সাফকথা
মৌলভীবাজার জেলা শহরের যানজট কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। নির্মাণের দেড় বছর পর নবনির্মিত পৌর বাস টার্মিনাল চালু করা হচ্ছে।
চালুর তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে। শহর ও শহরতলিতে বাসস্ট্যান্ড আছে মোট ৪টি। এর মধ্যে ২টি চালু আছে একটিতে অল্প সংখ্যাক বাস-কোস্টার রাখা হয়।
মৌলভীবাজার-কুলাউড়া-বড়লেখা-জুড়ী এবং মৌলভীবাজার-বালাগঞ্জ, মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট রুটসহ ১৭টি রুটে চলাচলকারী বাস-কোস্টার মৌলভীবাজার শহরতলির চাঁদনীঘাট বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান করে। এই স্ট্যান্ডটি চাঁদনীঘাট মনু সেতুর কাছে ঢালু ও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় এবং মূল সড়কের কাছে থাকায় সব সময় গাড়িগুলো রাস্তার ওপরে রেখে যাত্রী ওঠা-নামা করানো হয়। এতে ঢালু সড়কে সারাক্ষণ লোকজন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। তাছাড়া এসব এলাকায় সব সময় যানজট লেগে থাকায় শহর অভিমুখী এবং শহর বহির্মুখি লোকজন মারাত্মক দুর্ঘটনা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। মৌলভীবাজার-শমসেরনগর সড়কে চলাচলকারী কোস্টার-বাস মৌলভীবাজার শহরের সৈয়ারপুর এলাকায় অবস্থিত।
এই স্ট্যান্ডটি মোটামুটি পর্যাপ্ত জায়গা নিয়ে থাকায় রাস্তায় তেমন যানজটের সৃষ্টি হয় না। শহরের শাহ মোস্তাফা সড়কের পশ্চিম অংশে অবস্থিত বেরীরপাড় মিনিবাসস্ট্যান্ড থাকলেও সেখানে তেমন গাড়ি রাখতে দেখা যায় না। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পর সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমান বেরীরপাড় এলাকায় ৭৬ শতক জায়গার ওপর এই বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন করে বাস কোস্টার রাখার ব্যবস্থা করে দেন। পরবর্তী সময়ে অপারেশন ক্লিনহাটের সময় এই পৌর বাস স্ট্যান্ডটি পৌর কর্তৃপক্ষ তাদের অধিনে নিয়ে যায়। এটি বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির তত্ত্বাবধানে আছে।
এই মিনিবাস স্ট্যান্ডে খুব অল্পসংখ্যক গাড়ি থাকে। শহরের যানজট নিরসনে তেমন ভূূূূূূূূূমিকা রাখতে পারেনি এই স্ট্যান্ড। মৌলভীবাজার শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি যানজট নিরসন ও জনসাধারণের দুর্ভোগ লাগবের জন্য মৌলভীবাজার পৌরসভার উদ্যোগে পশ্চিম শহরতলির শ্রীরামপুরে মনু নদীর বাম তীর ঘেঁষে প্রায় ৩ একর জমি আড়াই কোটি টাকা দিয়ে ক্রয় করে মাটি ভরাট করে আরও ১ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি আধুনিক পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। গত ২২শে মে মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফয়জুল করিম ময়ূন এটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের প্রায় দেড় বছর অতিক্রম হয়ে গেলেও চালু হয়নি।
এ ছাড়াও শহরের কোথাও মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড, ট্রাক স্ট্যান্ড এবং অটো-রিকশা রাখার জন্য কোন সুনির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় এসব গাড়ি রাস্তা ও সেতুর পাশে অধিকাংশ স্থান দখল করে অবস্থান করে। শহরের শাহ মোস্তফা সড়কের শিশুপার্ক, কোট রোর্ডে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠের পূর্বপাশের রাস্তার বড় অংশজুড়ে এবং পৌরসভার সামনের রাস্তার ওপর এবং কুসুমবাগ এলাকা থেকে সড়ক ভবন পর্যন্ত ঢাকা-মৌলভীবাজার- সিলেট মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বিলাসবহুল বাস দাঁড় করে রাখা হয় এবং যাত্রী উঠা-নামা করানো হয়। পশ্চিমবাজার মাছের আড়তের পাশের রাস্তায় কুসুমবাগ দ্বারক সড়কের মুখে, মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের চাঁদনীঘাট সেতুর ওপর, টিসি মার্কেটের অদূরে মনু সেতুর দক্ষিণ পাড়ে এবং সেতুর ওপরে রাস্তার দু’পাশে, সিএনজি বেবিট্যাক্সি, টেম্পো, মিশুকসহ হালকা যানবাহন দিয়ে ঠেসে রাখা হয়। ফলে এসব কারণে শহরজুড়ে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয়। হঠাৎ দেখলে মনে হয় পুরো শহর যেন বাস ও অটো-রিকশা স্ট্যান্ড।
আর এসব কারণে ব্যাবসায়ীরাও বিরক্ত। বিশেষত কুসুমবাগ এলাকায় বাস অটোরিকশা এমনভাবে দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানই দেখা যায় না। এ দিকে নতুন বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ কাজ শেষ হলেও শহর থেকে দূরত্বের অজুহাত তুলে পরিবহন মালিকরা ওই স্ট্যান্ডে যেতে না চাওয়ার করণে দেড় বছর ধরে এটি চালু হয়নি। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ বাসস্ট্যান্ড চালু করার। বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার জেলা প্রসাশক মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, যেসব যানবাহন রাখার অনুমোদিত কোন স্ট্যান্ড নেই তাদের সবাইকে ১লা নভেম্বর থেকে পৌর বাস টার্মিনালে চলে যাবার জন্য বলা হয়েছে। অনুমোদনহীন কোন স্থানে কোন ধরনের গাড়ি রাখা যাবে না। ২রা নভেম্বর থেকে এসব দেখতে মোবাইল কোর্ট চালু করা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।