আজ থেকে বছর তিন বা তার চেয়ে কিছু বেশি সময় আগের ঘটনা। নতুন একটি টেলিভিশন চ্যানেল অন ইয়ারে আসছি আসছি করছে। কী করে যেনো তাদের মনে হলো, আমাকে এবং আরেকজন সাংবাদিক বন্ধু (তার নাম বলতে চাই না। বর্তমানে তিনি দেশ টিভিতে কাজ করছেন। সামুর ব্লগার) কে তাদের চ্যানেলের জন্য প্রয়োজন।
ইতোমধ্যে সেই টেলি কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে আমাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। আমাদের অজান্তে প্রাথমিক পরীক্ষায় পাশ করে যাই আমরা দু’জন।
এর পর কোনো এক রোজার সময় ইফতারের পরে আমাদের ডাক পড়ে তাদের অফিসে। বেশ কিছু সময় অপেক্ষার পর আমাদের ডাক পড়ে টেলিভিশনের কর্তা ব্যক্তিটির খাশ কামরায়। সেখানে ছিলেন মহা প্রভাবশালী কর্তা, তার ইয়া মোটা বন্ধু এবং রুপবতী এক মহিলা (পরবর্তীতে জেনেছি, ইনি কর্তার বান্ধবী)।
মহিলাকে দেখে এক নজরেই চিনে ফেলি। কিছুদিন আগেও তিনি অন্য এক টিভিতে কাজ করতেন। এখন এই টিভির প্রোগ্রামের দ্বিতীয় প্রধান। আমাদের সাথে কথা বলতে দেরি হবার কারনে কর্তা ক্ষমা চাইলেন। আমাদের নাস্তা দিয়ে আপ্যায়িত করলেন।
টুক টাক কথা হলো। তিনি যা বললেন, তার সার কথা হচ্ছে- আমাদের দিয়ে তিনি তার নতুন চ্যানেলটির প্রোগ্রাম সাজাতে চান। তার বিশ্বাস, আমরা সেটা খুব সফলভাবেই করতে পারবো। টাকা পয়সা (আমাদের বেতন-ভাতা) কোনো সমস্যা না। আপাতত: অর্ধ লক্ষ টাকা করে দেয়া হবে।
গাড়ি থাকবে...ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা যেনো সম্ভব হলে কালকেই জয়েন করে ফেলি। আর টেলিভিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কী কী করা যেতে পারে সে সম্পর্কে একটা লিখিত প্রপোজল ২/১ দিনের মধ্যে নিয়ে আসার জন্যও বললেন তিনি। এখন থেকে আমরা যেনো যে কোনো প্রয়োজনে রুপবতীর সাথে দেখা করি।
বাইরে বেরিয়ে টেনশনে দুটো সিগারেট শেষ করলাম, দু’জনে।
সব্বোনাশ ! অর্ধ লাখ টাকা বেতন ? আবার গাড়ি...। যাই হোক, দু’জনে মিলে আলাপ করে ঠিক করলাম, এক দিন পর আবার আসবো, প্রপোজলসহ। যথাসময়ে আবার গেলাম। এবার আর বেশিক্ষণ বসতে হয়নি। ৪/৫ মিনিটের মধ্যেই রুপবতীর রুমে ডাক পড়লো।
তিনি আমাদের লিখিত প্রস্তাবনাগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়লেন। দু’একটি ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করলেন। আমাদের বেশিরভাগ প্রস্তাবনার সাথে একমত হলেন। আমাদের কফি খাওয়ালেন। আসার সময় যা বললেন...‘আপনারা আপাতত: মাসখানেক আমাদের সাথে কাজ করুন।
স্টেশন চালু হোক। তারপর আপনাদের পারফরম্যান্স দেখে ফাইনাল এপয়েন্টমেন্ট লেটার দেয়া হবে...। ’
রুপবতী বলে কী ? মেজাজ খারাপ করে সেই যে বেরিয়ে এসেছি, আর কোন দিন সেই অফিসমুখো হইনি। ঘটনা এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো কিন্তু হয়নি। মাসখানেক পর মহা জাকজমকের সাথে সেই টিভি চালু হলো।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে তাকিয়ে আছি টিভির পর্দায়। খুব চেনা চেনা মনে হচ্ছে সব কিছু...। আরে তাইতো, এই প্রস্তাবনাগুলোইতো আমরা দিয়েছিলাম সেই রুপবতী মহিলাকে। যার পুরোটাই তিনি মেরে দিয়েছেন এবং হয়তো বাহবাও কুড়িয়েছেন....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।