ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীদের দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচী প্রত্যাহার
দিনাজপুরে ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীদের ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীরা। আগামী ২১ অক্টোবর কোল্ডষ্টোরেজ কর্তৃপক্ষের সাথে ক্ষতিপুরন প্রদানের লক্ষ্যে আলোচনার প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীরা তাদের কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেয়। তবে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য মহাসড়কের পার্শ্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে প্রশাসন।
দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে দিনাজপুরের ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীরা দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করার লক্ষ্যে উত্তরা হিমঘর লিঃ -এর সামনে সমাবেত হতে থাকে। এসময় আলু চাষীরা রাস্তার ধারে দাড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য উক্ত স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল ১১ টায় দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ শামসুল হক এসে ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীদের আগামী ২১ অক্টোবর দিনাজপুর জেলা প্রশাসক ও কোল্ডষ্টোরেজ-এর কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করে ক্ষতিপুরন প্রদান করা হবে এই মর্মে আশ্বাস প্রদান করলে ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীরা তাদের ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেয়।
দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ শামসুল হক জানান, আলু চাষীদের বীজের জন্য আলু প্রদানের লক্ষ্যে বিএডিসি থেকে শতকরা ২৫ ভাগ আলু বীজ বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পারবে। এছাড়াও আলু চাষীদের ক্ষতিপুরন প্রদানের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আগামী ২১ অক্টোবর কোল্ডষ্টোরেজ কর্তৃপক্ষের সাথে ক্ষতিপুরণ প্রদানের ব্যাপারটি আলোচনা করা হবে।
আলু চাষী সংগ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলাম জানান, ২১ অক্টোবরের মধ্যে আলু চাষীদের ক্ষতিপুরন প্রদান করা না হলে আবারো বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর উত্তরা হিমাগারে আলু ধারণ ক্ষমতা ৮৫ কেজি বস্তা হিসেবে ৩৭ হাজার বস্তা। কিন্তু গত মৌসুমে কর্তৃপক্ষ ৫৭ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করে। অপরদিকে হিমাগারের জেনারেটরটিও ৭/৮ বছর ধরে অচল। ফলে হিমাগারের ভেতরে অতিরিক্ত আলুর কারনে অতিরিক্ত গরম এবং বিদ্যুতের লোড-শেডিংকালে হিম বাতাস দেয়ার ব্যবস্থা না থাকায় হাজার হাজার বস্তার আলু পঁচে যায়।
হিমাগার কর্তৃপক্ষের এই দায়িত্বহীন কর্মকান্ডের প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষীরা আন্দোলন শুরু করলে প্রশাসনের টনক নড়ে এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে উত্তরা হিমাগারের অন্যতম পরিচালক নওশাদ আফরোজ বাবু ০২/০৫/২০১০ ইং তারিখে ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীদের সাথে একটি চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ১৫/০৭/২০১০ ইং তারিখের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ আলুচাষীদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও হিমাগার কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ প্রদানের উদ্যোগ না নেয়ায় গত ০৪/০৮/২০১০ ইং তারিখে আলুচাষীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে একটি স্মারক লিপি দেয়া হয়। এই স্মারক লিপিতে উত্তরা হিমাগার কর্তৃপক্ষের ক্ষতিপূরণ প্রদানে টালবাহানার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। কিন্তু এরপরেও ক্ষতিপূরণ প্রদানের কোন উদ্যোগ না আলু চাষীরা মানববন্ধন করে আন্দোলনের ঘোষণা দেয়।
গত ১১ অক্টোবর আলু চাষীরা ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক প্রায় দেড় ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। অবরোধ চলাকালে দিনাজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, ঢাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুপুর ২ টায় ক্ষতিগ্রস্থ আলুচাষীরা তাদের অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়ে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে ক্ষতিপুরন প্রদান না করা হলে ১৯ অক্টোবর আবারো ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করা হবে বলে ঘোষণা দেয়। ঘোষণা অনুযায়ী আজ তারা অবরোধ করার জন্য সমবেত হয়। সূত্র : http://www.dinajpurnews.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।