পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয় ,,,,,পথের পাশেই আছে মোর দেবালয়
আজ দুটো সত্যি ঘটনা বলবো (এত দিন কি মিছা কথা বলছি)
জানি না কার কেমন লাগবে, কারন লোক হাসানো খুব কঠিন কাজ
এক নং কাহিনী
আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহপাঠী বন্ধু , দুজনই প্রবাসী। এক জনের নাম শাহেদ আরেক জনের নাম কামাল। শাহেদ দুটো ভাষায় খুব ভালো করে কথা বলতে পারে, একটা হলো ইংরেজী আরেকটা হলো নোয়াখালী এর মধ্যে আর কিচ্ছু নেই, তবে হিন্দী সিনেমার কল্যানে কিছু কিছু হিন্দী জানে।
যাই হোক একবার ওরা দুই বন্ধু শাহেদ আর কামাল, সাথে কামালের পরিবার ও তার শ্বশুর মশাই নায়েগ্রা ফলস দেখতে গিয়েছে। কামালের শ্বশুরের সাথে শাহেদের আবার খুব ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক।
তারা দুজন হিন্দীতে বাতচিৎ করে কিন্ত কামাল তার এক লাইনও বুঝেনা
কামালের ভাষায় বলছিঃ
বুঝেছো, বোটে করে নায়েগ্রা ফলসের কাছে গিয়ে আমরা তো সবাই তার সৌন্দর্যে বিমোহিত। এমন সময় আমার শ্বশুর মশাই আমাকে ডেকে বল্লেন, 'বেটা এক তাসবীর লাও'।
ওনার কথা শুনে আমিতো পাগলের মত ব্যাগ হাতড়াচ্ছি। ভাবছি শ্বশুর মশাই নিশ্চয় এত সুন্দর এক সৃস্টি দেখে তসবীহ পড়ে সৃস্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন, কিন্ত তার ফরমায়েশী জিনিস আর খুজে পাইনা।
এমন সময় শাহেদের ডাক শোনা গেল ' কিরে কামাইল্লা কি করস তুই! এত দেরী করস কিল্লাই!
আমি ভয়ে ভয়ে বল্লাম "দোস্ত তসবীহ তো খুজে পাচ্ছিনা, যত সব হাবিজাবি জিনিস"
নায়েগ্রা ফলসের গর্জন ছাপিয়ে শাহেদের গর্জন শোনা গেল 'এরই কুইত্তার বাইচ্চা, হেতে তো তোরে একখান তসবীর, তসবীর মানে ছবি তুইলবার লাই কইছে, আর তুই তসবীহ বিচরাস কিত্তো
অপরিহার্য গালিটা ব্যাবহার করার জন্য দুঃখিত
কাহীনি ২নং
কোচিং সেন্টার, আমরা কয়েকজন মা ছেলেপুলেদের পড়তে দিয়ে বসে থাকি ।
আমাদের জন্য একটা রুম বরাদ্দ। কার্পেট করা সোফা দিয়ে সাজানো। সেখানে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে আমার বেশ কিছু বন্ধু জুটে গেল। কেন জানিনা আমাকে সবাই খুব পছন্দ করতো
একদিন আমি বসে আছি এমন সময় সেখানে গড়ে উঠা আমার নতুন বান্ধবী তার মেয়েকে ক্লাসে দিয়ে আমার পাশে এসে বসলো। উনি আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়, অনেক বড়লোক, ওনার তিন ছেলে বড় বড় আর টু তে পড়া এই এক মেয়ে।
বড় ছেলে ইন্জিনিয়ারিং শেষ বর্ষে পড়ে এমন এক মেয়েকে ভালোবেসেছে, পরে বাবা মা ই বিয়ে দিয়ে দেয়। বউ পড়া লেখা করুক এটা তার একটুও পছন্দ না। বিভিন্ন ভাবেই সে এটা বলতো। বউটা পড়তে চাইতো।
সেদিন এসে উনি আমার পাশে বসলো, মনমরা চেহারা।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে ভাবী?
বল্লো 'কিচ্ছু না'
তবে এমন মন খারাপ করে আছেন কেনো
"কি আর বলবো.... আমার ছ্যালের বউটা.. বুইচ্ছেননি ভাবী... ভীষন ছালাক
আমি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, 'কেন সে আবার কি চালাকি করলো
আমার বিস্ময়ের জবাবে উনি জিহ্বা দিয়ে টকাশ্ করে একটা শব্দ করে বল্লো, "সেটাই তো ধইত্তে পাইত্তেছিনা
তার করুন চেহারা দেখে আমার খুব খারাপ লাগছিল,তাকে সাহায্য করার জন্য জিজ্ঞেস করলাম,
' কেন সেকি আপনার ছেলে অর্থাৎ তার স্বামীকে হাত করে ফেলেছে
উনি একেবারে রাগত গলায় বলে উঠলো, 'না না কি বলেন আফনে! আমার ছ্যালে আমার জন্য ফাগল, এখনও আমার হাতে নলাত তুলি ভাত খায়
আমি আবার বল্লাম 'তাহলে কি আপনার এই একমাত্র মেয়েকে সে পছন্দ করেনা
না না হেতি আর মেয়েরে খুব বালোবাসে, সাথে লই শুই থাকে'।
মনোবিশারদ জুন " তাহলে সে কি আপনার বাকী দুই ছেলেকে অপছন্দ করে!"
'আন্নে যে কি কন! কাল রাইতেই হেতি আর দুই ছ্যালের জন্য চার হাজার টাকার ফিজা আর পল প্রুটস কিনি আইনছে '
তার চেহারা দেখে অসীম মমতায় অদম্য কৌতুহলী আমি এরপর জিজ্ঞেস করলাম, " তাহলে সেকি আপনাকে অবহেলা করছে
"না না সে সব সময় খোজ রাখে আই কি খাই না খাই"।
যাকে বলা যায় শার্লক হোমসের মত আমিও নাছোড়বান্দা!
শেষ চেস্টা হিসেবে প্রশ্ন করলাম 'তবে! তবে কি সে আপনার স্বামীকে পটিয়ে ফেলেছে বাবা বাবা ডেকে (যেটা অনেক মেয়েরাই করে থাকে)
কথাটা বলা মাত্র উনি এক চিৎকার দিয়ে বল্লেন, " আন্নে কি কইলেন!
আমার স্বামীকে ফটান
এত্ত বড় বুকের পাটা, এত্ত শাবাস আছেনি হেতির
আমি গলাটা নামিয়ে আস্তে করে জানতে চাইলাম, 'তাহলে কি চালাকি করলো সে ,
উনি ততোধিক গলা নামিয়ে মুখটা করুন করে আবারও জিভ দিয়ে চকাস্ করে একটা হতাশার শব্দ উচ্চারন করে বল্লো,
"সেটাই তো ধইত্তে পাইত্তেছিনা"
অটঃ নোয়াখালীবাসীরা মাইন্ড করবেন না এরা উভয়েই আমার খুব ক্লোজ। লেখকঃ মাহজাবীন জুন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।