আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাবার সামনেই ইভটিজিংয়ের শিকার হলো মেয়েটি,, মুখে ও মাথায় ৮০ সেলাই। এই নরপশুদের শাস্তি কেন হয়না?

সকালের মিষ্টি রোদ পেরিয়ে আমি এখন মধ্যগগনে,
মিতার মুখে ও মাথায় ৮০ সেলাই। রক্তাক্ত মুখে-মাথায় ব্যান্ডেজ। পিতার সামনেই তাকে টেনেহিঁচড়ে রিকশা থেকে নামিয়ে নেয় বখাটে মিশুক। এরপর ধারালো ছোরা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এখন সে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ন্যাশনাল কেয়ার হাসপাতালে।

তার অপরাধ বখাটের প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি সে। গতকাল পিতার সঙ্গে কলেজ থেকে ফেরার পথে মিশুকের নেতৃত্বে কয়েকজন বখাটে ঘিরে ধরে মিতাকে। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায় তারা। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন পিতা নেপাল চন্দ্র দেব। মেয়ের সামনেই বখাটেরা তাকে কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় মেরে মাটিতে ফেলে দেয়।

অথচ মাদকাসক্ত বখাটে জেমি আহমেদ মিশুকের পরিবারের কাছে দেড় বছর আগে অভিযোগ করেছিল মিতার বাবা-মা। বলেছিল বখাটে ছেলেকে সামলে রাখতে। কিন্তু ফল হয়নি। দেড় বছর ধরে সে মিতাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছে। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে হত্যার হুমকিও দিয়েছে সে।

বখাটে মিশুকের ছুরিকাঘাতে আহত কলেজছাত্রী মিতা দেবের মা রেখারানী মজুমদার বলেন, ওর হাত থেকে বাঁচতে একাধিকবার সিম পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু কিভাবে যেন ও সব নম্বর পেয়ে যেতো। কিছুদিন ধরে সে হুমকি দিচ্ছিল তাকে না বিয়ে করলে মেরে ফেলবে। ফোন বন্ধ রাখলে সে বলতো ফোন বন্ধ পেলে তোদের কাউকে ছাড়বো না। ওর পিতা মাহবুবুল ইসলামকে জানানো হয়েছিল; কিন্তু তারা ছেলেকে নিয়ন্ত্রণ না করে উল্টো বলে তাদের ছেলে এ ধরনের কাজ করতেই পারে না।

মেয়ের অবস্থা দেখে সারাক্ষণই মা রেখারানী মজুমদার কাঁদছেন। অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, কেউ নেই যে এ বিপদে আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে। দয়া করে আপনারা একটু লিখুন- যাতে আমরা ন্যায্য বিচার পাই। মিতার ভগ্নিপতি নির্মল বলেন, বখাটে মিশুক মেরেই ফেলতে চেয়েছিল মিতাকে। এজন্য সে ধারালো ছোরা সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল।

পরিকল্পিতভাবে সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে মিতার রিকশার গতিরোধ করে সে। অথচ মিতার সঙ্গে তার পিতা ছিল। কিন্তু বখাটেরা তাকে পরোয়া করেনি। তার উপস্থিতিতে বখাটে মিশুক প্রথমে মিতাকে টেনেহিঁচড়ে রিকশা থেকে নামিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে মেয়ের সামনেই পিতাকে কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে।

একপর্যায়ে মিতাকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে বখাটে মিশুক। মিতার মুখে ও মাথায় ৮০টি সেলাই দেয়া হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে সে। মিতার দূর-সম্পর্কের ভাই ডা. অশেষ কুমার রায় বলেন, আঘাত গুরুতর। অনেক জায়গার মাংস খুলে গেছে।

ক্ষতগুলো অনেক গভীর। জানালে আরও কেলেঙ্কারি হবে তাই পুলিশকে বলা হয়নি। মিতার সহপাঠীরাও এ ঘটনায় হতবাক। তারা অভিযোগ করে, মিশুকের দূর-সম্পর্কের ভাই বেলায়েত মিতার সঙ্গে একই বিভাগে পড়ে। সেই সূত্রে কলেজে যাওয়া শুরু করে বখাটে মিশুক।

মিতার সহপাঠীরা গতকাল হাসপাতালে মিতাকে দেখতে গিয়ে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে একটা ছেলে বিরক্ত করছে বলে প্রায়ই মিতা আমাদের বলতো। মিতার বন্ধু সুরিয়া, রাকিবুল ইসলাম, পলাশ বলেন, আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। না হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আমরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পাবো না। মিতার ভগ্নিপতি নির্মল বলেন, বখাটে মিশুক প্রথমত মুসলমান।

তার ওপর সে মিতার চেয়ে ৫ বছরের ছোট। এলাকায় চুরি, ছিনতাই করে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। এর আগেও সে একজনকে দিয়ে মিতার কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। তার ভয়ে অফিসে এবং কলেজে প্রতিদিন বাবা, না হয় মা দিয়ে যায় এবং নিয়ে আসে। তারপরও শেষরক্ষা হলো না।

ওসি ফারুক আহমেদ বলেন, ঢাকায় তার কোন ঠিকানা নেই। পুরান ঢাকার সাধনা গলিতে সে এক মামার বাড়িতে এসে মাঝেমধ্যে থাকে। তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি দামপাড়া গ্রামে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। মিতার মা ৩ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.