শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের দুই বছর পূর্ণ হলো আজ। বিরোধী মতকে দমন ও প্রতিবেশীদের স্বার্থরক্ষায় সরকার এ দু’বছরে ব্যাপক সাফল্য দেিখয়েছেন।
১০ টাকা কেজির চাল, দ্রব্যমূল্য সহনশীল রাখা, সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার, কৃষকদের বিনামূল্যে সার, প্রতি পরিবারে একজনের চাকরি, সবার জন্য বাসস্থানসহ নানা স্বপ্নে গুড়েবালি পড়েছে বেশ।
আইনশৃঙ্খলা ও লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নয়ন, সুশাসনসহ দিনবদলের স্লোগান দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের ঘটেছে ভরাডুবি।
রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তনের কথা বলে ও দলের পুরনো নেতাদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ অপরিচিতদের মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়ে চমক দেখিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা।
কৃতজ্ঞতাস্বরুপ নবীন মন্ত্রীরা প্রত্যেকেই প্রতিযোগিতা করে ভারতপেমের অপূর্ব পারফরমেন্স দেখিয়েছেন।
নির্বাচনী অঙ্গীকার পালনে সরকারের ব্যর্থতা চরমভাবে ফুটে ওঠেছে। ভারতের সঙ্গে বিতর্কিত চুক্তি, বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে ভারতে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে পরোক্ষ সমর্থন জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে রক্তপাত, ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ সরকারদলীয় ক্যাডারদের চাঁদাবাজি ও টেন্ডার সন্ত্রাস, সরকারি কর্মকর্তাদের গায়ে শাসক দলীয় দুর্বৃত্তদের হাত দেয়ার ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠেছে। গার্মেন্টসহ শিল্পাঞ্চলে বিশৃঙ্খলা ছিল দু’বছর জুড়ে আলোচিত।
রাজধানীতে দুর্বিষহ যানজটসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী নানা পদক্ষেপ সরকারের ব্যর্থতার পাল্লাকে প্রকট করে তুলেছে গত দু’বছরে। মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব দেয়ার প্রতিশ্রুতি গত দুই বছরেও বাস্তবায়ন করেনি মহাজোট সরকার। এরই মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সর্বশেষ বিচার বিভাগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে তার ৩৮ বছরের পুরনো বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার নাম বিমানবন্দর থেকে মুছে ফেলা কিংবা যুদ্ধপারাধীদের বিচারের নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের রিমান্ডে নির্যাতনে যত তৎপর ছিল জনস্বার্থ বিষয়ে সরকারের সে রকম তৎপরতা চোখে পড়েনি।
বিরোধী দলের নেতাদের রিমান্ডে নির্যাতন, গণমাধ্যমের ওপর আঘাত ও আমার দেশ পত্রিকা, চ্যানেল ওয়ান বন্ধসহ মিডিয়া দলন, সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড, ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকারের লঙ্ঘন, হত্যা-গুম, সীমান্তে প্রতিনিয়ত বিএসএফের হাতে বাংলাদেশীদের হত্যা ঠেকাতে ব্যর্থতা, ইভটিজিং বৃদ্ধি, দু’বছরে মাত্র তিন হরতালের মুখোমুখি হয়েও হরতাল কর্মসূচিতে অংশ নেয়া নারীদের রাজপথে শ্লীলতাহানির ঘটনা মানুষকে হতাশ করেছে।
গত দু’বছরে সরকার পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন ধরে রাখতে সক্ষম হলেও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। শ্রমবাজারেও এর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বিচার বিভাগে বিতর্কিত পছন্দসই লোকদের নিয়োগ ও সুপারসিডের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশাসনে নিরঙ্কুশ দলীয়করণের মাধ্যমে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছে বর্তমান সরকার। দুর্নীতি রোধের শ্লোগান নিয়ে ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতাকেই খর্ব করেছে বর্তমান সরকার।
প্রথম বছরের তুলনায় দ্বিতীয় বছরে বিরুদ্ধ মতের প্রতি সরকারের অসহিষ্ণু মনোভাব প্রকট হয়েছে। একদলীয় বাকশালের আদর্শ আওয়ামী লীগ পুরোপুরি ত্যাগ করেনি এ কথা দলের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ হানিফ প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন।
চালসহ আটা, তেল, পেঁয়াজ, হলুদ, মরিচসহ প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম এখন গত বিএনপি আমলের দ্বিগুণেরও বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনগুণও হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক আমলে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছিল, সে রেকর্ডগুলোও এরই মধ্যে ভেঙে ফেলেছে মহাজোট সরকার ।
দেশজ উৎপাদন বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ না নিয়ে ভারতমুখী অর্থনীতি গড়ে তোলার চেষ্টা করছে সরকার।
লোডশেডিং ঠেকাতে ঘড়ির কাঁটার পরিবর্তন করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি। দিনে প্রতি দু’ঘণ্টা পরপর এক ঘণ্টা বিদ্যুত্ থাকবে বলে সরকারের দেয়া ঘোষণা প্রমাণ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারিভাবেই ১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হয়েছে। গ্রামের অবস্থা ছিল আরও ভয়াবহ। কোনো কোনো জেলা ও উপজেলা শহরে এমনও সময় গেছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকেনি।
গুপ্তহত্যা ও ক্রসফায়ারসহ বিচারবহির্ভূত সব ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলেও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগের বছরের তুলনায় গত বছরে ক্রসফায়ারের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হলেও ক্রসফায়ার বন্ধ হচ্ছে না। সর্বশেষ উইকিলিকসের ফাঁস করা তথ্যেও ক্রসফায়ারে র্যাবের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে র্যাবকে ডেথ স্কোয়াড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বছরের শুরুতেই জানুয়ারি মাসে ভারত সফরে গিয়ে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট দু’টিসহ তিনটি চুক্তি ও ৫০ দফা সমঝোতা স্মারক সই করে ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করার অভিযোগ আনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
সংসদে এসব চুক্তি প্রকাশের দাবি জানান। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী আজও এসব চুক্তি প্রকাশ করা হয়নি। চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের আলোকে ভারতে ট্রানজিট ও করিডোর দেয়ার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।
সমুদ্রসীমা বিষয়ে বাংলাদেশের স্বার্থকে প্রাধান্য না দেয়া, সমুদ্রবক্ষে ৮০ ভাগ গ্যাস রফতানির সুবিধা রেখে তিনটি ব্লক বহুজাতিক কোম্পানিকে ইজারা দেয়াসহ নানা ইস্যুতে সরকার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে। টিপাইমুখ ইস্যুতে যেখানে সিলেটসহ সারাদেশের মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে, সেখানে সরকার আধিপত্যবাদের দালালিপনায় ব্যস্ত রয়েছে।
ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনে ভারতীয় বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগের প্রস্তাবের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ভূলুণ্ঠিত করার উদ্যোগকেও সরকার ইতিবাচকভাবে দেখেছে।
বর্তমান সরকারের আমলে বিচার বিভাগে খুনের আসামি, সুপ্রিমকোর্টে ভাংচুরকারি ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। হাইকোর্টে নিয়োগপ্রাপ্ত ১৭ বিচারপতির অধিকাংশের তৃতীয় শ্রেণী থাকায় এ নিয়েও মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এছাড়া নানা কারণে বিচার বিভাগ সমালোচনার মুখে পড়ে। দুই সিনিয়র বিচাপতিকে ডিঙিয়ে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ এবং সর্বশেষ টিআইবি’র অনুসন্ধানে বিচার বিভাগ বিশেষ করে সর্বোচ্চ আদালত সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিচার বিভাগ নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা পায়।
এর আগে ‘চেম্বার মানেই সরকারের পক্ষে স্ট্রে’ শিরোনামে সত্য প্রতিবেদন লেখায় আমার দেশ সম্পাদকের ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
বর্তমান সরকারের প্রথম দুই বছরে আলোচিত ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানে নিজেদের মধ্যে এবং অন্য সংগঠনের সঙ্গে হানাহানিতে জড়িয়ে পড়ে সরকারি ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিতে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ে এ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন সময় চাপাতি, কিরিচ, হকিস্টিকসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের এক গ্রুপকে অপর গ্রুপের ওপর হামলা করতে দেখা গেছে।
সরকারের দুর্বল কূটনীতির কারণে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার এরই মধ্যে স্থায়ীভাবে বন্ধ হতে যাচ্ছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি মিডিয়ায় বলেন, সহসাই তারা বাংলাদেশী শ্রমিক নেয়ার অনুমতি দেবে না। এদিকে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার সৌদি আরব, কুয়েত, ব্রুনাই, ওমান, মরিশাশে ২০০৯ সালে কোনো বাংলাদেশী শ্রমিক নেয়া হয়নি। শ্রমিক নেয়ার পুরো প্রক্রিয়াই বন্ধ রয়েছে। ২০১০ সালের ২০ এপ্রিল সৌদি প্রবাসী পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার শ্রমিকদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হলেও বাংলাদেশী শ্রমিকদের তা দেয়া হয়নি।
এতে আকামাজনিত সমস্যার কারণে লক্ষাধিক শ্রমিক সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় বাংলাদেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছে। বিদেশে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ থাকার কারণে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ৮৫ শতাংশ ব্যবসায়ীর কোনো কাজ নেই। অনেকে কর্মী ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি লাইসেন্স নবায়ন করতে পারেনি। এ বিষয়ে জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার নির্বাহী কমিটির সদস্য ফোরকান উদ্দিন গত ২৬ ডিসেম্বর বলেন, ব্যবসায় মন্দা চলছে। এখন ৮৫ শতাংশ ব্যবসায়ী বেকার।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে আওয়ামীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এক্ষেত্রে সরকার আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মওলানা ভাসানীর নাম পরিবর্তন করতেও দ্বিধা করেনি। মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নামে নির্মিত ‘ভাসানী নভোথিয়েটার’-এর নাম বদলে এখন শেখ মুজিবুর রহমানের নাম দেয়া হয়েছে। চীনের অর্থায়নে নির্মিত চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র নামকরণ করা হয়েছে। স্বাধীনতার মহান ঘোষক ও মুক্তিযুদ্ধে ‘জেড ফোর্স’-এর প্রধান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাম নিশ্চিহ্ন করার উদ্যোগ নেয় সরকার।
ক্ষমতা গ্রহণের দ্বিতীয় মাসেই তারা চারদলীয় জোট সরকারের সময় প্রতিষ্ঠিত বেগম খালেদা জিয়া মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তন করে ফেলে। জাতীয় স্টেডিয়াম, সিলেট বিমানবন্দর, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও মেহেরপুরের মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্সে স্বাধীনতা স্তম্ভ থেকে রাতের আঁধারে শহীদ জিয়ার ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম মুছে ফেলতে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে মন্ত্রিপরিষদে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য যেসব সংসদ সদস্যের নাম বারবার উচ্চারিত হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, পটুয়াখালী-৩ আসনের গোলাম মাওলা রনি, কক্সবাজার-৪-এর আবদুর রহমান বদি, চট্টগ্রাম-১০ আসনের এম আবদুল লতিফ, ঢাকা-১৬ আসনের ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, ময়মনসিংহ-১০ আসনের গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, যশোর-১-এর শেখ আফিল উদ্দিন, পাবনা-৫ আসনের গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স ও বরিশাল-২ আসনের সরকারদলীয় এমপি মনিরুল ইসলাম মনি।
গত বছরের ১৩ আগস্ট নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের লাইসেন্স করা পিস্তলের গুলিতে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকার যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম আহমেদের মৃত্যু নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
অভিযোগ ওঠে, শাওনের গুলিতেই ইব্রাহিম খুন হন। তবে এরপর যুবলীগ তাদের নেতা শাওনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সরকারও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। গত বছরের জুনে আশুলিয়া বাজারসংলগ্ন সেতুর কাছে কর্তব্য পালনের সময় ইলিয়াস মোল্লা সাভারের ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. শরীফুল ইসলামকে মারধর করেন। যুবদল নেতা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ায় শার্শা থানার ওসিকে মারধর করেন আফিল উদ্দিন।
নিজ এলাকায় বিভিন্ন কারণে বারবার সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন আবদুর রহমান বদি ও গোলাম মাওলা রনি। ভূমি দখল, স্থানীয় নেতাকর্মীদের পেটানো, সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা, পুলিশ কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে দু’জনের বিরুদ্ধে। আবদুল লতিফ বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের আধিপত্য নিয়ে লড়াইয়ে বিতর্কিত হয়েছেন। পাশাপাশি দুই বছর ধরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি সারাহ বেগম কবরী এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের মধ্যে বিবাদ লেগেই ছিল। বরিশাল-২ আসনের সরকারদলীয় এমপি মনিরুল ইসলাম মনি গত সোমবার বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রহার করে সর্বশেষ আলোচনায় আসেন।
সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার চরম ব্যর্থতায় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দফতরে পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থতার কারণে এ ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন সৈনিক প্রাণ হারান। এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী দুটি বাহিনীকে ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। এ ঘটনায় সরকারের একাধিক সংসদ সদস্য, প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্তে পাওয়া গেলেও হয়রানির শিকার হয়েছেন বিরোধী দলের এক এমপিসহ অনেকে। ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে বিরোধীদলীয় রাজনীতিক ও দেশের বিশিষ্ট আইনজীবীদের হয়রানি করা হয়।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের করুণার ওপর নির্ভর করছে আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তা। এমনকি স্বাধীনতার ৩৮ বছরেও বিএসএফ সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ড অতিক্রম করতে যেখানে সাহস পায়নি, সেসব জায়গায় বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন নির্মাণ কাজেও বাধা দিচ্ছে।
বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বিজিবি করা হয়েছে। তাদের পোশাকও পরিবর্তন করা হয়েছে।
এত সুনাম আর কীর্তির ফলে দেশের সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও 'প্রথম আলো'র জনমত জরিপে দেখলাম আওয়ামী লীগ বর্তমানে জনপ্রিয়তা ও আস্থায় শীর্ষে রয়েছে।
চামবাজি অার কাকে বলে। ভোল বদলাতে ওস্তাদ প্রথশ আলোর (আলুর) স্লোগানটাও একেবারে উপযুক্ত।
#সূত্র: আজকের জাতীয় দৈনিকসমূহ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।