আমি আমার মতন।
পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জাতীয় স্বর্ণপদক পাওয়া নওগাঁর ভিক্ষুক গয়ের আলী ওরফে তালবুড়ো (৮০) আর নেই। বার্ধক্যজনিত কারণে গত সোমবার রাত ৮টায় জেলার মহাদেবপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি...রাজিউন)। গয়ের আলীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষ শেষ বারের মতো এক নজর দেখতে তাঁর বাড়িতে ভিড় জমান। গতকাল মঙ্গলবার বাদ জোহর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান।
পেশায় ভিক্ষুক গয়ের আলী গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন বাড়ি থেকে চেয়ে নিতেন তালের আঁটি (তালবীজ)। সেই তালবীজ তিনি বপন করেন নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে। গজিয়ে ওঠা চারারও যত্ন নিতেন পরম মমতায়। তাঁরই নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবে ওই মহাসড়কের দুপাশে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে তাল গাছের সারি।
গাছের পরিচর্যার জন্য বিনিময়ে কারো কাছে কিছুই চাননি কোনো দিন। তাল গাছ লাগিয়ে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখার জন্য এলাকার লোকজন তাঁকে শেষ জীবনে ডাকতেন 'তালবুড়ো' বলে।
গয়ের আলীর এই নীরব পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয় বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকে। পরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির নির্মাতা হানিফ সংকেত টেলিভিশনের মাধ্যমে তাঁকে তুলে ধরেন দেশ-বিদেশের কোটি কোটি দর্শকের সামনে। মহৎ কাজের জন্য গয়ের আলীর সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনায় ইত্যাদির পক্ষ থেকে নগদ দুই লাখ টাকাও দেওয়া হয়।
পরিবেশ রক্ষায় অসামান্য অবদানের জন্য গয়ের আলীকে ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বর্ণপদকে ভূষিত করেন। ওই বছরের ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গয়ের আলীর হাতে স্বর্ণর্পদকসহ ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
(কপিপেষ্ট)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।