রুপ নারানের কুলে জেগে উঠিলাম, জানিলাম এ জগত স্বপ্ন নয়।
“জরুরী কাজে খুলনা যাইতে হপে। আইজকের মইদ্যে। উড়াল পাইরা যানগা। কুইক!”।
বসের এই কথা শুইনা ব্যাপক আমোদিত হইলাম। বিমান ভ্রমণ করলে কেমন লাগে তা মনে মনে কল্পনা করতে লাগলাম। সহকর্মীদের সাথে ব্যাপক ভাব নিয়া বললাম “ধুশ...ডিজগাসটিং! একটু কেনাকাটা করমু.........সেই সুযুগো নাই ”।
পেলেন তো খালি হারা জীবন মাথার উপ্রে দিয়া উইড়া যাইতে দেকছি। উঠি নাই কুনোদিন।
আয়-হায় না জানি বিতরে কেমুন লাগে। টিকেট কাটার পর থেকে কইলজার আদ্রতা কেমন জানি জ্যামিতিক হারে হ্রাস পাইতে লাগলো। এক বার ভাবলাম বস্রে গিয়া বলি- থাক বস বিমানে যাউনের কাম নাই, বাসেই যাইগা। বসের দরজা পন্ত গিয়া ফিরা আইলাম, সাহসে কুলাইলোনা। আবার আমারে বাদ দিয়া যুদি অন্য কাউরে এসাইন করে........... ডরও লাগে যাইতেও মুঞ্চায়।
ইয়া নফসি পড়তে পড়তে ইয়ারপুটে আইলাম। রিজেন্ট এয়ারের ইসর্মাট পূলাপান কইল একটু বসতে। ইট্টু পরে কইলো; আহেন আহেন, উঠেন উঠেন, লাইনে খাড়ান। আমি মনে করলাম বিমান বুজি আমারে থুইয়াই ছাইড়া গেল। ব্যাপক স্পিড নিয়া কাউন্টারে গেলাম।
টিকেট-টুকেট চেক-মেক কইরা বোর্ডিং পাস দিয়া কইলো ওই হানে বিতরে গিয়া ঝিম মাইরা বইসা থাকেন।
বিমানে উঠা নিয়া বন্ধুদের সাথে কেমনে ভাব ধরমু ঝিম ধইরা মনে মনে সেইটা ভাবতে লাগলাম। আর বিমানে উঠার খুশিতে হাসানরে মাফ কইরা দিলাম, হালায় গতকাইল সেহেরির সময় আমার বিড়ি চুরি কইরা খাইছিলো। যাহ শালা বিমানের কারণে বাইচা গেলি।
প্রথমে উঠলাম বিমানের বাসে।
উইঠাই তো মেজাক গরম হয়া গেলো। কাটলাম বিমানের টিকেট, উঠাইলো বাসে। শেষ পন্তনা আবার বাসেই যশোর যাইতে হয় কিনা কে জানে। বাংগালদের আমি ইট্টুও বিশ্বাস করিনা।
বিমানের দরজার মুখেই দেহি একটা ডানাছাড়া পরী।
রুজা হালকা হইবার পারে বইলা ইট্টু দেকছি। মনে করছিলাম জানালার পাশে সিট লমু। গিয়া দেখি আমার আগেই এক বুইরা জানালার পাশে বইসা আছে। খানিক পরে বিমান ছাড়লো.....গাড়ির মত খালি আস্তে মাটি দিয়া যায় আর যায়.......উড়াল দিবো কখন কে জানে। বিমান ছাড়ার আগে পাইলট স্যার পরাণ ভইরা আল্লাহরে ডাইকা নিলো।
আমাগরে থ্যাঙ্কু-ম্যাঙ্কু দিলো। কইলো ৮০০০ ফূট উপ্রে দিয়া উইড়া যামু তাড়াতাড়ি বেল্ট বান্দেন। আরে বলদ, আমি বাসা থেইকাই বেল্ট পইরা আইছি, হালার আবাল জানি কনেকার! আর তাছাড়া এত উপ্রে যে উটবি, নামতে পারবিতো।
বিমান তহন আকাশে। বেকুব পাইলট বিমান ঢুকায়া দিছে মেগের বিতরে দিয়া।
আরে বেকুব এহন যদি অপজিট ডিরেকশান থেইকা একটা প্লেন আসে তুইতো আগে মরবি, তাড়াতাড়ি ক্লিয়ার রাস্তায় যা। আর তাছাড়া মেগের বিতরে রাস্তা চিনবি কেমনে। কে শুনে কার কথা। বাস-বুস হইলো তাও লাফ মাইরা নামন যায়, বিমান থেইকা মনে হয় লাফ মারাটা ঠিক হবেনা।
বিমানের জানালা এত ছুটো ছুটো যে ভালো কইরা দেখাই যায়না।
আমার পাশের বুইরাটা জানালা পুরাটা দখল কইরা রাকছে। ওই শালা ছোটলুক মনে হয় জীবনে কুনোদিন বিমান দেখে নাই, ডিজগাস্টিং!
অবশেষে যশোর নামলাম, সেখান থেকে বাসে খুলনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।