আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানবীয় গুণাবলী অর্জনে ধর্মের কোন হাত নেই। ইহা ব্যক্তি, পরিবার, জাতি, এবং ক্ষেত্রবিশেষে দেশের উপরও নির্ভর করে

চুশীল/প্রগুদিশীল/প্রচুদিশীল ব্লগার দ্বারা সাম্প্রদায়িক ঘোষণা করা হয়েছে।

আমি আর শিমুল দুজনই বসে আছি কম্পিউটার নিয়ে। আমি ইউটিউবে পুরনো দিনের বাংলা সিনেমার গান শুনছি, আর শিমুল থিসিস লেখার পাশা-পাশি কবিতা শুনছে। আমার গান শোনা কিন্তু গান-প্রিয়তা বা গান-বোদ্ধা টাইপের কিছু প্রমাণ করার জন্য নয়। হালকা লেখা-পড়া করা, গান শোনা (মূলতঃ মেলোডিয়াস কিছু কানের কাছে বাজলে ভাল লাগে), আর ব্লগ পড়তে পড়তে ভোর ৪ টা বেজে গেল।

মনে পড়ে গেল সেই শহীদূল্লাহ্‌ হল জীবনের কথা। গভীর/শেষ রাতে ক্ষুধা পেলে ছুটে যেতাম চাঁন খা'র পুল বা মেডিক্যালের সামনে। ডিম/মাংশ আর পরোটা/ব্রেড ছিল ব্যাচেলর জীবনের অমৃত। একটা নাস্তিক দেশের সততার উদাহনণ দেয়া যাকঃ এই শেষ রাতে ইচ্ছা হল ডিম এর ঝুড়ঝুড়ি বানিয়ে ব্রেড দিয়ে খেলে মন্দ হয় না। দোকান খোলা আছে, ঢুকে পড়লাম এবং একটা ব্রেড এর একটা প্যাকেট নিলাম (একটা প্যাকেটই ছিল)।

মেশিনে নির্ধারিত দাম দেখালো। আমি পে করতে গেছি এমন সময় দোকানদার আমার হাত থেকে প্যাকেট নিয়ে ওদের দেশীয় ভাষায় কি একটা বলল। আমি তেমন কিছু বুঝলাম না, তবে আন্দাজ করতে পারলাম যে, ব্রেডটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই সে আর সেটা বিক্রি করবে না। শিমুল আবার আসার পথে বসেছে প্রস্রাব করতে, মানে রাস্তায় প্রস্রাব করার শখ হইছে ওর (যদিও পুলিশ ধরতে পারলে প্যাঁদানি দেবে)।

টয়লেটে প্রস্রাব করতে করতে নাকি সে হাঁপিয়ে উঠেছে, ওর ইচ্ছা বাংলাদেশের মত একটু খোলা আকাশে, রাস্তার ধারে বসে প্রস্রাব করবে। যাইহোক, শিমুল আসলে দোকানদার ওকে বলল যে, ব্রেডটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাই সে সেটা বিক্রি করবে না। আমাদের তো ব্রেড লাগবে, তাই তাকে অনুরোধ করে ব্রেডটা নিয়ে আসলাম। উল্লেখ্য, এখানে ১৮ বছর বয়সের নিচে বিড়ি-তামাক-মদ পান করা নিষেধ। দোকানে গেলে দোকানিরা ওদের কাছে বিড়ি-তামাক-মদ বিক্রি তো করবেই না, বরং পিটিয়ে হলেও তাড়িয়ে দেবে।

এই হল তাদের সততা। ধর্ম নিয়ে আমি বেশি কিছু বলব না, আমি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব আমার উপলব্ধি, আমি সেদিকে যাচ্ছি না। হালকা করে কিছু একটা বলে বোঝাইতে চাইব যে, মানবীয় গুণাবলী অর্জনে ধর্মের কোন হাত নেই। ইহা ব্যক্তি, পরিবার, জাতি, এবং ক্ষেত্রবিশেষে দেশের উপরও নির্ভর করে।

যে ঘটনাটা বললাম সেটা এমন এক দেশের যে দেশের বেশিরভাগ মানুষ নাস্তিক। ধর্ম বলতে এই অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মের প্রচলন থাকায় তারা বৌদ্ধ ধর্মের সাথে পরিচিত, কিছু (মনে হয় ১৫% ভাগ) বৌদ্ধধর্মাবলম্বী আছেও। আর এখন সেখানে খৃষ্টধর্মের প্রচার হচ্ছে ব্যাপক হারে। সততার ব্যাপকতম চাষ হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। মধ্যপ্রাচ্য ধর্মের কৃষিক্ষেত্রও বটে, ধর্মের বপন এবং চাষাবাদ সেখানেই হয়েছে বেশী।

যূগে যূগে নবী-রাসূলগণ সেখানেই বেশী এসেছেন। মানুষের মাঝে মানবীয় গুণাবলী জাগ্রত করেছেন, মানুষকে শিখিয়েছেন সততা/সত্যবাদীতা/সহনশীলতা। অথচ সেখানে বিদেশী কর্মীদের উপর যে নির্যাতন হয়, আমার মনে হয়, বিশ্বের আর কোথাও এত নির্যাতন হয় না। ভারতীয় উপমহাদেশ, যেখানে হিন্দু ধর্মের উৎপত্তি সেখানেও দূর্ণীতি কম নয়। বৌদ্ধধর্ম নেপালে গজিয়েছে, নেপালের লোকজনও যে খুব একটা ভাল সেটা বলা যাবে না।

ধন্যবাদ সবাইকে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।