরের বাচ্চারা ভুলেও নাক ডুবানোর চেষ্টা করবি না
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে সাক্ষ্যপ্রমাণ প্রতিষ্ঠার অন্যতম ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছিল একটি ভিডিও টেপ। যাতে ধারণ করা ছিল আত্মস্বীকৃত দুই খুনি ফারুক আর রশিদের নিজেদের জবানিতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বর্ণনা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার হাতে সেই ভিডিও টেপটি পৌঁছানোর পরই ঘুরে যায় মামলার মোড়। ১৯৮৩ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এটি কপি করে রেখেছিলেন ভিডিও ব্যবসায়ী বখতিয়ার হোসেন। লন্ডনভিত্তিক গ্রানাডা টেলিভিশনের জন্য পলাতক খুনিদের ওই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাস।
১৯৯৮ সালে ঢাকা জেলা জজ গোলাম রসুলের আদালতে যখন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম চলছিল তখন কোনো কোনো সাক্ষীর বক্তব্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল খুনিদের স্বীকারোক্তিমূলক একটি সাক্ষাৎকার। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে যাদের হাতে খুন হয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, প্রথম সুযোগেই খুনিদের সেই কৃতকর্মের জবানি নির্লিপ্ত দম্ভোক্তিরূপেই ধরা পড়েছিলো খ্যাতিমান সাংবাদিক ম্যাসকারেনহাসের নেয়া সাক্ষাৎকারে। সেখানে উঠে আসে হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর সব ইতিহাস।
১৯৮৩ সালে হঠাৎ করেই একদিন বখতিয়ার হোসেনের ভিডিও দোকানে এই সাক্ষাৎকারের ভিডিও টেপটি কপি করাতে যান সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা। আর ক্যাসেটটি চালু করতেই চমকে ওঠেন তিনি।
ঘামতে থাকেন বখতিয়ার। তার সামনে নিশ্চল ভাবলেশহীন দাঁড়ানো কর্নেল ফারুক। ভিডিওতে চলছে তার নিজমুখে ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা।
দেশ টিভিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বখতিয়ার বলেন, “ইন্টারভিউ আছে। ইন্টারভিউতে কর্নেল ফারুক, রশিদের নাম লেখা।
অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাস সাক্ষাৎকারটা নিচ্ছে। সেখানে তারা সেলফ কনফেশনের মতো নিজেরাই বলছে, ‘আমার বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছি। কি কারণে করলাম, তারপরে করার আগে আমরা জিয়াউর রহমানের সাথে আলাপ করেছি, জিয়াউর রহমান কি বললো, মোশতাকের সাথে আলাপ করলাম, মোশতাক কি বললো। ”
তবে এর মধ্যেই ফারুকের চোখকে ফাঁকি দিয়ে নিজের কাছে ওই ভিডিওর আরও একটি কপি রেখে দেন বখতিয়ার।
২১ বছর পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের গ্লানি ঘুঁচে গেলে ১৯৯৬ সালে দায়ের করা হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা।
শুরু হয় বিচার কার্যক্রম। ধুলার আস্তরণ সরিয়ে বখতিয়ার বের করে আনেন ভিডিও টেপটি। দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় রিপোর্টের সূত্র ধরে তার দোকানে যান তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাহহার আখন্দ।
পরে সাক্ষ্য দিতে আদালতের সমন যায় তার কাছে। কিন্তু খবর জানাজানি হতেই বাড়িতে বোমা হামলার শিকার হন বখতিয়ার পরিবার।
টেলিফোনে আসে হত্যার হুমকি।
বখতিয়ার হোসেন বলেন, “সিআইডিতে তখন আব্দুল কাহহার আখন্দ সাহেব ছিল। তাকে বললাম জিনিসটা। সে সঙ্গে সঙ্গে চলে আসলো আমার দোকানে। দোকানে এসে সে বললো, দেখান তো জিনিসটা কি আছে? সে দেখে খুব অ্যাসটোনিশড হয়ে গেল।
বললো, ‘আপনার কাছে এই জিনিসটা আছে। এটা তো আমরা খুব খুঁজছি। ”
তদন্ত সংস্থার হাত ঘুরে আদালতে ওঠে ওই ভিডিও টেপ। বিচারক গোলাম রসুল দেখেন, শোনেন খুনি ফারুক-রশিদের ২২ মিনিটের সেই স্বীকারোক্তি।
তথ্যসূত্রঃ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।