বাংলাদেশও ২০১১ এর ক্রিকেট বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছে জেনে অনেক খুশি হয়েছিলাম। আবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও নাকি আমাদের দেশেই হবে! কি আনন্দ এবং গর্বের কথা! কিন্তু কথায় আছে- "কুত্তার পেটে ঘিঁ সয় না"। আমাদের দেশে এই রকম ঘিঁ সহ্য না হওয়া কুকুর মনে হয় এখন বেশি আছে। নাহলে কেন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক ঝাক ভারতীয় শিল্পীকে তাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে আলোকিত করার সুযোগ করে দেয়া হবে! যদি এভাবেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করতে হয় তাহলে আমার জোরালো দাবী আগামীতে বিজয় দিবস সহ আমাদের সকল দেশীয় দিবস ও অনুষ্ঠানে ভারতীয় কোটা রাখতেই হবে এবং ভারতীয় শিল্পীর সংখ্যা আমাদের দেশীয় শিল্পীর চেয়ে অন্তত চার গুন বেশি হতেই হবে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যদি বিশ্ববাসীর কাছে আমরা ভারতীয় আদলে পরিচিত হতে পারি, তাহলে নিজের দেশের মাঝে, নিজের দেশের মানুষের সামনে নিজেদের দেশীয় দিবস ও অনুষ্ঠানে কেন ভারতীয় রং-এ রঙ্গীন হতে পারবো না?
অনেকেই বলেন, বাংলাদেশ নাকি ইন্ডিয়া হয়ে যাচ্ছে।
আমি বাংলাদেশের কথা জানি না, কিন্তু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যে ভাবে বলা হচ্ছে যদি সে ভাবেই হয়, তাহলে হয়তো আসলেই অন্য দেশের লোকজন টেলিভিশনের পর্দায় ঢাকা-কে দেখে ভাববে ঢাকা বুঝি ইন্ডিয়ার একটি শহর!
কিছু দিন আগে "জামিল" নামে একজন একটি ব্লগ লিখেছিলেন এই শিরোনামে-
"জাতি হিসেবে আমরা কি অক্ষম হয়ে গেলাম?.. লজ্জিত.. স্তম্ভিত.. ক্ষুদ্ধ....."
তার পরিচয় জানি না, কিন্তু লিখাটি পড়ে আমি স্তম্ভিত, ক্ষুদ্ধ। কিন্তু লজ্জিত নই। আমি এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করি না, আমার দেশের এই অপমান সহ্যও করি না। তাই এই লজ্জা ও কলঙ্কের দায়ভার থেকে মুক্ত হবার জন্য আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। না, শুধুমাত্র ফেসবুক বা ব্লগে না, আমি প্রতিবাদ জানাবো সরাসরি।
কারন আমি বুদ্ধিজীবি না, আমি সাধারন মানুষ। সাধারন মানুষের প্রতিবাদ জানাবার আসল জায়গা রাস্তায়। আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে এটিএন বাংলা অথবা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ মানব বন্ধনের মাধ্যমে আমরা কিছু সাধারন মানুষ এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে একত্রিত হচ্ছি। সঠিক দিনক্ষন খুব শীঘ্র জানানো হবে।
কিন্তু আপনি কি আমাদের সাথে যোগ দিবেন, নাকি গরম চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে কম্পিউটারের সামনে আরামে বসে লোক দেখানো মালা জপবেন যে - "দেশ আমার শেষ হয়ে গেল", "কিচ্ছু হবে না এই দেশের"।
আপনি, আমি, আমরা সবাই যদি শুধু বসে বসে কথাই বলি তাহলে দেশের ভাল কিছু হবে কিভাবে? কে করবে? যদি আজ সামনে এসে এর প্রতিবাদ না জানাই, তাহলে কোন দরকার নেই এক রুম থেকে অন্য রুমে বসা মানুষকে জানাবার যে আপনি বাংলাদেশের এই অপমান সমর্থন করেন না।
লেখালেখির মানুষ আমি না, অভ্যাসও নেই। ২০১০ সালে লেখা এটি আমার প্রথম ব্লগ। অনুভূতি হয়তো নিয়ন্ত্রন না করে অনেক কিছু লিখে ফেলেছি। নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।
আমাদের আবার গুনের অভাব নেই কিনা!
--------------------------------------------------------------------------
সকলের জ্ঞাতার্থেঃ
বিশ্বকাপ উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বিসিবি যৌথভাবে মাহফুজুর রহমানের অভিরাম ইভার মুখ ক্ষ্যাত স্যাটেলাইট চ্যানেল এটিএন বাংলার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এটিএন ইভেন্টস আর ভারতীয় কোম্পানি উইজক্রাফটকে যৌথভাবে দায়িত্ব দিয়েছে। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিন হলেও এই দুই কোম্পানী মিলে ভারতীয় সংস্কৃতি প্রচারের জন্য আরো দুদিন মিলিয়ে মোট তিন দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এর মধ্য ১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও ১৬ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় শিল্পীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কনসার্ট আয়োজনের শিডিউল ঠিক করে ফেলেছে এই দুই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল দায়িত্ব পালনকারী ভারতীয় কোম্পানি উইজক্রাফট ও দেশীয় এটিএন ইভেন্টস ভারতীয় ফিল্মের তারকা আর সেরা গায়ক-গায়িকাদের নিয়েই অনুষ্ঠানসুচী প্রায় চুড়ান্ত করে এনেছে। এরই অংশ হিসেবে এটিএন ইভেন্টসের চেয়ারম্যান ড.!! মাহফুজুর রহমান ভারত সফর করে গতকাল দেশে এসেছেন।
জানাযায় সফরকালে তিনি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য ভারতীয় ফিল্মের মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন, জয়া বচ্চন, অভিষেক বচ্চন আর ঐশ্বরিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং সে সুত্রে বচ্চন পরিবার আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান করতে ঢাকা পৌঁছবে। এছাড়া আমন্ত্রিত বলিউড সুপারস্টার সালমান খান, বিপাশা বসু, সাইফ আলী খান, অক্ষয় কুমার, গোবিন্দ, প্রিয়াংকা চোপড়া, সনুনিগাম ও রাহাত ফতেহ আলী খানসহ ৫৮ জনের বিশাল বহর ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা পৌঁছবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।