নিজের বিষয়ে কিছুই বলিবার নাই
আসসালামু আলাইকুম,
ক. আমাদের এই দেশে কিছু-কিছু বিষয় লইয়া মুখ খুলিলেই পাপী হিসাবে পরিগণিত হইতে হয়। তাহার একটি হইতেছে গ্রামীণ ব্যাংক আর ইউনুস সাহাব। ইউনুস নবীকে সমালোচনা করা যাইতে পারে কিন্তু গ্রামীণের ইউনুসকে করা যায় না। কেন যায় না? একদল সুশীল, যাহারা আদতে গ্রামীনের ক্ষুদ-খুড়া খাইয়া লালিত-পালিত হইতেছেন আর যাহারা ভবিষ্যতে সেই খুদের আশায় রহিয়াছেন--এই দুইটি দলেররই ক্ষমতা অনেক। বিশেষ করিয়া জ্ঞানী আর সৎ মানুষের মুখোশ পড়িয়া তাহারা আমাদিগকে থামো-থামো -থামো বলিয়া যখন-তখন উপদেশ দান খয়রাত করিতেছেন।
খ. ইউনুসের সহিত নরওয়ের সম্পর্কের বিষয়টি সাধারণ মানুষের নিকট নতুন মনে হইলেও উহাদের লাভ-লোকসানের সম্পর্ক আজ নতুন নহে। গ্রামীণ ফোন দেশের ফোন--- গ্রামের গরীব মানুষের ফোন--দেশের টাকা দেশেই থাকিতেছে---এইরকম একটা প্রচারপত্র নিয়া মাঠে নামিলেও মানুষের জানিতে বাকীন নাই যে এই গরীবী-ফোনের কতো অংশ টেলনরের আর কতো অংশ গ্রামীণের? এইসব কথাও নতুন নহে।
গ. গত মঙ্গলবার নরওয়ের সরকারী প্রচারমাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংক-গ্রমীণ কল্যাণের ফাক-ফোকার নিয়া ডকুমেন্টারি প্রচারিত হইলে আমাদের দেশের প্রচার-মাধ্যমের একটি অংশ গভীর নীরবতা পালন করিতে থাকিলো আর একটি অংশ উৎসাহ নিয়া তাহা প্রচার করিতে কোমড় বাধিল।
নীরব-অংশ কাহারা প্রথমে ঠিক-ঠিক বুঝিতে পারি নাই। তবে আজ এটিএন-নিউজে মুন্নী সাহার সহিত মাহফুজ আনামের একটি সাক্ষাৎকার দেখিয়া তাহা মালুম হইলো।
ঘ. এতোদিন দেখিতাম আমাদের দেশের রাজনীতিবিদগণ যত্রতত্র সৎ সাংবাদিকতার নসিহত করিতেন। এইবার দেখিলাম সাংবাদিক হইয়া জনাব মাহফুজ আনাম সেই দায়িত্ব পালন করিতে উঠিয়া-পড়িয়া লাগিয়াছেন। তিনি বারবার সাংবাদিকের নৈতিকতা নিয়া গলা ফাটাইতে ছিলেন। আর এইটাও তিনি গোপন করেন নাই যে ইউনুস বিষয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করিয়া আমাদের সাংবাদিকগণ সুবুদ্ধির পরিচয় দ্যান নাই। মাহফুজ সাহাবও যে সৎ সাংবাদিতার, সংবাতপত্রের সুবুদ্ধির একজন নির্ভরযোগ্য এজেন্ট---তাহা জানা ছিলো না।
তাহার অভিযোগ এইটি প্রচার করিবার পূর্বে গ্রামীণ ব্যাংকের নিকট সাংবাদিকদের যাওয়া উচিত ছিলো---তাহার কথা বলিবার সুযোগ দিতে হইতো। মুন্নী সাহা যখন বলিলেন তাহাদের নিকট যাওয়া হইলেও তাহারা কিছু বলিতে অস্বীকৃতি জানাইয়াছেন এমনকি যাহারা এই প্রামাণ্যচিত্রটি দেখাইয়াছেন তাহারাও ৬ মাস অপেক্ষা করিয়াও ইউনুস নবীর নিকট হইতে কোনো উত্তর পান নাই। মাহফুজ আনাম তখন বলিলেন গ্রামীণের সকল তথ্যই তাহাদের ওয়েব সাইটে রহিয়াছে---তাহাদের নিকট তো যাইবার প্রয়োজন নাই!!!!!!! বাহারে বাহারে বাহা....মাহফুজ আনাম.....আপনি এক মুখে কয় রকম কথা বলিবেন!!!!! একবার বলিলেন গ্রামীনের নিকট যাওয়া প্রয়োজন আবার বলিলেন গ্রামীণের সকল তথ্যই ওয়েবসাইটে রহিয়াছে!!!!
ঙ. আমাদের দেশের সাংবাদিকগণের সততা নাই...মাথায় ঘিলু নাই...দেশপ্রেম নাই....কোনটা প্রকাশ করা উচিত কোনটা উচিত নহে সেই বিষয়ে জ্ঞান নাই---এইসব কথা এতোদিন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীগণের মুখে শুনিতে অভ্যস্ত ছিলাম...এইবার ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনামের মুখে শুনিয়া জ্ঞান বৃদ্ধি পাইলো। কী জ্ঞানা বৃদ্ধি পাইলো??
বুঝিলাম সততার বন্ধু বলিতে কেহই নাই। কোনো রিপোর্ট আমার পক্ষে যদি যায় তবে তুমি সৎ সাংবাদিক আর আমার বিরুদ্ধে যদি যায় তবে তুমি মূর্খ সাংবাদিক।
তোমার আত্মসুদ্ধি প্রয়োজন।
জনাব মাহফুজ আনাম!!!! অনেক হইয়াছে। বোধকরি একটু বেশি হইয়াছে। আমাদের আর জ্ঞান দিবার প্রয়োজন নাই। দেশের জনগণ এখন অনেক কিছুই বুঝিতে পারে!!!!
চ.আপনার পিতা পাকিস্তান জামানায় রবীন্দ্রনাথের গীত নিষিদ্ধ করিবার জন্য সাফাই গাহিয়া পত্রিকায় বিবৃতি দিয়াছিলেন তাহার সহিত আরও ৪০ জন সৎ মানুষ একই কান্ড করিয়াছিলেন।
তিনি কেন এই কাান্ড করিয়াছিলেন তাহা সেইদিন যেমন কাহারো বুঝিতে বাকী ছিলো না তেমনি আপনি গলার শিরা ফুলাইয়া কেন গ্রামীণের পক্ষে সাফাই গাহিতে গিয়া দেশের সাংবাদিকদের নীতি-নৈতিকতা নিয়া ওয়াজ-নসিহত করিতে থাকিলেন---তাহাও বুঝিতে আমাদের বাকী নাই। এখন কথা হইতেছে আপনাদের ওয়াজের তাৎপর্য আমরা বুঝিতে পারি আপনারা কবে আপনাদের কথা বুঝিবেন?
পরম করুণাময় আমাদিগকে সহজ সরল পথে অগ্রসর হইবার তাওফিক দিন।
সকলে ছহি-ছালামতে থাকিবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।