আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্টুপিড জুয়ারীরা এভাবেই ধরা খেয়ে মর

যে জানেনা এবং জানে যে সে জানেনা সে সরল, তাকে শেখাও। যে জানেনা এবং জানেনা যে সে জানে না, সে বোকা-তাকে পরিত্যাগ কর।

শেয়ার বাজারে ধস। বিক্ষোভে উত্তাল বিনিয়োগকারীরা। গত কয়েকদিন ধরেই বিষয়টি নজরে রাখছি।

এ নিয়ে মন্তব্য করতেও ইচ্ছে হচ্ছে না। তারপরও ছোট করে ক্ষোভের কথা কিছু লিখলাম। আর্থিক বাজার মূলত দুই ধরনের। একটি মুদ্রা বাজার (ব্যাংক, বীমা, লিজিং কোম্পানি ইত্যাদি) আরেকটি শেয়ার বাজার। শেয়ার বাজারে শেয়ার লেনদেন হয়।

একটি দেশের বিভিন্ন কোম্পানি যারা শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত তাদের শেয়ার এই বাজারে বেচা-কেনা হয়। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির লাভজনকতা দেখে শেয়ার কিনবে। কিছুদিন ধরে রাখবে। সংশ্লিষ্ট অর্থ বছরে কোম্পানি লাভ করলে ঐ শেয়ারের দাম বাড়বে। বিনিয়োগকারীরা লাভের মাত্রা বুঝে শেয়ার ছেড়ে দিয়ে লাভ তুলে নেবে।

কিন্তু আমাদের দেশে শেয়ার বাজার মানে একটা জুয়ার আড্ডা। এখানে নানান কারসাজি হয়। কোটি কোটি টাকা নিয়ে এসে শেয়ার কেনার নামে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়। বড় বড় জুয়ারীরা এই জুয়া খেলার হোতা। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এতকিছু না বুঝে শেয়ার কিনতে থাকে।

শেয়ারের দাম যখন গগনচুম্বী হয়ে যায় তখন বড় বড় জুয়ারীরা বাজারে শেয়ার ছেড়ে দিয়ে সটকে পড়ে। আর সব ক্ষতি গিয়ে পড়ে ক্ষুদ্র জুয়ারীদের কাঁধে। ধরা যাক, এবিসি কোম্পানির ১০ টাকা মূল্যমানের মোট শেয়ার আছে ১ কোটি। অর্থাৎ ১০ কোটি টাকার শেয়ার বাজারে আছে। এখন কেউ জুয়া খেলতে চাইলে সে (কোম্পানির দালাল জুয়ারী) ১০ কোটি টাকা নিয়ে বাজারে নামল।

২০ টাকা করে সে ৫০ লাখ শেয়ার কিনে ফেলল। আর বাকি থাকে ৫০ লাখ শেয়ার। বিভিন্ন ব্যাংক এবং লিজিং কোম্পানির মালিক জুয়ারীরাও এই জুয়ায় অংশগ্রহণ করে। সাধারণ জুয়ারীরা দেখছে বাজারে এবিসি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে। তারা কোন কিছু বিবেচনা না করে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবিসি কোম্পানির শেয়ার কিনতে।

বাজারে শেয়ারের সংকট দেখা দেয়। শেয়ারের দাম আরও বেড়ে যায়। কি কারণে শেয়ারের দাম বাড়ছে কেউই বিবেচনা করে না। ১০ টাকার শেয়ার ১০০ টাকা ২০০ টাকা ১০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে যায়। এত দাম বাড়ার কারণ কি কারও ভাবনার মধ্যেই তা আসে না।

বড় জুয়ারী, মাঝারি জুয়ারী সবাই এসে বাজার সরগরম করে তোলে। ঐ সুযোগে এবিসি কোম্পানির দালালরা ৫০ লাখ শেয়ার ছেড়ে দিয়ে বাজার থেকে সটকে পড়ে। মাঝারি জুয়ারীরাও তাদের লাভ নিয়ে বাজার থেকে সরে যায়। ধরা খায় স্টুপিড ছোট জুয়ারীরা। শেয়ারের দাম কখন বাড়বে? কোম্পানি লাভজনক হলে, আর্থিক বুনিয়াদ মজবুত হলে, লভ্যাংশ ঘোষণা করলে তখনই না শেয়ারের দাম বাড়া উচিত।

আমাদের দেশের যে সব কোম্পানি শেয়ার বাজারে আছে তাদের কয়টি উৎপাদনমুখী? তারা সবাইতো ফাটকা কারবারী। এই বিষয়টি কি সাধারণ জুয়ারীদের জানা আছে? না জেনে তারা বিনিয়োগ করে কেন? আর জুয়া খেলতে গিয়ে হেরে গেলে কেন গাড়ি ভাংচুর করা হয়? কেন ক্ষোভে-বিক্ষোভে উত্তাল হয় রাজপথ? আরও অনেক কিছু বলা যায় এই জুয়া খেলা নিয়ে। কিন্তু সাধারণ জুয়ারীরা এই বিষয়গুলি বুঝবে না। ভাবে শেয়ারে বিনিয়োগ করলেই বুঝি লাভ। আমার দাবি, এরকম শেয়ার বাজার যদি বৈধ হয় তবে সব ধরনের জুয়ারও বৈধতা দিতে হবে।

আরে মূর্খরা! তোরা নিজেরা ক্ষুদ্র ব্যবসা/শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগ কর। আর নতুবা এভাবেই বড় জুয়ারীদের কাছে ধরা খেয়ে মর।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.