আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিচ্চি এবং এস্কেলেটর!!!

..

সেদিন অনেকদিন পর আমার এক বোনকে নিয়ে বেড়াতে বের হলাম। ওর ইচ্ছাতেই বের হলাম। ইদানিং আমি একদম বের হইনা। সারাক্ষণ বাসায় বসে থাকি। আমি না গেলে বেচারীও যেতে পারবে না যাই যেতেই হলো।

আপুও বলল যাও ঘুরে আসো ভালো লাগবে। তো দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে বের হয়ে পড়লাম! বের হতে হতে ঘুরতে যাওয়াটা মুভ্যি দেখবার প্যান হয়ে গেলো! যাবার আগে আমি ভাবছিলাম ছুটির দিন, ভীষণ ভীড় থাকবে। শুধুশুধু বিরক্ত লাগবে কিন্তু গিয়ে দেখলাম একদম খালি! গিয়েই টিকিট কেটে ফেললাম। হাতে কিছু সময় আছে, ভাবলাম ঘুরাঘুরি করে শপিং করি। আফটার অল শপিং করলে মন ভালো না হয়ে উপায় নেই নিচে নামতে নামতেই ওর নাকি খিদে পেয়ে গেলো।

আবার উপরের দিকে রওনা দিলাম। উপরে উঠতে উঠতে দেখি অপর পাশে দেখলাম পিচ্চি একটা বাচ্চা ছেলে দাড়িঁয়ে আছে। পিচ্চিটা ভীষণ কিউট। এস্কেলেটর দিয়ে নামতে খুবি ভয় পাচ্ছে। ওর বাবা ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে আগেই নেমে গেছে।

আশেপাশে আর কাউকে দেখলাম না। বাবা বললো, নেমে আসো। পিচ্চি বলে, আব্বু ভয় লাগে। ওর কথা শুনতে আর ওকে দেখতে ভীষণ মজা লাগছিলো। একবার পা বাড়ায়, আবার ভিতরে নিয়ে বলে, আব্বু ভয় পাই।

ও এমন করতে করতে আমি উপড়ে এসে পড়লাম। আমার বোন বলছিলো তুই কি ওকে নিয়ে যাবি...আমি ততক্ষণে পিচ্চিকে কোলে নিয়ে সিঁড়িতে উঠে গিয়েছি। পিচ্চি ভীষণ অবাক হয়ে আমার দিকে অপলক তাকিয়ে রইল। পিচ্চিকে দেখে এত্ত মায়া লাগলো। ইচ্ছা করলো গালে টিপে আদর করে দেই কিন্তু দিলাম না যদি চিৎকার করে কেঁদে দেয় মানুষ ভাববে ছেলেধরা!!! আরও মজার লাগলো পিচ্চির আর আমার পোশাকের রং মিলে গিয়েছে! দু'জনেই চকোলেট কালার পড়া।

পিচ্চির সাহস যাতে বাড়ে তাই কোল থেকে নামিয়ে সিঁড়িতে দাঁড় করিয়ে দিলাম। তখন ওর বাবা দেখলো, দেখে নিচ থেকে শিখিয়ে দিলো, বাবা, থ্যাংক য়্যূ বলো। পিচ্চি সিঁড়ির হাতল ধরে খুব কিউট করে বললো, থ্যাংক য়্যূ... আমার ইচ্ছা করলো ওকে কাঁচা খেয়ে ফেলি! তখন দেখলাম ওর মা এসেছে। সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে বললো, থ্যাংক য়্যূ। বললাম, ঠিক আছে ও তো ভয় পাচ্ছিলো।

আমার কি হলো! আমি এস্কেলেটর দিয়ে পুরোপুরি নিচে না নেমে ঘুড়ে উপরে উঠা শুরু করলাম। মহিলা ভীষণ অবাক হয়ে গেলো আর আমার বোন উপর থেকে বলছে, এই তুই কি করিস পড়ে যাবি তো! হিহিহি...আমার ভীষণ মজা লাগছিলো এভাবে উঠতে। এভাবে উঠায় দারূণ মজা। খুব রিস্কি কিন্তু এই রিস্কটাই আসল মজা উঠে অবাক হয়ে হা করে থাকা মানুষদের আরও অবাক করে দিয়ে হাহাহা... করে হেসে দিলাম। অনেকদিন পর এভাবে প্রাণ খুলে হেসে মনে হল ভিতরে গুমোট বেঁধে থাকা অনেক কিছু বের হয়ে গেলো! যাক, এখানে আসাটা তাহলে স্বার্থক হলো! উঠার সময় আমার অনেক সাধের নতুন জুতোয় খোঁচা লেগে উঠে গিয়েছিলো।

কিন্তু আমার মনে হয়েছিলো এমন জুতা আমি অনেক কিনতে পারবো কিন্তু সেদিনের ঐ পিচ্চিটায় অবাক চাহুনী, ঐ হাসিটা, ঐ মজাটা, ঐ অভিজ্ঞতাটা অমূল্য ছিলো! [সংবিধীবদ্ধ সর্তকীকরণ: এস্কেলেটরে উল্টোভাবে উঠা-নামা করায় ভয়ানক দুর্ঘটনার আসংঙ্কা রয়েছে]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।