গণতান্ত্রিক প্রশাসন ও শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম
বিএনপি কি বিগত দিনের ভুল থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করতে পেরেছে? বিএনপির নেতাকর্মীদের সাম্প্রতিক কথাবার্তা এবং কার্যক্রম অন্তত সেটির পক্ষে বলবে না। সম্প্রতি খোদ বিরোধীদলীয় নেত্রীর একটি বক্তব্য জাতিকে হতবাক করেছে, করেছে হতাশ। বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক মাত্রই জানেন যে, আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো কার্যকর শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি, যা মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। বিভিন্ন সচেতন মহল, বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে দীর্ঘদিন এ দাবি তুলে ধরা হয়েছে। গত জোট সরকারের সময়ও এ দাবি করা হয়েছে জোরেশোরে; কিন্তু সেদিন কোনো কর্ণপাত করা হয়নি।
অথচ জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে টিকে থাকতে এটি অন্যতম একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। অত্যন্ত আনন্দ এবং আশার কথা, বর্তমান সরকার জনগণের যৌক্তিক দাবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষানীতি-২০০৯-এর খসড়া প্রণয়ন করেছে। দীর্ঘদিনের যাচাই-বাছাই এবং কর্মপন্থার মধ্য দিয়ে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে। সমগ্র দেশবাসীর মতো বিরোধীদলীয় নেত্রীরও উচিত ছিল সরকারকে ধন্যবাদ জানানো। তবে যদি সত্যিকার অর্থে এই শিক্ষানীতির ক্ষেত্রে কোনো সুপারিশ যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, অথচ অন্তর্ভুক্ত করলে আরও কার্যকর হবে, সেগুলো যৌক্তিকভাবেই তুলে ধরা যেত।
যা তিনি করেননি; বরং নেতিবাচক এবং সমালোচিত বক্তব্য প্রদান করে তিনি নিজেই রাজনীতির পুরনো সংস্কৃতিকে মনে করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন, বাংলাদেশের মানুষ তথাকথিত ১/১১-এর পূর্বের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ফিরে যেতে চায় না। তিনি বলেছেন, এই শিক্ষানীতি দেশে বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি করবে। পাশাপাশি দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করার প্রত্যাশা ঘোষণা করেন। প্রশ্ন হচ্ছে, বিরোধীদলীয় নেত্রী কোনো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতে চান? যারা দীর্ঘদিন ধরে একটি শিক্ষানীতির জন্য আন্দোলন করেছেন তাদের নিয়ে? নাকি যাদের সঙ্গে নিয়ে ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন তাদের নিয়ে? তিনি কি বুঝতে পেরেছেন, তার এই বক্তব্য তার অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছে, নাকি সাধারণ মানুষ থেকে তাকে দূরে ঠেলে দিয়েছে? তিনি কি ভেবেছেন যে দল ২০০১ সালে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল, কী কারণে আজ তাদের এই অবস্থা? আজ সময় এসেছে ভাবার, যথার্থ কারণ অনুসন্ধান করার।
বিএনপির উচিত অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়া। শুধু সমালোচনার দৃষ্টিতে নয়, যৌক্তিক দৃষ্টিতে সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।