নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহিরে
ওগো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।
....................................................
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা টুটাব তিমির রাত বাধার বিন্ধ্যাচল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলাম আজকের তরুণ হলে কি এই কথাগুলো বলতেন?
প্রেক্ষাপট ভিন্ন, ভিন্ন সংস্কৃতি, সব কিছুর উজানে তো আজ কয়েক মূহুর্ত পরেই নতুন বছর। ২০১১ সাল ( ২+০+১+১= ৪) রাশি কি বলে? কেমস যাবে ২০১১ সাল?পুরোনো ২০১০ এর খেরোখাতা গুটিয়ে রাখার সময় হয়েছে। অনেক দেনা পাওনার হিসেব বাকি।
অনেক হিসেব মেলেনি। কখনও মিলবেও না। তবে প্রাপ্তির খাতাটি একেবারে শূণ্য ছিলো?
রাশি শাস্ত্র কি বলে?
রাশি বলে এই বছর টি হবে অনেকটাই চুপচাপ বছর। তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু এবছরে ঘটবে না। কারণ বড়ো কিছু ঘটার আগে যেমন চারিদিকে শুনশান হয় এবছরটাও সেরকম হবে।
বড়ো কিছু ঘটার উপলক্ষ্য হবে ২০১১ সাল। তবে এসময় যা কিছু ঘটবে তা সাধারণ মানুষকে ঘিরে ঘটবে। মানুষের ব্যয় বাড়বে, মানুষ বেশি¯^প্নাতুর হবে। কিছু যেনো ধরতে যেয়েও ধরা যাবেনা।
বিদায় ২০১০ : :
২০১০ সালে কতো ঘটন অঘটন তো ঘটে গেলো।
পৃথিবীর ঘটে যাওয়া সব ঘটনা আর দূর্ঘটনার চলন্ত রিভিউ আপনি প্রতিটি দৈনিকেই পাবেন। তবে ২০১০ সালের কিছু ঘটে যাওয়া রিভিউ আপনি কোথাও পাবেন না। এই ঘটনাগুলো ঘটেছে কেবল আপনার জীবনে। ২০১০ সালের শেষ মুহুর্তে আর ২০১১ সালের শুরুতে একবার চোখ বন্ধ করে সেই রিভিউ করে নিন। তারপর নিজেকে বলেন- ব্যর্থতা তোমার দিলাম অবসর।
২০১০ তোমাকে দিলাম যেতে কারণ দুয়ারে এখন ২০১১।
নতুন বউ বরণ করবেন না? নতুন বউয়ের ঘোমটা খুলে একবার চোখ মেলে দেখবেন না? না দেখেন সেটাই ভালো। আগে তার মন বোঝার চেষ্টা করেন। ২০১১ সাল তো এখন আপনার নতুন সঙ্গী। আপনি তাকে বরণ করলেও সে আপনার না করলেও আপনার।
কেবল আর পেছনে তাকিয়ে করবেন কি?
কেমন করে এলো নববর্ষ পালনের ইতিহাস : :
নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার যে উৎসব, তাই আসলে পৃথিবীর প্রাচীনতম উৎসব। প্রায় ৪ হাজার বছর আগে মেসোপটেমিয়ান সভ্যতায় এই উৎসবের যাত্রা শুরু হয়। তবে নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ব্যবিলনবাসীরা প্রায় ২ হাজার খ্রিস্ট পূর্বাব্দে জাঁকজমকের সঙ্গেই এই নববর্ষ বরণ উৎসব শুরু করে। বসন্ত শুরুর দিন, অর্থ্যাৎ, মার্চের মাঝামাঝি থেকেই শুরু হতো তাদের বছর। অবশ্য, সেসময়টা বর্ষ শুরুর পিছনে ওদের যুক্তি ছিলো এমন যে, এই ঋতু হলো প্রকৃতির নতুন করে সাজানোর ঋতু।
শীতের রু¶তার পর বসন্তকালে গাছে গাছে নতুন পাতা হয়, বন-জঙ্গল সব ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। শোনা যায় পাখির গান। যেনো নতুন করে জন্ম নেওয়ার এক আনন্দ- এই বসন্তকাল। ব্যবিলিয়নিরা ১১ দিন ধরে উৎসব পালন করতো। আর উৎসবের প্রতিটি দিনেই থাকতো নতুন আঙ্গিকের ভিন্ন ভিন্ন বিষয়।
মার্চের মাঝামাঝি থেকে মার্চের ১ তারিখে এই বর্ষবরণ প্রক্রিয়াটা নিয়ে আসে রোমানরা। আর সেসময় রোমানদের ক্যালেন্ডারে মাস ছিলো মাত্র ১০ টি! তবে রোমান ক্যালেন্ডারকেও একটা সময় সংশোধন করা হয়। ১৫৩ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে দ্বিতীয় রোমান সম্রাট ‘নুমা পন্টিলাস’ জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারি মাসকে ক্যালেন্ডারের মধ্যে আনেন নতুন করে। আর জানুয়ারি মাস থেকে নতুন বছরের শুরু করেন। যদিও তার এই সিদ্ধান্ত সেসময় অনেকেই মেনে নেননি।
আর তাই এরপরেও অনেক মানুষ মার্চ মাসের ১ তারিখকেই তাদের বর্ষ শুরুর দিন হিসেবে ধরতো। এই সমস্যার সমাধান হলো যখন ৪৬ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার ‘সূর্যকে কেন্দ্র করে’ দিন গণনা শুরু করেন আর দিনকে কেটে ছেঁটে ৪৪৫ দিনে ১ বছর করে ফেলেন! সেই সঙ্গে জানুয়ারির ১ তারিখকেই নতুন বছরের শুরু বলেও ঘোষণা করেন তিনি। তার এই ক্যালেন্ডারকে বলা হয়, জুলিয়ান ক্যালেন্ডার। এখানেই কিন্তু থেমে যায়নি ইংরেজি ক্যালেন্ডারের যাত্রা। এরপরেও আরো একটি নতুন ক্যালেন্ডার এসেছে।
আর সেই ক্যালেন্ডারটিই আমরা এখন ব্যবহার করছি। এই ক্যালেন্ডারটির নাম হলো ‘গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার’। পোপ ১২ তম গ্রেগরী নতুন করে ক্যালেন্ডারটির সূচনা করেন আর জানুয়ারি ১ তারিখ থেকেই বর্ষশুরু হবে বলে ঘোষণা দেন। তার এই সিদ্ধান্ত ক্যাথোলিকরা সঙ্গে সঙ্গেই মেনে নেন। এর কিছুদিন পর প্রোটেস্ট্যান্টরাও মেনে নেন এই সিদ্ধান্ত।
আর এখন তো সারা বিশ্বেই এই ক্যালেন্ডারেই চলছে। তবে বর্তমান বিশ্বে এমন ঘটা করে নিউ ইয়ার উদযাপনের যে রীতি, এর প্রচলন কিন্তু খুব বেশিদিনের না, মাত্র ৪০০ বছর আগের!
বছর এর শুরুটা কিভাবে করা যায় : :
কুসংস্কার বলেন আর যাই বলেন বছরের শুরুটা ভালো কাজ দিয়ে করাই ভালো। নববর্ষ নিয়ে বেশ কিছু কুসংস্কার চালু আছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মাঝে। এগুলো সম্পর্কে তোমাদের জানাই এবার। সাধারণভাবে মানুষ মনে করে, বছরের শুরুতে তাদের দিনটা যেমন যাবে, সারাবছর তেমনই কাটবে।
আর এজন্যই পরিবারের সদস্য আর বন্ধুদের নিয়েই বছরের প্রথম প্রহর মানুষ একটু আনন্দে কাটায়।
অনেকেই নিউ ইয়ার পার্টির আয়োজন করে আর তা মোটামুটি সকাল পর্যন্ত চলে। একটা সময় মানুষ বিশ্বাস করতো, বছরের প্রথম দিন যে মানুষটি তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসবে, সেই আসলে সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্য বয়ে আনবে। আর সেই মানুষটি যদি ল¤^া আর ঘন কালো চুলের অধিকারী হয়, তাহলে তাদের জন্য শুধু সৌভাগ্যই আনবে। আর তাই তারা অধীর আগ্রহে অপে¶া করতো এমন একজন মানুষের জন্যই! নতুন বছরের খাবারও সৌভাগ্য বয়ে আনেÑ এমনটাই ধারণা অনেকের।
তাদের বিশ্বাস, আংটির মতো গোলাকার কোনো খাবার নিশ্চিত সৌভাগ্যসূচক। সেজন্য ডাচরা এই দিনে বেশি বেশি ডোনাট খেয়ে থাকে! যুক্তরাষ্ট্রের অনেক এলাকাতেই বাধাকপিকে সৌভাগ্যের সবজি হিসেবে ধরা হয়। আর তাই তারা এই দিনের শুরুটা করে বাধাকপি খেয়েই! অনেক এলাকায় চালকেও ধরা হয় ‘লাকি ফুড’। তাই ভাতও খেয়ে থাকে বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
অনেকে দিনটিকে উদযাপন করেন পরিবারের সঙ্গে।
এটি বেশ ভালো। অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায়। এটিও ভালো। তবে বিনোদনের মাত্রা যেনো বছর শুরুই মুহুর্তটিকে আগামী বাকি ৩৬৪ টি দিনের মুহুর্তগুলোকে অশুভ করে না দেয় সে দায়িত্ব নিজেরই।
ভালোবাসলে মানুষকে কষ্ট দিতে নেই : :
তোমাকে ভালবাসি বলে বন্ধু তোমার কাছেই আসা
তোমাকে ভালবাসি বলে বন্ধু অবিরাম চেয়ে থাকা।
সময়ের গন্ডিতে ঘুরে ঘুরে একই পথে চলা
সারাক্ষণ নির্বাক যেনো বকবক কথা বলা।
২০১১ প্রিয়জনকে ভালোবাসার অন্তরের করে নেবার মুহুর্তকে নিজের করে নিন। বন্ধু সহ সবার কাছে পাঠিয়ে দিন বার্তা...
আলো-আঁধারিতে তোর
আমি বন্ধু চোর
চুরি করি প্রহর।
২০১০ বিদায়ের স্মৃতিতে
২০১১ আগেরই রীতিতে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।