রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই
ডাক্তারদের নোকরামী।
আমি আসলে এর থেকে আর ভদ্রভাষার কোনো শব্দ খঁজে পেলাম না আমার পোস্টের শিরোনাম দেওয়ার জন্য। বাংলাভাষায় আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞানের জন্য আমি লজ্জ্বিত। ডাক্তারী সমাজে এক মহান পেশা। ছোট বেলাতে আমরা জীবনের লক্ষ্য কিংবা Aim in Life রচনা লিখতে গিয়ে যা যা শিখেছি, বাস্তব জীবনে তার প্রতিফলন দেখি না খুব একটা।
খুব ছোটখাটো কিছু ঘটনা, আমার পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নানা কারণে নানা সময় ডাক্তারের কাছে গিয়েছি। কিছু কিছু ঘটনা না বললেই নয়।
চট্টগ্রামের CSCR একটা বেসরকারী ডায়াগনস্টিক সেন্টার কাম মিনি ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বার। এই খানে অধিকাংশ ডাক্তারের সিরিয়াল পেতে রীতিমত কপাল লাগে। আমার মাকে একবার ৩ দিন চেষ্টার পর সিরিয়াল নিতে পারলাম।
কারণ, ডাক্তারদের সিরিয়াল সকালে দেওয়া হয়। ফোনে কোনো সিরিয়াল দেওয়া হয় না। ( ফোনে সিরিয়াল দিলে সমস্যাটা কোথায়? হোক না সেটা ২ দিন পরে। )
যে ডাক্তার যত বেশি জনপ্রিয়, সেই ডাক্তারের সিরিয়াল নিতে তত আগে যেতে হয়। গত শীতে ভোরে ফজরের আজান দেওয়ার আগে গিয়েও সিরিয়াল পাই নাই, এমনও হয়েছে।
ডাক্তারদের রোগীদেখারও একটা লিমিট আছে, দিনে হয়ত ২০ জন দেখবেন। দেখাগেল, ঐ ডাক্তারের সিরিয়ালের জন্য ৩০ জন লাইন দিলো সকালে, ২০ জন নাম্বার পেলো, বাকী ১০ জনকে পরেরদিন আবার কাক ডাকার আগে যেতে হবে। (এটা কি ডাক্তারদের নোকরামী না?যারা গেল, সবাইকে সিরিয়াল দিলে ডাক্তারের কি সমস্যা? কেন খামাকা পরের দিন আবার যেতে হবে?)
আবার এমন ডাক্তারও দেখেছি, সপ্তাহে ১ দিন সিরিয়াল দেয়, বাকি ৭ দিন ধরে আর কোনো সিরিয়াল দেন না। এটা আরো পেইনফুল। এক এসিস্ট্যান্টকে জিজ্ঞাসা করলাম, কোনো রোগী যদি সিরিয়াস অবস্হা হয়, তাহলে কি হবে? সোজা উত্তর, তাহলে রোগীকে ক্লিনিকে ভর্তি করান।
ডাক্তারকে কল করুন, তখন উনি যাবেন।
যাই হোক, আম্মাকে ডাক্তার দেখিয়ে যখন বের হলাম, তখন রাত ১২টা ২০মিনিট। শীতকাল ছিলো। তখন দেখলাম CSCR মেইন গেইটে ৪-৫ জন মানুষের জটলা, তারা সিরিয়ালের জন্য লাইনে দাড়িয়েছেন। (ডাক্তারের সিরিয়াল দেওয়া হবে পরের দিন সকাল ৮টা বাজে।
)
আমি নিজেও ভুক্তভোগী, তাই কৌতুহল দমাতে পারলাম না। জিজ্ঞাসা করে যা জানলাম, ২ জন গত ২দিন ধরে ব্যর্থ হয়ে ১২ টায় লাইনে দাড়িয়েছে। ১ জন আবার আনোয়ারা থেকে এসেছেন, হোটেলে উঠেছেন।
প্রথমদিন অনেক কাকুতি মিনতি করেও সিরিয়াল পান নাই।
এইবার ঢাকার কথা বলি।
এক ফুফু কমপ্লিট প্যারালাইজড, কথাও বলতে পারেন না, শুধু চোখ মেলে তাকানো ছাড়া, বিছানার এপাশ ওপাশ করতে পারেন না।
ডাক্তার দেখাবে, মগবাজারে ঐ ডাক্তারের চেম্বার। ফুফাত ভাইয়ের বাসা মৌচাক। ভাই অনেক রিকোয়েস্ট করল ডাক্তারকে, তার গাড়ীতে করে নিয়ে যাবে, নিয়ে আসবে। রোগীকে একটু দেখে আসার জন্য।
ডাক্তারের যখন সময় হয়, চেম্বারে ঢুকার সময়, কিংবা বের হওয়ার সময়। কতটুকুই বা রাস্তা। ডাক্তার এর বিনিময়ে যতই দাবী করুক, ভাই দিতে রাজী।
কিন্তু ডাক্তার রাজী না। এতে ডাক্তারের আত্মসম্মানে লাগবে।
রোগীর বাসায় ডাক্তার যাবে না। শেষ পর্যন্ত এম্বুলেন্সে করে রোগীকে মগবাজারে ক্লিনিকে ভর্তি করা হলো, একরাত থাকতেও হলো, শুধুমাত্র ডাক্তারকে ৫ মিনিট দেখানোর জন্য।
এই গুলো কি ডাক্তারদের নোকরামী নয়?
উপরে যেসব ঘটনা বললাম, সবগুলোর প্রত্যক্ষদর্শী আমি। আমার যেটা মনে হয়, ডাক্তাররা নিজের ডিমান্ড/পপুলারিটি বুঝানোর জন্য এই কাজ গুলো করেন। তারা মনে করেন, যে ডাক্তারের কাছে যত কষ্টে সিরিয়াল নিতে হয়, সেই ডাক্তার তত বেশি অভিজ্ঞ, জনপ্রিয়, ভালো।
আমার ঝুলিতে এই রকম হাজারো অভিজ্ঞতা আছে। পরে শেয়ার করবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।