এক লোক বাসের সিটে জায়গা না পেয়ে প্রায় ঝুলে বাড়ি ফিরছে। কিছু দূর যাওয়ার পর যখন আরও যাত্রী উঠল, তখন তার অবস্থা আরও নাজুক হয়ে গেল। চারদিক থেকে ধাক্কা, গুঁতো, ঠেলা এসে তাকে ভর্তা বানানোর পর্যায়ে নিয়ে গেল। লোকটা নিরুপায় হয়ে এক সময় পাশের লোকজনকে বলতে লাগল- ভাই, দয়া করেন। মনে রাখবেন জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর।
পাশ থেকে একজন বিরক্তি সহকারে বলে উঠল- এই মিয়া যেইখানে সেইখানে কবিতার ছন্দ কইয়েন না। জীবে প্রেম করার কথা বলা হইছে ঠিক। কিন্তু জীব বলতে যা বোঝায়, আপনে কি সেইটা? আপনে তো মিয়া জলজ্যান্ত একটা মানুষ। প্রায় ঝোলা লোকটা এবার অসহায় গলায় বলল- ভাইরে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মানুষই ছিলাম। কিন্তু এখন আর মানুষ নেই।
যেভাবে ঝুলে আছি, এভাবে ঝোলা কেবল বাদুড়ের পক্ষেই সম্ভব। আর বাদুড় তো জীব-ই, নাকি! পাঠক, ঈদের সময় বাড়ি ফিরতে গিয়ে আমরা সবাই বাদুড়ে রূপান্তরিত হয়ে যাই। বাসে ওঠার পর এই যে চাপাচাপি আর অশান্তি সহ্য করতে হয়, তাই বলে ভাড়া কিন্তু আপনার কাছ থেকে বেশি ছাড়া কম নেওয়া হবে না। এক লোককে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- আচ্ছা, ঈদে যেহেতু যাত্রী বেশি থাকে, এমনিতেই তো আপনারা বেশি টাকা পান। তাহলে ভাড়া বাড়ান কেন? ভদ্রলোকের সহাস্য জবাব- ভালোবাসা পরীক্ষার জন্য।
ঠেলাঠেলি আর অধিক ভাড়ার যন্ত্রণা সহ্য করেও যদি আপনি বাড়ি যেতে রাজি থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে পরিবারের লোকজনের প্রতি আপনার বিশাল ভালোবাসা আছে। কম ভাড়ায় সহজে চলে গেলে তো পরীক্ষাটা করা হলো না, তাই না? ভদ্রলোকের কথায় যুক্তির ছিটেফোঁটা আছে কি নেই সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে ঈদে আপনি স্থল কিংবা জল যে পথেই বাড়ি ফেরেন, আপনার লাইফ তেজপাতা হবেই। এত কাণ্ডকারখানা করে বাড়ি ফেরার পর খুব যে নাকে আওয়াজ তুলে স্বস্তিতে ঘুমুতে পারবেন, তাও কিন্তু না। কারণ ঢাকায় যে বাসা খালি ফেলে গেলেন, এই খালি বাসার চিন্তায় আপনি ঘুমুতে গিয়েও টেনশনে লাফিয়ে উঠবেন। তা যতই আপনি আপনার দরজায় বড় আকারের তালা ঝুলিয়ে যান না কেন।
এক লোক গ্রামে যাওয়ার আগে তার প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলছে- এই বছর দরজায় তালা দিয়ে গ্রামে যেতেও ভয় পাচ্ছি। কারণ গত বছর তালা ভেঙে ঘরের জিনিসপত্র চুরি করেছিল। প্রতিবেশী বলল_ আমি ভাবছি তালা না দিয়ে শুধু দরজাটা চাপিয়ে রেখে চলে যাব। লোকটা অবাক হলো- বলেন কী! তালা না দিলে চোর ঢুকবে না? প্রতিবেশী হেসে বলল- তালা দিলেও তো চোর ঢোকে। তালা না দিলে আর যাই হোক, তালাটা তো ভাঙবে না।
আমার দেড় শ টাকা বেঁচে যাবে। এমন সময় আরেক প্রতিবেশী বলল- এছাড়া তালা ভাঙতে গিয়ে চোরদের পরিশ্রম হয় বলে তারা বেশি জিনিস চুরি করে। তাদের এই পরিশ্রমটা না করালে আশা করা যায় তারা কম জিনিস চুরি করবে। আপনার বাসার গেটে দারোয়ান থাকলেই যে তারা চুরি ঠেকাতে পারবে তা কিন্তু না। তবে তারা যে কাজটা খুব নিখুঁতভাবে করতে পারে, সেটা হচ্ছে বকশিশ আদায়।
স্যার, ঈদ করতে বাড়ি যাইতাছেন। বকশিশ দিয়া যান। তাদের এমন আবেদন শুনে পকেটে হাত দেওয়া ছাড়া স্যারদের কিচ্ছু করার থাকে না। এ প্রসঙ্গে একটা কমন জোক। এক দারোয়ান তার স্যারের কাছে দুই হাজার টাকা বকশিশ চাইল।
স্যার বলল- এতো টাকা বকশিশ দেওয়া সম্ভব না। তবে বকশিশের অর্ধেক দিতে পারি। দারোয়ান খুশি হয়ে বলল_ বকশিশ চাইলাম দুই হাজার টাকা। বকশিশের অর্ধেক দেবেন, তার মানে এক হাজার দেবেন? স্যার বলল_ জি না। বকশিশের অর্ধেক দেব তার মানে হচ্ছে 'বক' না দিয়ে ঠোট ফুলিয়ে শুধু 'শিষ' দেব।
ঠিক আছে তো?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।