আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জয়েন্ট স্টকে জালিয়াতি চক্র সক্রিয়



তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের জয়েন্ট স্টকে জালিয়াতি চক্র সক্রিয়। বছরে প্রায় অর্ধশত জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। এনজিওগুলোর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ জালিয়াতি ধরা পড়ে। ভুয়া সিল ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে স্বাক্ষর দিয়ে এই চক্রটি আদালতেকেও ধোঁকা দিচ্ছে। জয়েন্ট স্টকের রেজিষ্টার এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিষ্টার আহামেদুর রহিম ইনকিলাবকে বলেন, দেশের সব জায়গাতেই প্রতারক ও জালিয়াত চক্র বিদ্যমান। জয়েন্ট স্টকে এর মাত্রা খুবই ভয়ঙ্কর। প্রতি মাসে কমপে দুই থেকে তিনটি এমন প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ছে। এরজন্য গ্রাহকদের সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এসব কাজের জন্য অভিজ্ঞতা বা শিার প্রয়োজন হয়না।

জয়েন্ট স্টক কোম্পানির আশাপাশেও এমন অনেক প্রতারক ও জালিয়াত চক্রের সদস্য থাকতে পারে বলে তিনি স্বীকার করেন। তার কথা মতে রাজধানীতে শতাধিক এমন সংস্থা সামাজিক সংগঠনের নামে বানিজ্যিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। সূত্রমতে, ওয়েস্টমন্ট পাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সঙ্গে ব্যবসায়িক বিরোধে জড়িয়ে পড়ে হারুন-আর রশিদ ভূয়া কাগজ-পত্র বানিয়ে কোম্পানি হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। তবে তাজুল ইসলামের প থেকে জয়েন্ট স্টকে অভিযোগ করা হলে তা তদন্ত করা হয়।

কাগজ-পত্র পরীা করে দেখা যায়, ওয়েস্টমন্টের মালিকানা পরিবর্তন করার যে দলিল প্রস্তুত করা হয়েছে তার সবই ভুয়া। এমনকি জয়েন্ট স্টকের যে ইস্যু নম্বরটি দেখানো হয়েছে তাও ভূয়া। জয়েন্ট স্টক কোম্পানির একটি উর্ধতন সূত্র জানায়, রেজিষ্টার আহমেদুর রহিম হারুন অর রশিদকে কোম্পানির চেয়ারম্যান উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তবে জালিয়াতির বিষয়টি বেড়িয়ে আসলে সর্বশেষ ৫ অক্টোবর বাণিজ্য সচিবের কাছে চিঠি লিখে ওয়েস্টমন্ট পাওয়ারের নামে পূর্বে পাঠানো নথিপত্র ফেরত চেয়েছেন। জয়েন্ট স্টক সূত্র জানায়, অনেক এনজিওর ঠিকানা অনুযায়ী অফিস খুঁজে পাওয়া যায় না।

আবার অনেক এনজিও নীতিমালা ভঙ্গ করে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে। এরমধ্যে নিবন্ধন বাতিল হওয়া বাংলাদেশ-নাইজেরিয়া ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন, আঞ্জুমান-ই-ইত্তেহাদ বাংলাদেশ, নামের এনজিও দুটি সামাজিক কর্মকান্ডের অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক কাজের জন্য জয়েন্ট স্টকের কাগজ পত্র ও রেজিষ্টারের স্বার জাল করে ব্যবসা করে আসছিল। জয়েন্ট স্টকে এমন অভিযোগ আসলে তা খতিয়ে দেখা হয়। তদন্ত শেষে এনজিওটির ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্পূর্ণ অবৈধ ও কাগজপত্র ভূয়া প্রমাণিত হয়। জয়েন্ট স্টক কোম্পানির অফিস টিসিবি ভবনেই এমন কনসালটেন্ট ফার্ম আছে যারা ভুয়া কাগজ পত্র বানিয়ে ব্যবসা পরিচালনার সনদ তৈরি করে থাকেন বলে জানা গেছে।

ইসলামী সমাজ কল্যাণ সমিতি নামের অপর একটি এনজিও তাদের নামে বেনামে বুটিক হাউস, ফ্যাশন হাউস খোলে দেশের বিভাগীয় শহরে ব্যবসা করে আসছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনজিও ব্যুরোর তথ্যমতে এটি একটি সামাজিক সংগঠন কিন্তু অবৈধভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালানা করে আসছিল। এরজন্য বাবুল কনসালটেন্সি নামের একটি ফার্মের সহায়তায় তারা জয়েন্ট স্টকের কাগজ পত্র নকল করে জাল ব্যবসায়িক সনদ নিয়ে ব্যবসা করে আসছিল। পরে আয়কর দেওয়ার জন্য এনবিআর থেকে চিঠি দেওয়া হলে এনবিআরকে জানানো হয়, এটি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এনবিআরের সন্দেহ হলে জয়েন্ট স্টকের কাছে প্রতিষ্ঠানটির কাগজ পত্র চাওয়া হয়।

জয়েন্ট স্টক থেকে জানানো হয় ইসলামী সমাজ কল্যাণ সমিতি নামের কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের কাছ থেকে সনদ নেয়নি। পরে তদন্ত করে দেখা যায়, এনজিওর নাম করে জালিয়াতির পথ বেছে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে ব্যবসা করে আসছিল এবং সরকারকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছিল। জয়েন্ট স্টকের রেজিস্টার (যুগ্মসচিব) আহমেদুর রহিম বলেন, ওয়েস্টমন্ট পাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে মো. হারুন অর রশিদ যেসব কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেছে তা সবই ভূয়া। এগুলো জয়েন্ট স্টক থেকে দেয়া নয়। তার স্বাক্ষর জাল করে ওই ভূয়া কাগজ ও দলিল তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

আহমেদুর রহিম বলেন, হারুন অর রশিদ তার কোম্পানি জয়েন্ট স্টকে যে নম্বরে ইস্যু দেখিয়েছেন ওই নম্বরে এ ধরণের কোন কোম্পানি নেই। হারুন অর রশিদের ইস্যু করা কোম্পানির ইস্যু নম্বর ৬১৯। তবে রেজিস্টার জানান, ওই নম্বরে অন্য একটি কোম্পানি ইস্যু করা আছে। ওয়েস্টমন পাওয়ারের ভূয়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জয়েন্ট স্টকের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রেজিস্টার বলেন, বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন। তাই এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আমাদের নেই।

বিষয়টির সুরাহা এখন আদালতের ওপর নির্ভর করে। মাঝে মাঝে এ ধরণের জালিয়াতির অভিযোগ তার কাছে আসে বলে জানান তিনি। রেজিস্টার বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ ফারুক খান কোম্পানির মালিকানা দাবিকারী উভয় পক্ষের বক্তব্য নিতে (হিয়ারিং) বলেছেন। গত সপ্তাহে হিয়ারিং নেয়া হয়েছে। ###


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.