আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আইডিয়া বোর্ড / পরিকল্পনা / টাস্ক ম্যাট্রিক্স

পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি

মাথায় মাঝে মাঝেই নানান চিন্তা আসে। ভালো ভালো আইডিয়া। দেখা যায়, এই ক্ষণে সেই সব নিয়ে বেশি ভাবনা চিন্তা বা কাজ করার সময় নাই/ সময় আসে নাই। ফলে, বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না । কিছু আইডিয়া অনেক বিশাল কিছু নিয়ে।

যেমন, " বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা" কিংবা "স্বাস্থ্য সেক্টর এ রিসার্চের সমন্বয় " ইত্যাদি। আবার কিছু আইডিয়া বেশ ছোট ছোট, যেমন, 'ওষুধ খেতে ভুলে গেলে মনে রাখার সহজ উপায়' কিংবা 'ইলেক্ট্রনিক হেলথ রেকর্ড" । ছোট হোক , বড় হোক, চিন্তা গুলো মাথায় কামাড়াতে থাকে, কিছু না করা পর্যন্ত অন্য কোন কাজে মন দেওয়া দুস্কর হয়ে যায়। এখন ব্লগ লিখার সময় নাই। তাই এই আইডিয়া বোর্ড হিসাবে ব্লগকে ব্যবহার।

যখন যা চিন্তা আসবে, লিখে রাখবো। আরেকটা কারণ হইলো, এই সব চিন্তা থেকে কোন বিজনেস আইডিয়া যদি কেউ বের করে কাজ শুরু করতে পারে তো ," খুব ভালো"! আইডিয়া ১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দৈনিক কাজকর্মকে ডিজিটাইজড করা । এইটা এ আই ইউ বি করে দেখিয়েছে। সুতরাং, সিস্টেম নতুন করে ডেভেলপ বা না কিনলেও চলবে। অন্যান্য ইউনি বা স্কুল কলেজের জন্য স্রেফ কাস্টমাইজড করে নিলেই হবে।

টার্গেট স্কুল হিসেবে ঢাকার স্কলাস্টিকা, আগা খান, রেসিডেন্সিয়াল নেওয়া যায়। টাকা, জ্ঞান ও ইচ্ছা বড় ফ্যাক্টর। রংপুরের একটি স্কুল উপস্থিতি নিশ্চিত করার ডিজিটাল যন্ত্র বসিয়েছে। ইন্টারেস্টিং কিন্তু জরুরী নয়। এর চেয়ে অনেক বেশি জরুরী ছাত্র ছাত্রীদের অনলাইন প্রোফাইল/ একাউন্ট, এসাইন্মেন্ট অনলাইনে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা, রেজাল্ট অনলাইনে দেখা, দৈনিক উপস্থিতি- ক্লাস হইলো কিনা- কে ক্লাসে কেমন করছে - শিক্ষকের কাজ কর্ম ইত্যাদির হিসাব ডিজিটালি সংরক্ষণ।

স্কুলে ভর্তির দিন থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহ , মাসের এবং সাব্জেক্ট প্রতি ছাত্র ছাত্রীদের প্রগ্রেস ডিজিটালি সংরক্ষণ করলে এইটাই বার্ষিক রিপোর্ট কার্ড এবং স্কুল কম্পলিশন শেষে ট্রান্সক্রিপ্ট হিসেবে কাজ করবে। এক্সেল শিটের মত কিছু হলে স্কুলের সার্বিক শিক্ষার বিভিন্ন ইন্ডিকেটরে খুব সহজেই গ্রাফ তৈরী করে দেখা যাবে। এইটা ছাত্র, শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠানের সেলফ ইভ্যালুয়েশনে কাজ করবে। তথ্যের মালিকানা ও নিরাপত্তা এই ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। শিক্ষা মন্ত্রনালয় যেই সব শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য নিয়মিত রিপোর্ট করতে বলে - সে সমস্ত ইন্ডিকেটরের উপরে তথ্য সংগ্রহ ও রিপোর্টের ইলেট্রনিক ব্যবস্থা।

স্কুলে স্কুলে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট এই ব্যাপারে বড় ভূমিকা রাখবে। যে সব স্কুলে এখনো নেই, সে সব জায়গায় ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের সাহায্য নেওয়া যায়। শিক্ষা বোর্ডের ডিজিটাইজেশন অতি জরুরী। আইডিয়া দুই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ডিজিটাইজেশন। এইটা সেক্টরকে অটমাইজেশন করাটা , বিশেষ করে লোকাল লেভেলে অনেক সহজ হবে।

বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে নিবিড় যোগাযোগ, সেন্সিটাইজড হেলথ ওয়ার্ক ফোর্স , প্রচুর অপারেশনাল রিসার্চ , ডাটা সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা , মোবাইল ফোনের ব্যবহার , মোবাইল হেলথ এবং ই হেলথ সংক্রান্ত পলিসি - এই ফ্যাক্টর গুলা সাহায্য করবে। প্রাইভেট সেক্টর অনেক এগিয়ে গেছে । পাবলিক সেক্টর কুম্ভকর্নের ভূমিকা নিয়েছে। টেকনোলজির ব্যবহারে লোকাল গভর্মেন্টের লোক জন যেমন, থানা, ইউনিয়ন, উপজেলা , এমন কি জেলা প্রশাসনকেও উৎসাহী করা সহজ হয়। উপর মহলে না জানাইতে হলে নিজেরা নিজেরা নতুন কোন টেকনোলজি টেস্ট ও করে ফেলা যায়।

ঢাকার মন্ত্রনালয়কে কিছু বুঝাইতে যাওয়া টাফ। এই বাধাটা কেমনে কি করা যায় ভাবতে হবে। মেডিকেল এডুকেশনে রিসার্চ সেন্টার গুলো এগিয়ে আছে (প্রাইভেট)। প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ গুলো পাবলিক মেডিকেল কলেজের রিটায়ার্ড প্রফেসর কিংবা তাদের সমসাময়িক দিয়ে নিয়ন্ত্রিত । ফলে , পাবলিক মেডিকেল কলেজের যেই কুম্ভকর্ন হাল , প্রাইভেটরাও সেই জড়তার পাথরে চাপা পড়েছে ।

ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহারে সবচেয়ে আগে এগিয়ে আসবে মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা । বিশেষ করে যারা হাজারটা ডাটা কালেক্ট করে হয়রান। এর ভিতরে বেচারা স্কুল শিক্ষকেরাও আছেন। মন্ত্রনালয়ের পরিবার পরিকল্পনা কর্মী লেভেল লোক জন কি করবে বুঝা যাচ্ছে না । শিক্ষা ও কম্ফোর্ট লেভেল বিবেচ্য।

প্যারামেডিক, ল্যাব টেকনিশিয়ান, নার্সরা কেমন ভাবে নিবে বুঝা যাচ্ছে না। কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করে যদি কাজ কমে, কষ্ট কমে, সময় বাঁচে - তাহলে উৎসাহ পাবে। এই ব্যাপারে কি করা যায়? ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি , সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে পাওয়ার ফুল বাধা , ঝামেলা তৈরী করবে ডাক্তাররা । ইন জেনারেল, ডাক্তাররা আই সি টি সম্পর্কে বড়ই উন্নাসিক। তবে, নতুন প্রজন্ম যারা কম্পিউটার , ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ইত্যাদির বহুমুখী ব্যবহার আগে থেকেই জানে এবং ডাক্তারী পড়তে ঢুকছে , তারা "কোর ম্যাস" হিসেবে কাজ করতে পারে ।

সবার আগে দেশের বড় বড় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল গুলাকে ডিজিটাইজেশন --- নাকি আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পলেক্স , তারপর আস্তে আস্তে উপরের দিকে? মেডিকেল সাপ্লাইকে সবার আগে ডিজিটাইজড করা দরকার - ড্রাগ, ভ্যাক্সিন, মেডিকেল ডিভাইস , সার্জিকাল ইকুইপমেন্ট - ইনভেন্টরি , সাপ্লাই, ডিমান্ড , এরর রিপোর্ট , এক্সপেন্ডিচার ইত্যাদির ক্ষেত্রে সফট ওয়ার ব্যবহার। বার কোড ব্যবহার। ডিফেক্ট স্টাম্প ( ডিভাইসের ক্ষেত্রে) ব্যবহার। ডিভাইস ব্যবহারের জন্য ট্রেনিং । ওষুধ নীতির মত বাকি মেডিকেল টেকনোলজির জন্য জাতীয় নীতিমালা।

ক্লিনিকাল গাইড লাইন। ইলেক্ট্রনিক হেলথ রেকর্ড। ইলেক্ট্রনিক ইনভেন্টরি রেকর্ড। সারা দেশের হাসপাতাল/ সরকারী ফার্মেসী গুলোকে অনলাইনে সংযুক্ত করা । সারা দেশের সরকারী হাসপাতালে ডেন্টাল ইউনিটের যন্ত্রপাতি, মাল মসল্লার ইনভেন্টরি ও ম্যানেজমেন্ট।

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সাথে এই সব ফার্মেসী এবং হাসপাতাল ইনভেন্টরী গুলোকে অনলাইনে , সেইম সফট ওয়ারের মাধ্যমে সংযুক্ত রাখা । কোথায় কি সাপ্লাই হচ্ছে, খরচ হচ্ছে, নষ্ট ও মেরামত হচ্ছে - তার একটা জাতীয় হিসাব। চিঠি চালা চালি থেকে মুক্তি চাই। আমি তেতুলিয়ায় বসে অনলাইনে কোন ডিমান্ড নোট পাঠালে সেইটা পরের পাঁচ মিনিটে রেড এলার্ট সহ ঢাকার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা যেন দেখতে পায়। বছরের শেষে দুইশ মাইল লম্বা রিপোর্ট লিখতে চাই না ।

বাজেটের আগে একটি " রিপোর্ট বাটনে" ক্লিক করলেই যেন সারা বছরের রিপোর্ট রেডি হয়ে যায় ( যা নিয়মিয় আপডেট হয়েছে প্রতি সপ্তাহে, মাসে)। একটা সিদ্ধান্তের জন্য ৬ মাস অপেক্ষা করতে চাই না । ডিজিটাল সাইনের মাধ্যমে সরকারী সিদ্ধান্ত ৩-৭ ওয়ার্কিং ডে'স এর মাঝে আসা/যাওয়া উচিত। এই ভাবে সাপ্লাই চেইনকে অটোমাইজেশন করা দরকার। টেস্ট কেস হিসাবে ঢাকা মেডিকেল আর ঢাকা ডেন্টাল টার্গেট করা হইলো।

চট্টগ্রাম আর রাজশাহী সেকেন্ড চয়েস। আইডিয়া তিন মেডিকেল এডুকেশন এর সিলেবাসে রিসার্চ মেথোডলজি এবং হেলথ সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট কম্পোনেন্ট ঢুকানো দরকার । প্রতিটা ডাক্তারই পাশ করে একটা সরকারী হেলথ কম্পলেক্স বা প্রাইভেট ক্লিনিক চালায়। নিদেন পক্ষে অন্য কারো ক্লিনিক বা হাসপাতালে কাজ করে। এই সব ক্লিনিক, কমপ্লেক্স, প্যাথ ল্যাব, ও চেম্বার চালাইতে হইলে ডাক্তারী জ্ঞানের পাশাপাশি কিছু ব্যবসা পাতির জ্ঞান লাগে।

সাথে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও সেইটার কর্মীদের নিজেদের সেইফটি, কোয়ালিটি , ক্লিনিকাল গাইড লাইন এর জ্ঞান থাকা লাগে। যন্ত্রপাতি কিনতে আমদানি নীতির জ্ঞান লাগে। সুতরাং একজন ডাক্তার শুধু একজন স্বাস্থ্যকর্মীই না। ক্লিনিকাল ডিসিশনের পাশপাশি তার বিজনেস, ম্যানেজমেন্ট, বাজেটিং , হিউমেন রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিশন নেওয়া লাগে। এই গুলা সম্পর্কে ধারণা , শিক্ষা , প্র্যাক্টিস ছাত্র জীবন থেকেই পাওয়া উচিত ।

চেম্বারের জন্য জায়গা সিলেকশন, পেশেন্ট বেজ, কম্পিটিশন, লেবার মার্কেট , কনজিউমার প্রোফাইল --- জানা উচিত। ( এই ধরনের আইডিয়া ব্লগ আপডেট হতে থাকবে) পুনরায় নিজের ডিব্বায় ফেরত যাইতেছি। মাথা এখন খালি । কি শান্তি । কি শান্তি ।

কি শান্তি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।