রাজধানী ঢাকা শহরের যানজট সমস্যার সমাধানের জন্য ও নদী পথকে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষে ইউরোপের দেশ গুলোর মত সরকার ঢাকার চারপাশের বৃত্তাকার নৌ-পথে তিনমাস আগে চালু করেছিল ওয়াটার বাস। অভিনব এ ব্যবস্থা সবার মনে সারা জাগিয়েছিল তখন। কিন্তু মাত্র তিন মাস যেতে না যেতেই সরকারের ওয়াটার বাস প্রকল্পের অবস্থা একেবারে লেজেগোবরে । ওয়াটার বাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থ্রি এঙ্গেল্স এর ইন্জিনিয়ার কামরুল জানান, “বর্তমানে বুড়িগঙ্গা নামের ওয়াটার বাসটি নারায়ণগন্জের ডকে মেরামতে আছে। ” বিপুল লোকসানের খাতায় নামতোলায় সরকার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে সার্ভিসটি।
তবে সরকারী ওয়াটার বাসের পরিবর্তে বেসরকারী খাতে সার্ভিসটি পরিচালনার জন্য আগামী মার্চ মাস থেকে নিটল-নিলয় গুপের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে এর দায়-দায়িত্ব। বেসরকারী উদ্যোগতারা প্রাথমিক ভাবে ভারতের ম্যারেলিন ইন্জিনিয়ারিং ওয়াকার্স থেকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন্ ৬০ সিটের চারটি বাস আমদানী করার জন্য কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আগামী ৬ মাসের মধ্যেই ১০ টি বিলাস বহুল ক্যাটামেরিন নামবে একই রুটে।
বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিইটিসি) তত্বাবধায়নে গত ২৮ আগষ্ট তড়িঘড়ি করে এমভি বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নামে দুটি ওয়াটার বাস গাবতলী-সোয়ারী ঘাট-খোলামোরাÑসদরঘাট রুটে চালু করা হয়েছিল। কিন্তু চালু হওয়ার ৪০ দিনের (৮ অক্টোবর ২০১০) মধ্যে একটি কারিগরি ত্র“টির কারণে একটি বাস নষ্ট গেলে তা কোনমতে চালানোর উপযোগী করা হয়েছিল ।
তবে বর্তমানে গিয়ার ও সার্চ লাইটে সমস্যার কারণে একটি বাস মেরামতে আছে। অন্য বাসটি চলছে কোন মত খুরিয়ে খুরিয়ে।
ওয়াটার বাসের ব্যার্থতার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে , ইন্িজনে সম্যসার কারণে বর্তমানে চালু থাকা তুরাগ বাসটি যাত্রী সময় নিয়ন্ত্রন করে চলতে পারছেনা। প্রথমে একঘন্টা পরপর বাস পাওয়া গেলেও বর্তমানে আড়াই থেকে তিন ঘন্টা লাগছে। ফলে বাসটি কখন কোন ঘাটে পৌছবে তার কোন ঠিক ঠিকানা থাকেনা।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে দুটি বাস পরিচালনার জন্য সরকারের প্রতিদিন খরচ প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা কিন্তু আয় পাঁচ হাজারও না। এছাড়া বাস ভেড়ার জন্য গাবতলীতে নিদিষ্ট জেটি থাকলেও সদর ঘাটে কোন জেটি নেই। ফলে কাঁদা পাড়ি দিয়ে অনেকে বাসে উঠতে চাননা। যাত্রী ছাউনি না থাকার কারণে বয়ষ্কদের বেশ সমস্যাও হয়। বাস দুটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করা হয়নি ফলে সমস্যা রয়ে গেছে শুরূ থেকেই।
উল্লেখ্য গত ২৮ আগষ্ট ২০১০ তারিখে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে,মো আমিনুল ইসলামের নকশা অনুযায়ী তৈরী ৩৮.৩৮ ফুট দৈর্ঘ্যরে এবং ১১.৪৮ ফুট প্রস্থের ৩৫ আসন বিশিষ্ট ঘন্টায় ১২ নটিক্যাল মাইল বা ২২.৪৮ কিলোমিটার গতির দুটি ওয়াটার বাস গাবতলী-সোয়ারী ঘাট-খোলামোরাÑসদরঘাট রুটে নামানো হয়। এতে ২৯৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ছিল যাতে ওয়াটার বাস সার্ভিসটি ডেমরা পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা ছিল।
তবে বেসরকারী উদ্যেগতার কথা শুনে অনেকে আশ্বস্ত হয়েছেন যে এবার পূর্বে সমস্যা গুলোকে কাটিয়ে ভাল একটি সেবা পাওয়া যাবে। বেসরকারী উদ্যোগতারা প্রথমে চারটি ও পরে আরও ১৬ টি সহ মোট ২০ টি বাসের একটি সার্ভিস চালু করবেন বলে জানা গেছে। পর্যাপ্ত বাস থাকার কারণে তখন ১০
মিনিট পরপর বাস ছাড়া সম্ভব হবে বলে দাবি করেছেন তারা।
যেখানে বাস থামবে সেখানে আসা যাওায়ার জন্য আলাদা পরিবহনও থাকবে বলে জানা গেছে। বাসগুলো প্রথমে টঙ্গি থেকে মেঘনাঘাট পর্যন্ত চললেও পরবর্তী সময়ে এর রুট বাড়ানো হবে। তবে ভাড়া নতুন করে বৃদ্ধি পাবেনা । অর্থাৎ আগের মত ৩০ টাকাই থাকবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।