Mahmood Khan
পর্দা অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিধান, যা আল্লাহ মুমিনদের ওপর ফরজ করেছেন। যে জিনিস যত বেশি দামি, সে জিনিস তত বেশি গোপন করে লোকের আড়ালে রাখতে হয়। নারীজাতি যেহেতু অন্যতম মূল্যবান নেয়ামত তাই তাদের সবচেয়ে মূল্যবান স্থানে একটা কিছুর আড়ালে রাখতে হয়। আল্লাহ তায়ালা নারীর সারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ লজ্জা স্থান হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তাদের মাথার চুল থেকে শুরু করে পায়ের তালু পর্যন্ত সর্বাঙ্গই অন্য পুরুষের থেকে আড়াল রাখতে হবে এবং সে নিজেও অন্য পুরুষের দিকে তাকাবে না।
আবার নারীদের দেয়া হয়েছে মায়ের মর্যাদা এবং তা বাবার থেকে তিনগুণ বেশি।
নারীর এ মর্যাদা রক্ষার লক্ষ্যে মহান আল্লাহপাক বলেন, ‘হে নবী! মুমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন নিজেদের চোখকে নিম্নগামী করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানগুলোর হেফাজত করে। এটা তাদের পক্ষে পবিত্রতম নীতি- যা তারা করে, আল্লাহ সে বিষয়ে পুরাপুরি অবহিত আছেন। ’ (সুরা নূর : আয়াত, ৩০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘মহিলাদের সারা অঙ্গই গোপন অঙ্গ।
যখন তারা কোথাও বের হয়, তখন শয়তান তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আরো সৌন্দর্যমন্ডিত করে দেয়।
’
ইসলামে পর্দার গুরুত্বের সঙ্গে সঙ্গে আবার যাদের সঙ্গে পর্দা করতে হবে না এবং যাদের বিয়ে করা নিষিদ্ধ এ সম্পর্কে কোরআনের বাণী-
তোমার জন্য (বিয়ে করা) হারাম তথা অবৈধ করা হয়েছে- তোমাদের মাতা, কন্যা (আপন) বোন, ভগ্নি, ফুফু, খালা, ভ্রাতৃকন্যা তথা ভাতিজি, ভগ্নি কন্যা তথা ভাগনি, তোমাদের সেই মা, যারা তোমাদের স্তন্য দান করেছে (অর্থাৎ দুধ মা), তোমাদের দুধ বোন, তোমাদের স্ত্রীর মা, তোমরা যাদের সঙ্গে সঙ্গম করেছ সেই স্ত্রীদের (গর্ভের মেয়ে) যারা তোমাদের সঙ্গে একইসঙ্গে বসবাস করছে; কিন্তু যদি তোমরা তাদের সঙ্গে সঙ্গম না করে থাক, তাহলে তাদের মেয়েদের বিয়ে করা তোমাদের জন্য কোনো অপরাধ নেই এবং ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীরা; তবে যা অতীত হয়ে গেছে। তাছাড়া দুই (আপন) বোনকে একত্রে বিয়ে করা (হারাম); নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
তাদের জন্য অপরাধ নেই যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের বহির্বাস খুলে রাখে; তবে এটা থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
এসব নিয়ম-নীতি মেনে পর্দার মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিধান সব মুমিনের পালন করা ফরজ।
পর্দার মাধ্যমে সে নারী পায় তার সঠিক অধিকার, পর্দাশীল নারী সর্বত্র সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হন, তাকে দেখে সবাই সম্মান প্রদর্শন করে, কখনো কেউ তার দিকে কুনজরে তাকায় না, শুধু তাই-ই নয়, পর্দাশীলা নারী যে ঘরে বউ হয়ে যায় সে ঘরে আল্লাহর রহমত থাকে, সেখানে থাকে অনাবিল সুখ-শান্তি। ঘরে অশান্তি সৃষ্টি হয় না। তাদের দু’জনের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয় না, পরকীয়া সৃষ্টি হয় না এবং কোনো নারী অস্বাভাবিক মৃত্যুর সম্মুখীন হয় না। সমাজেও প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তি।
পরিশেষে পর্দাশীল নর-নারী দুনিয়া ও আখেরাতে মহান আল্লাহতায়ালার অশেষ নেয়ামত ভোগ করে এবং তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যেখানে তারা চিরকাল ও অনন্তকাল বসবাস করবে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকরূপে পর্দা করে আমাদের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবন ধন্য করুন। (আমিন)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।