ইসরাইলী সৈন্যরা গত রোববার পশ্চিম তীরে নাবলুস শহরের কাছে একটি চেক পয়েন্টে একজন ফিলিস্তিনীকে গুলী করে হত্যা করেছে। এর মাত্র একদিন আগে ফিলিস্তিনী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ইসরাইলী সৈন্যরা ব্যাপক হারে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করলে জাওয়াহার আবু রাহমেহ নামক এক ব্যক্তি নিহত হয়। ফিলিস্তিনী রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চিকিৎসকরা জানান, নাবলুসের পূর্বদিকে রেকাউত চেকপয়েন্টে ইসরাইলী সৈন্যদের ছোঁড়া গুলীতে গুরুতর আহত ২৪ বছর বয়সী আহমদ মোহাম্মদ মাসলামানি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায়, একজন চিকিৎসক বলেন, তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলী লাগে। তার আইডি কার্ড ও মোবাইল ফোন সৈন্যরা রেখে দিয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। প্রত্যক্ষদর্শী ফিলিস্তিনী হাতিম আল ফারুক বলেন, আমি ব্যারিকেড দেয়া রাস্তার পূর্বপার্শে দাঁড়িয়েছিলাম।
হঠাৎ এক ব্যক্তির আর্ত চিৎকার শুনতে পেলাম। আমি ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখলাম ধূসর রঙের শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট পরিহিত এক তরুন দু'হাত উপরের দিকে তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এর পরপরই মাত্র তিন মিটার দূর থেকে ২ জন ইসরাইলী সৈন্য তাকে লক্ষ্য করে গুলী ছোঁড়ে এবং সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অপর একজন প্রত্যক্ষদর্শী ফিলিস্তিনী বলেন, আহমদ জেরিকো শহরে যাচ্ছিল। সে ঐখানে কাজ করতো, চেকপয়েন্ট পার হওয়ার সময় তার হাতে ছিল কোকাকোলার একটি ক্যান।
সে ছিল নিরস্ত্র। চেক পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় সে একজন মহিলার সৈনিকের পাশ দিয়ে এগিয়ে যায়। ঐ মহিলা সৈনিক তখন চিৎকার করে ওঠে। এতে তার সাথে থাকা অপর ২ জন ইসরাইলী সৈন্য আহমদকে লক্ষ্য করে গুলী ছুঁড়তে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।
উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পরই এ গুলীর ঘটনা ঘটে।
ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে আরে একটি ইসরাইলী যুদ্ধাপরাধ ও ঠান্ডা মাথার হত্যাকান্ড বলে অভিহিত করেছে। ইসরাইলের একজন সামরিক মুখপাত্র জানায়, আহমদ চেক পয়েন্টে থামার নির্দেশ উপেক্ষা করে এবং সে কাছে আসার পর তাকে গুলী করা হয়। তার বহন করা ক্যানে কি ছিল মুখপাত্র তা জানে না বলে জানায়। তবে স্বীকার করে যে সৈন্যরা মনে হয় ভয় পেয়ে তাকে গুলী করে হত্যা করে।
ইসরাইলী নিরপত্তা সূত্র জানায়, এ ঘটনার তদন্ত চলছে এবং গুলী করার আদৌ প্রয়োজন ছিল কি না তা সেনাবাহিনী পরীক্ষা করে দেখছে। ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ পশ্চিমতীর নিয়ন্ত্রণ করলেও ঐ ভূখন্ডের এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়ার সময় ইসরাইলী চেক পয়েন্ট পার হতে হয়। অন্যদিকে ইসরাইলী জঙ্গী বিমান রোববার ভোরে গাজায় হামলা চালায়। এতে ২ জন ফিলিস্তিনী আহত হয়। ফিলিস্তিনী সূত্র জানায় ইসরাইলী জঙ্গী বিমান প্রথম দফায় গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে আল কান্সেম ব্রিগেডের প্রশিক্ষণ স্থলে আঘাত হানে।
এতে এক ব্যক্তি আহত হয় এবং প্রশিক্ষণ শিবির মারাত্মকভাবে ক্ষতিহগ্রস্ত হয়। পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বাড়িরও ক্ষতি হয়।
মধ্যগাজার নুসেইরাত শরনার্থী শিবিরের পশ্চিমপার্শের একটি খেলা জায়গায়ও ইসরাইলী জঙ্গী বিমান আঘাত হানে। এতে একজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়। তাকে দারআল বালাহর আল আকসা শহীদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইসরাইলী সামরিক বাহিনী জানায়, শনিবার গাজা থেকে একটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এর জবাব দিতেই এই বিমান হামলা চালানো হয়।
রামাল্লাহ/গাজা সিটি থেকে আরব নিউজ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।