>>>বৈশাখের ঐ রুদ্র ঝড়ে আকাশ যখন ভেঙ্গে পড়ে, ছেঁড়া পাল আরও ছিঁড়ে যায়...<<<
ঢাকা চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে ইতিমধ্যে ২০০ প্রাণী কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত এক বছরে বেশ কিছু প্রাণী মারা যাওয়ায় চিড়িয়াখানায় একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই শূন্যতা কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন প্রজাতির ২০০ প্রাণী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নতুন খাঁচা তৈরি ও পুরোনো খাঁচার আধুনিকায়ন শুরু হয়ে গেছে। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ১৮০টি প্রাণী রাখার খাঁচা রয়েছে।
এর মধ্যে ১০০টি খাঁচা আধা-প্রাকৃতিক (সেমি-ন্যাচারাল) ধাঁচের করে পুনর্নির্মাণ করা হবে। একই ধাঁচে নতুন ১০০টি খাঁচা তৈরি করা হবে।
যেসব প্রাণী নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে সেগুলো হলো, ১০টি চশমাপরা হনুমান, আটটি করে উট ও কালো বানর, ছয়টি করে ওয়াইল্ড বিস্ট, ডোরাকাটা হায়েনা, উল্লুক, গ্রেটার কুদু, জেব্রা, মেনড্রিল, আফ্রিকার বানর, পাঁচটি শিম্পাঞ্জি, চারটি করে জিরাফ, অ্যারাবিয়ান হর্স, ক্যাঙারু, সাদা বাঘ, টাপির, দুটি করে আফ্রিকার গন্ডার ও ভালুক, একটি ইম্পালা। এ ছাড়া পাখির মধ্যে দুটি ইমু, চারটি উটপাখি, ৩৫টি আফ্রিকার টিয়া, ১০টি কাকাতুয়া, ২০টি ককাটেইল, ৪০টি লাভ বার্ড, ৪০টি পিঙ্ক লাভ বার্ড, ২০টি গ্রে পার্টিস, ৪০টি মাছরাঙা, ১০টি স্ন্যাক বার্ড, আটটি ধনেশ, ২৫টি ফ্লেমিংগো, ১৫টি ম্যাকাও, নয়টি পেলিকন প্রভৃতি। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ৬০টি সাপ।
আর, গত ২১ থেকে ২৭ নভেম্বর নেপালের অবকাশকালীন শহর চিতোয়ানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর চিড়িয়াখানাগুলোর সংগঠন সাজার্কের দশম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে ছিলেন ঢাকা চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর। সেখানে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা বিনা মূল্যে ঢাকা চিড়িয়াখানায় প্রাণী দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে নেপাল দুটি গন্ডার ও পাকিস্তান চার-পাঁচটি বিরল সাদা বাঘ, শ্রীলঙ্কা বিভিন্ন প্রজাতির সাপ দিতে চেয়েছে। পাকিস্তানের চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রাণী বিনিময় করে আরও কিছু প্রাণী পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে চিড়িয়াখানায় এক হাজার ৬৬৩টি প্রাণী আছে।
বৃহৎ প্রাণী শাখায় ২২টি প্রজাতির ১৫৯টি, ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ শাখায় ৩৩টি প্রজাতির ২৩৯টি, পাখি শাখায় ৬১টি প্রজাতির এক হাজার ২১৭টি পাখি, মাংসাশী শাখায় ১০টি প্রজাতির ৪৮টি প্রাণী আছে। এ ছাড়া অ্যাকুরিয়ামে ২৬টি প্রজাতির ৪১৯টি মাছ আছে। গত বছর চিড়িয়াখানায় ৫৫টি প্রাণী মারা গেছে। সর্বশেষ গত ৭ ডিসেম্বর চিড়িয়াখানায় একটি বাঘের বাচ্চা মারা যায়। মৃত অন্য প্রাণীগুলো হলো একটি করে সিংহ, হাতি, মায়াহরিণ, ইম্পালা, চিতাবাঘ, নীলগাই, ভালুক ও বাঘের বাচ্চা, লাজুক বানর, বেবুন, ঘড়িয়াল, হনুমান, ধনেশ পাখি, দারাজ সাপ, খেঁকশিয়াল, ডাহুক, টিয়া, পাঁচটি করে চিত্রা হরিণ ও খরগোশ, চারটি বানর, তিনটি হীরামন পাখি, নয়টি মুনিয়া, দুটি করে অজগর, চন্দনা পাখি, কোবরা, ঘুঘু ও গিনিপিগ।
এত খারাপ খবরের মধ্যে সুখবর হলো, গত বছর চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রাণী ৯৩টি বাচ্চা দিয়েছে। এর মধ্যে জলহস্তী দুটি, মায়াহরিণ পাঁচটি, চিত্রা হরিণ ৩০টি, শজারু দুটি, সবুজ বানর, ইম্পালা, ইলান্ড, শাম্বার হরিণ একটি করে বাচ্চা দিয়েছে। আর রয়েল বেঙ্গল টাইগার প্রমীলা দুটি বাচ্চা দিলেও একটি মারা গেছে। একই সময় ময়ূরের ছয়টি, কুমিরের ২১টি, শকুনের দুটি, অজগরের ২০টি ডিম ফুটে বাচ্চা হয়েছে।
প্রায় ১১৪ কোটি টাকার ‘ঢাকা চিড়িয়াখানা আধুনিকায়ন প্রকল্প’ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষে আগামী অর্থবছরে প্রাণী কেনা শুরু হবে।
আর প্রকল্প অনুমোদনের পর প্রয়োজনে এতে সংযোজন-বিয়োজন করা হতে পারে।
[সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, ১৭/০১/২০১১]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।