৪২০
শিক্ষানীতি কোনো ধর্মগ্রন্থ নয়। প্রয়োজনে যেকোনো সময় এর পরিবর্তন করা যাবে।
গতকাল রোববার ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন’ নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ কথা বলেন। মন্ত্রী সবার সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করে বলেন, এ নীতির বাস্তবায়ন বেশ কঠিন হলেও তা করা হবে।
পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ জাতীয় প্রেসক্লাবে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
এতে বক্তারা নতুন শিক্ষানীতি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, সব মহলে নতুন এ শিক্ষানীতি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অতীতে যত শিক্ষানীতি হয়েছে সব কটিকেই গণবিরোধী আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে হরতাল, ধর্মঘট হয়েছে। এবার বড় ধরনের কোনো বিরোধিতা হয়নি। বেশির ভাগ মানুষ এর পক্ষে মত দিয়েছেন।
মন্ত্রী মনে করেন, এ কারণেই এবারের শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত হবে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ভয় পেয়ে বসে থাকলে কোনো দিনই এই নীতির বাস্তবায়ন হবে না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে কারিগরি খাতে দক্ষ লোকের অভাব প্রকট। এ জন্য কারিগরি শিক্ষার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আরও উন্নত, যুগপোযোগী ও মানসম্মত করা হবে।
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে কোনো কাজ করেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নুরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষানীতি পাস করার আগে সর্বস্তরের মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে অনেক কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। অনেকে এখনো মনে করছেন, খসড়া নীতিটিই চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে আর পড়ালেখা করতে পারে না।
তারা কাজে যোগ দেয়। তাই তিনি প্রাথমিক শিক্ষার ওপর আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মত দেন।
বুয়েটের উপাচার্য নজরুল ইসলাম বলেন, আগের সব শিক্ষানীতিতে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আলাদা রাখা হয়েছিল। কিন্তু বিপুলসংখ্যক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আলাদা রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ শিক্ষানীতি সব শিক্ষার্থীকে শ্রমশক্তিতে পরিণত করতে পারবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, শিক্ষা যদি দেশের কাজে না লাগে, তাহলে সেটি কোনো শিক্ষা নয়। সেটি বোঝা। তিনি নয়া শিক্ষানীতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি বলে মত দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি মো. আখতারুজ্জামান বলেন, যাঁরা ধর্মীয় শিক্ষার কথা বলে শিক্ষানীতির বিরোধিতা করছেন, তাঁরা হয় এ নীতিটি পড়েননি, অথবা শুধু রাজনৈতিক স্বার্থে বিরোধিতা করছেন। তিনি বলেন, ফারাবি, গাজ্জালি, ইবনে সিনার মতো মুসলিম মনীষীরা শুধু কোরআন, হাদিস পড়ে বিখ্যাত হননি।
তাঁদের পাঠক্রমে গণিত, বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা এসব বিষয়ও ছিল।
মুসলমানদের পাঠক্রম থেকে যখন এসব বিষয় বাদ দেওয়া শুরু হয়, তখন থেকেই তারা পিছিয়ে পড়ে। তিনি বলেন, মাদ্রাসার ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের প্রথমবারের মতো এ সরকার মূল ধারায় নিয়ে এসেছে। তাদের বিনা মূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান বলেন, নতুন শিক্ষানীতিতে ধর্মকে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
অনেকে এসব বিষয় না জেনে বিরোধিতা করছেন।
পরিষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য দেন জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক কাজী ফারুক আহমদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব কামরুল হাসান।
View this link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।