চুশীল/প্রগুদিশীল/প্রচুদিশীল ব্লগার দ্বারা সাম্প্রদায়িক ঘোষণা করা হয়েছে।
আমাদের এই উপমহাদেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর বাস। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ- খৃষ্টান সব ধর্মের লোক একসাথে মিলে-মিশে বসবাস করার একটা রেওয়াজ চালু আছে। এই সাম্প্রদায়িক সৌহার্দের একটা সুনামও আছে এই অঞ্চলে। স্কুল-কলেজে আমরা হিন্দু-মুসলিমরা একে অন্যের ধর্ম নিয়ে তর্ক/মশকরা করেছি, যার যার ধর্মের সাফাই গেয়েছি, অন্যের ধর্মের নিন্দা করেছি, কিন্তু তা কখনোই সাম্প্রদায়িক চিন্তা-ভাবনার পর্যায়ে যায়নি, একসাথে টিফিন খেয়েছি, একসাথে খেলেছি।
কেউ কাউকে সাম্প্রদায়িক বলেওনি।
সামু ব্লগে আমি যখন প্রথম আসলাম তখন থেকেই দেখলাম রাজনীতি আর ধর্মবিষয়ক পোস্ট বেশি। নাস্তিকদের প্রথম এবং একমাত্র কাজ হল ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা। আর সেই সুযোগে কিছু উগ্রবাদী হিন্দুরাও (যেমন বিপ্লব কান্তি) ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলতে লাগল। কিছু লোক আবার চুশীল এবং প্রগুদিশীল সাজার অভিনয় শুরু করল।
জামাতের বিরুদ্ধে কথা বললেও সেটা ইসলাম-বিরোধীতায় রুপ নেয়। আওয়ামী লীগাররা জামাতের বিরুদ্ধে কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু দুঃখের বিষয়, জামাতের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে কেউ ইসলামের বিরুদ্ধে বললেও তারা বাহ্বা দিয়ে গেছে। আর এই সুযোগটাই নাস্তিক এবং হিন্দু বা অন্যধর্মের বিকৃতমনারা নিয়েছে। অনেকে আবার নাস্তিকতার আড়ালে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বলতে শুরু করে। এতে সমস্যা হলঃ স্কুল-কলেজে ধর্ম নিয়ে ক্যাচালে যারা অভ্যস্ত তারা তাদের পুরোন দিনের তর্ক আবার নতুন করে শুরু করল।
আমিও এতে শামিল হলাম, নাস্তিকদের পোস্ট এবং মন্তব্য দেখলেই আমার মনে হয় সে হিন্দু, নাস্তিকতার আড়ালে সে ইসলামের বিষোদগার করছে। প্রকৃতপক্ষে, ঘটছেও তাই। ফলশ্রুতিতে যা হয়েছে, আমি হিন্দুবিরোধী পোস্ট এবং মন্তব্য করতে লাগলাম যা সাম্প্রদায়িকতার পর্যায়ের বলে বিবেচিত হতে লাগল। এই ব্লগে অনেকে আমাকে সাম্প্রদায়িকও বলে থাকে। কিন্তু কেউ জানে না আমার মধ্যে আসলে কি আছে।
আমার অনেক হিন্দু ফ্রেন্ড আছে, ওদের সাথে আমার সম্পর্ক ভাল। ব্লগে এসে এখন আমার যে অবস্থা, তাতে আমি আমার হিন্দু ফ্রেন্ডের সামনে যেতে লজ্জা পাই। আমার সবসময়ই মনে হয়, সে কি সামু ব্লগে আমার পোস্ট এবং মন্তব্য পড়ে!!! পড়লে তো সে আমাকে খারাপ ভাববে, বা মনে করবে আমি হিন্দু-বিদ্বেষী।
অথচ এই আমি ছোটবেলায় (পঞ্চম শ্রেণীতে) আমার হিন্দু বন্ধুর বাড়িতে প্রথম খেয়ে অনেকের সাথে গল্প করেছিলাম, অন্যের কাছে ভাব নিয়েছিলাম হিন্দুর বাড়িতে খেয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বরস্বতী পূজার সময় জগন্নাথ হলে গিয়ে কপালে টিকা লাগিয়ে নেচেছি।
এখনও হিন্দুদের সাথে ঈদ-পূজায় একে অন্যের বাসায় আসা-যাওয়া হচ্ছে, কার্ড খেলছি, খোশ-গল্প করছি। কই, কোথাও তো বিন্দুমাত্র অসাম্যের চিহ্ন নাই!!!
তাই আমার অনুরোধ, নাস্তিক ভাইয়েরা, আপনারা নাস্তিক থাকেন, নাস্তিকতার বাণী (যদিও কোন রিজিড/ফরমাল আইডিওলোজি নাই) ছড়ান। কিন্তু ইসলাম বা অন্য কোন ধর্মের (যদিও কখনও তা করেন না) বিরুদ্ধে বলতে যাবেন না, এতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়। আপনারা হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ বাড়িয়ে চলছেন এটা মাথায় রাখবেন। বাংলাদেশে কোন রায়ট হলে তা আপনারাই ঘটাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।