গ্রিক মিথোলজি নিয়ে একটা সিরিজ লেখার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলাম। আর ব্যস্ত ছিলাম অফিসের কাজে। ব্লগে গত এক সপ্তাহে ঠিক কি কি হয়েছে বিস্তারিত পারবো না। লগিন করা হয়নি, কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু পোস্ট পড়া হয়েছে। গত সপ্তাহে একটি স্টিকি পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম শুক্রবার ভারতের সীমান্ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন।
মনে মনে ঠিক করে ফেললাম, যাবো মানববন্ধনে। বৃহস্পতিবার অফিস থেকে ফিরে ব্লগ খুলেই ডানদিকের সাম্প্রতিক মন্তব্যের ঘরে একটি পোস্টের লিংক দেখে উঁকি মারলাম। সেটা ছিল ব্লগার ফিউশন ফাইভের একটি পোস্ট। সেটা পড়ে মোটামুটি কনভিন্সড হলাম যে, সাধারণ ব্লগারদের বিবেক এবং আবেগকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মানববন্ধনের ধারণাটি ছিনতাই হয়ে গেছে। আয়োজনের নেতৃত্ব দখল করেছে ছদ্মবেশী জামাত সমর্থকরা।
আর 'মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি' বলে পরিচিত ব্লগাররা ছিনতাই ঠেকাতে নিদারূনভাবে ব্যার্থ হয়েছে। স্টিকি পোস্টের লেখকের ব্লগে যেয়ে যে কাউন্টার পোস্ট দেখলাম, তা খুব একটা জোড়ালো কিছু বলে মনে হলো না।
তাৎক্ষণিকভাবে উপলব্ধি করলাম, সাধারণ ব্লগারদের অবস্থা এখন জলে বাঘ ডাঙায় কুমিরের মত। মানববন্ধন নিয়ে তিনধরণের পরিস্থিতি হতে পারতো।
১. যদি তথাকথিত আয়োজকদের পরিচয় না জানা যেত: সেক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্লগার সেখানে উপস্থিত থাকতো।
জামাত-শিবির হয়তো এটাকে তাদের কাজে ব্যবহার করতে চাইতো, কিন্তু মানববন্ধনের কোন রাজনৈতিক ব্যানার না থাকায় সেটা খুব একটা সফল হতো না। বরং পরে এই নিয়ে তারা প্রচার প্রচারণা চালালে সেটা প্রতারণা বলেই সাব্যস্ত হতো। কিন্তু জামাত সমর্থক মিডিয়ার পাঠক/দর্শকরা একটা ভ্রান্ত ধারণাই পেত।
২. আয়োজকদের পরিচয় জেনেও যদি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্লগার উপস্থিত হতো: সেক্ষেত্রে অবস্থা হতো প্রথম অবস্থার চেয়ে ভয়াবহ। ব্যানার না থাকা সত্ত্বেও ওটা তখন আন-অফিসিয়ালি জামাতের মানববন্ধন।
ব্লগে ব্লগে এবং ফেসবুকে জামাত শিবিরের প্রচারণা উঠতো তুঙ্গে। এখনো যে হচ্ছে না তা নয়, তবে লোকসমাগম কম হওয়ায় তাদের প্রচারণার উৎসাহ কম।
৩. আর সাধারণ ব্লগাররা মানববন্ধন বয়কট করলে কি ধরণের প্রতিক্রিয়া হতে পারে সেটাও আন্দাজ করা খুব একটা দুরূহ ছিল না। জামাত-শিবিরের তখন প্রচারণার বিষয় হবে, তারা কতটা দেশপ্রেমিক, আর জামাত-বিরোধীরা দেশের স্বার্থের ব্যাপারে কতটা উদাসীন তা উদাহরণসহ বর্ণনা করা। যেটা এই মূহুর্তে ব্লগে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সবকিছু বিবেচনা করে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। অবশ্য ব্যাক্তিগত ব্যস্ততার কারণে যাওয়াটা এমনিতেই দুরূহ ব্যাপার ছিল।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সাধারণ বেসামরিক লোক হত্যা চলছে বহুদিন ধরে। আমরা সাধারণ অরাজনৈতিক মানসিকতার ব্লগাররা সরকারে কোন দল/গোষ্ঠি রয়েছে তা বিবেচনা না করেই এর প্রতিবাদ চালিয়ে গিয়েছি। কারণ নিজের মনের তাগিদেই ব্লগিং করি, কারো সন্তুষ্টির তোয়াক্কা করি না।
কিন্তু রাজনৈতিক মানসিকতার ব্লগাররা ক্ষমতাসীন দলের সাথে তাদের সম্পর্ক বিবেচনা করেই প্রতিবাদ করে।
জামাতপন্থীদের কোন অধিকার নেই এই মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে সাধারণ ব্লগারদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলার। বাংলার সাধারণ মানুষ দেশপ্রেমের প্রমাণ '৭১ এই দিয়েছে। জামাতও দিয়েছে তাদের দেশ পাকিস্তানের প্রতি প্রেমের প্রমাণ। নতুন করে কারোই কিছু প্রমাণ করার নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।