প্রিয় শাহরুখ খান,
আপনাকে দেখলে এখন আমার সোহাগের কথা মনে পড়ে। আমার বন্ধু সোহাগ। একটা সময় সোহাগকে দেখলে আপনার কথা মনে পড়ত। আপনার মতো চুলের কাট করা ছেলে আপনার নামে মেয়েদের চেয়ে বেশি আনন্দিত হতো। তাকে আপনার মতো লাগছে বলে জীবনে কত কিছু যে তার কাছ থেকে খেয়েছি তার ইয়াত্তা নেই।
সে হিসাব করার দরকার ছিল এ সময়। কিন্তু সেটা করা যাচ্ছে না কারণ এ লেখা সোহাগ পড়লে টাকা ফেরত চাইতে পারে।
ইদানীং সে চাকরি-বাকরি ছেড়ে দিয়েছে। আমাকে প্রায়ই ফোন দেয় জরুরি কথা আছে। তাই টাকা-পয়সার কথা এখন না বলাই ভালো।
কারণ এতদিন জরুরি কথার অজুহাতে ফোন দিলেই টাকা চাইতো আর এখন এ লেখায় টাকার কথা উল্লেখ থাকলে সরাসরিই টাকা চেয়ে বসবে।
আমার আরেক বন্ধুর কথাও বলি আপনার বাদশাহ ছবি মুক্তির পর সেও নিজের আসল নাম বাদ দিয়ে বাদশাহ বলে প্রচার করত এলাকায়। বেশ প্রচারও পেয়ে গিয়েছিল সে বাদশাহ নামে। পরে একটা সময় এলাকার এক পাতি মাস্তানের নাম বাদশাহ হওয়ায় নিজেকে পুরনো নামে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এক ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ এসে তাকে পাতি নেতা বাদশাহ মনে করে পুলিশের পিকআপ ভ্যানে প্রায় তুলে ফেলেছিল।
কিন্তু কাকতালীয়ভাবে ওই সময় ওই রাস্তা দিয়ে আসল বাদশাহ যাওয়ায় সে যাত্রায় আমার বন্ধু রক্ষা পেয়েছিল।
এবার আমার কথা বলি, একটা সময় আপনি আমারও বেশ প্রিয় ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে আমার পছন্দের নায়িকাদের সঙ্গে, বিশেষ করে মাধুরীর সঙ্গে ছবিগুলোতে অতি বেশি রোমান্টিক অভিনয় করায় আপনি ক্রমশ আমার চক্ষুশূল হয়েছিলেন। কিন্তু আমার কি আর মাধুরীর সঙ্গে প্রেম মানায়? আমার কি আর আপনার সঙ্গে বিরোধ মানায়। আপনি সুখী হলেন গৌরী খানকে নিয়ে।
আর মাধুরী চলে গেল আমার হƒদয় ভেঙে হƒদরোগ বিশেষজ্ঞ আমেরিকা প্রবাসী ডাক্তার শ্রীরাম নেনের হাত ধরে।
যাক ওসব বাদ দেই। এর পর আপনি আবার আমার কাছে আগের অবস্থানে ফিরে এসেছিলেন প্রায়। কিন্তু শেষ এক ঘটনায় তা আবার খারাপ হয়ে গেল।
এক মেয়ের জন্য আমি যখন রাস্তায় অপেক্ষায় থাকি, তখন সে মেয়ে বাসায় বসে থাকে আপনার জন্য।
নানান চ্যানেলে আপনার ছবির অপেক্ষায় থাকে। আমি যখন হাতে তার জন্য গোলাপ ফুল নিয়ে থাকি সে তখন হাতে ভিডিও ক্যাসেট নিয়ে বাসায় ফেরে। আমার গোলাপ এবং আমি তখন তার কাছে তুচ্ছ। তার চেয়ে বেশি প্রিয় হয়ে গেল আপনার ছবি সাপ্লাই দেয়া ভিডিওর দোকানদার।
তাও নানা ছলছাতুরী, আপনার পোস্টার দিয়ে তার মন আংশিক জয় করে ফেললাম একটা সময়।
তার জন্য ওই ভিডিও ক্যাসেটের আমলে ১৩০০ টাকা খাইয়ে ফেললাম নানান ফাস্টফুডে।
একটা সময় সে বেঁকে গেল, না তোমার মতো বাংলা ছবির ভিলেন দিয়ে আমার চলবে না। আমার শাহরুখরে চাই, না হলে ন্যূনতম শাহরুখের ছবি দিতে পারে এমন ভিডিও দোকানদার।
কপালের ফের আপনার মতো হতে পারব না জানি কিন্তু ভিডিও দোকানদার তো হতে পারব? সেই অনুযায়ী যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম তখন আপনার দিল তো পাগল হ্যা মুক্তি পেল। আর সেই ভিডিও ক্যাসেট উপহার দিয়ে বালিকার দিল জিতে নিল সেই ভিডিও দোকানদার।
আমি তখন দিল ছাড়া পাগল হ্যায়ের অবস্থায়। ভিডিওর যুগ ফেলে এখন ডিভিডির যুগ। কিন্তু এখনও সে ক্ষত শুকায়নি।
যাই হোক, এখন আসল কথায় বলি। আপনি দেশে আসছেন ওই মেয়েরে তো ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।
সেই মেয়ের পেছনের খরচ হওয়া আমার ১৩০০ টাকা দেন।
টাকাটা আমার দরকার।
পুনশ্চ : জানি কাল আসছেন। যদি নগদ টাকা দিতে না পারেন, আপনার কনসার্টের একটা টিকিট দেন। বাকি টাকা অন্য সময় এলে আমি ফেরত দিয়ে দেবো নে।
আরেকবার পুনশ্চ : শাহরুখ সাহেব আমার এই চিঠির উদ্দেশ্য আপনার কনসার্টের টিকিট চাওয়া, এমন ভ্রান্ত আবার মনে পুষে রাখবেন না। আমি চাইলে এমনি যেতে পারি। কিন্তু নিজের টাকায় আমার এক সময়ের শত্রুর কনসার্ট দেখার ইচ্ছে করছে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।