আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

থানায় একদিন



২০০৯ সালের মাঝামাঝি । আফতাগনগরের বিচ্ছিন্ন প্রান্তরে ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে পরদিন থানায় গেছি অভিযোগ জানাতে । দীর্ঘ সময়ের ধানাই-পানাই শেষে কর্তব্যরত কর্মকর্তা মামলার পরিবর্তে জি.ডি. লিখতে রাজি হলেন । তবে ছিনতাইয়ের অভিযোগ হিসেবে নয় । হারানো জিনিসপত্র উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রার্থনা জানিয়ে ।

ডিউটি অফিসারের আন্তরিক সহযোগিতা আর দক্ষ দিক-নির্দেশনায় (!) বিশ্বাসযোগ্য একটি গল্পও দাঁড়িয়ে গেল । জি.ডি.-র ভাষ্য এত সরল যে থানায় বসেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সমাধানে পৌছতে পারবেন । থানায় এরকম অভিজ্ঞতা প্রথমবারের জন্য অপ্রত্যাশিত হতে পারে, তবে নূতন কিছু নয় । যারা অভিযোগ জানাতে থানায় গেছেন, সবার অভিজ্ঞতা প্রায় সমপর্যায়ের । তবে ‘ছিনতাইয়ের সংবাদ’ পুলিশি মারপ্যাচে কিভাবে ‘হারানো বিজ্ঞপ্তি’ হয়ে যায়, সেটা এই লেখার উপজীব্য নয় ।

থানার ওই অভিজ্ঞতা আমার কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় সেদিনকার জি.ডি. লেখক ডিউটি অফিসারের কারণে । জি.ডি.-র বক্তব্য লিপিবদ্ধ শেষে ওই কর্মকর্তা আমার নাম জিজ্ঞেস করলেন । অভিযোগকারী হিসেবে আমার নাম লিখবেন । পুরো নাম বললাম । “জুনাইদ আহমেদ ।

” তার প্রশ্নসূচক জিজ্ঞাসা, “মোঃ জুনাইদ আহমেদ?” বিনীতভাবে জবাব দিলাম, “নাহ, শুধূ জুনাইদ আহমেদ । ” তিনি বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে আমার দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলেন । তারপর অস্ফুটে বললেন, ”আপনি মুসলমান, আর আপনার নামের আগে মুহম্মদ নাই ??!!” কিছুটা বিব্রত আর অপ্রস্তুত আমি জি.ডি-তে সই করে দ্রুত সটকে পড়লাম । প্রচলিত আছে, “বাঘে ছূলে নয় ঘা, আর পুলিশে ছুলে আঠারো ঘা” । আপাতত আমার জন্য এক ঘা-ই যথেষ্ট ।

এঘটনার পর থেকে কেউ আমার নাম জিজ্ঞেস করলে ডিউটি অফিসারের সেই বিষ্ময়ভরা মুখ সবার প্রথমে মনে পড়ে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.