আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিচ্চি বেলার পিচ্চি কাহিনী

পিচ্চি পাচ্চাদের কে না ভালবাসে, তবে আমি মনে হয় একটু বেশিই ভালবাসি। বাচ্চা কাচ্চা দেখলে আমার কোলে নেওয়া লাগবেই। এই উছিলায় ট্রেনের ভেতর কত বাচ্চার মায়ের সাথে যে আমার পরিচয় হয়েছিল তা আমি নিজেও জানিনা । একবারতো এক বাবু তার মায়ের নাম্বার আমাকে দেবেই দেবে কিন্তু তার বাবা বড্ড বেরসিক হওয়ায় সেটা আর সম্ভব হয়নি। এই পিচ্চিরা কতো নিস্পাপ, কতো সহজ সরল , কতো সুন্দর দেখলেই মন ভালো হয়ে যায় ।

কতো সুন্দর ভাবে তারা তাদের মনের কথা প্রকাশ করে ফেলে, তাদের মধ্যে পুরুষ নারী সম্পর্কে কোন জটিলতা নেই, কোন হিংসা নেই, নেই কোন কুটিল চিন্তা ভাবনাও আসলেই তারা কত্ত সুখী । এদের কিছু কাজকর্ম আসলেই আমাদের অনেক আনন্দ দেয় আবার অনেক বিব্রতকর অবস্থাতেও ফেলে দেয় এইরকম কিছু ঘটনাই আজ আমি আপনাদের বলব যেগুলোর কোন কোনটিতে নায়ক আমি নিজেই আবার কোন কোনটিতে আমি দর্শক । আমি যখন ৬ কি ৭ বছরের তখন গোপাল ভাঁড় শেষ করে আব্বুর সাথে বেল কুমার বইটা কিনতে লাইব্রেরীতে গেলাম । বই টই না পড়ার কারনে আমি আব্বুর প্রতি সবসময় বিরক্ত ছিলাম। সেদিন আমার জেদ চেপে বসলো, মনে মনে বললাম আজ আব্বুর জন্য একটা বই কিনতেই হবে।

লাইব্রেরীতে অনেক খুঁজে খুঁজে আব্বুর জন্য একটা বই পছন্দ করলাম। বেল কুমার কেনার পরে আব্বুকে সবব্জান্তার ভঙ্গিতে বললাম "আব্বু আপনি এই বইটি নেন তাহলে অনেক কিছু শিখতে পারবেন। " আমার নির্দেশিত বইটির দিকে তাকিয়ে দোকানদার হতভম্ব হয়ে হাসি লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা হিসাবে একটা কাশী দিল আর আব্বু এদিক ওদিক তাকিয়ে আমাকে বলল "আব্বু আজ থাক আর একদিন দেখা যাবে"। কথায় কথায় বইটার নামই তো বলা হলনা, বইটার নাম ছিল "স্ত্রীকে সুখী রাখার উপায়"। যখন আর একটু ছোট ছিলাম আমি কিছুতেই "র" উচ্চারণ করতে পারতামনা।

আম্মু আমাকে যতোই পড়াত "র তে রানী" আমি ততোই পড়তাম "নও তে নানী" । আব্বুর রুনু নামে এক বন্ধু ছিল যে কিনা মাঝে মাঝেই আমাদের বাড়িতে আসত আর সবসময়ই আমার জন্য চকলেট ,বিস্কুট ইত্যাদি নিয়ে আসত । এইজন্য তিনি আসলেই আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে তার সাম্নেই আব্বুকে বলতাম " আব্বু! আব্বু ! নুনু আংকেল এসেছে!! নুনু আংকেল এসেছে !!! " আমার থেকে ১৫ বছরের ছোট একটা বোন আছে যাকে আমি জন্মের পর থেকে সবসময় কোলে নিয়ে ঘুরতাম, কেউ চাইলেও সহজে দিতামনা। একদিন আমাদের ভাড়াটিয়ার ৪ বছরের পোলা আজম আমাকে বলল " বাবুকে একটু দেননা আমি কোলে নেয়" । আমি ধমক মেরে বললাম "যাও বাড়ি যাও, তুমি বাবু কোলে নিতে পারবেনা " ।

রাগে ফুলতে ফুলতে সে তার মাকে যেয়ে বলল "মা তুই আজকেই আব্বাকে বলবি কালই যেন আমাকে আন্টির মত একটা বাবু এনে দেয়!!" আজমের বাবা অবশ্য কথা রেখেছিল তবে সেটা ২ বছর পর । আমার এক ভাগ্নে আছে বয়স তখন ১১ - ১২ হলেও বুদ্ধি ছিল ৫-৬ বছরের বাচ্চাদের মত। মাঝে মাঝে আমি তাকে পড়া দেখিয়ে দিতাম আর উপদেশ খয়রাত করতাম । একদিন পড়ানোর মাঝে সে বলল "মামা আমি প্রসাব করবো"। আমি উপদেশ খয়রাতের সুযোগ পেয়ে বললাম "ভাগ্নে প্রসাব শেষে অবশ্যই পানি নেবা কিন্তু" ।

ভাগনে টয়লেটে গেলে আমি আপার সাথে বসে টিভি দেখছি, কিছুক্ষণ পর ভাগনে এসে বলল "মামা একটা কথা বলি?" আমি বললাম "বল" "আচ্ছা মামা প্রসাব করার পরে পানি কোথায় নেয় ???" বাচ্চা পোলাপানরা কত মজার মজার খেলা খেলে, আমিও খেলতাম । রাজা-প্রজা , ডাক্তার- ডাক্তার , বিয়ে বিয়ে, বৌ তোলা , সিন্দুর টোকা আরও কত্ত কি। এইরকমি একটা খেলা আমার এক বন্ধুর ভাইপো আর ভাইঝি খেলছিল, আমি ড্রয়িং রুমে বসে তাদের খেলা দেখছিলাম । ভাইপো কাশতে কাশতে ভাইঝিকে বলল "ডাক্তার সাহেব, ডাক্তার সাহেব দেখেনতো আমার কি হয়েছে ?" ভাইঝি তার হাত টাত ধরে বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষা করে বলল "আপনার এইডস হয়েছে !!" ভাইপো চমকাবার ভান করে বলল "এইডস হয়েছে !!" বুদ্ধিমতী ভাইঝি ছিনেমার স্টাইলে বলল "কোন চিন্তা নেই , এই নিন দুই প্যাকেট কনডম, সকাল বিকাল দুই বেলা করে খাবেন দেখবেন এইডস সেরে যাবে"!!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।